Rail Based Mobile Launcher: ধুলোয় মিশে যেতে পারে পাকিস্তান, রেলগাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা সফল, রাশিয়া-আমেরিকা-চিনের সমকক্ষ ভারত
Agni Prime Missile: বৃহস্পতিবার ভোরে অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপ করে ভারত।

নয়াদিল্লি: সাফল্যের মুকুটে নয়া পালক জুড়ল। অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত। পরমাণু ক্ষমতা সম্পন্ন ‘অগ্নি প্রাইম’ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ সকলের নজর কেড়েছে। কারণ এই প্রথম রেলপথ নির্ভর যান, রেলগাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ হল। এর ফলে আমেরিকা, চিন, রাশিয়ার মতো দেশের সমকক্ষ হয়ে উঠল ভারত। (Agni Prime Missile)
বৃহস্পতিবার ভোরে অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপ করে ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সেই ভিডিও তুলে ধরেন সকলের সামনে। ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (DRDO) ২০০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে সক্ষম, মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রটির সফল উৎক্ষেপণ করেছে, তাও আবার রেলগাড়ির উপর থেকে, যা ভারতের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ বলে প্রতিপন্ন হতে পারে বলে মত DRDO-র। (Rail Based Mobile Launcher)
রাজনাথের বক্তব্য, ‘বিশেষ পরিকল্পনার মাধ্যমে, রেলপথ নির্ভর যানের উপর থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ হয়। পূর্ব নির্ধারিত কোনও শর্ত ছাড়াই রেলপথ ধরে এগোতে পারে, যাতে অল্প সময়ের মধ্যে জবাব দেওয়া সম্ভব হতে পারে, দেশের যে কোনও প্রান্তে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে’।
রেলগাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের এই সফল উৎক্ষেপণ ভারতীয় সেনার হাত আরও শক্ত করল। এর ফলে, দেশের প্রান্তিক অঞ্চল, যেখানে সড়ক যোগাযোগ তেমন উন্নত নয়, সেখান থেকেই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া সম্ভব হবে। পৃথিবীর মধ্যে ভারতেই চতুর্থ বৃহত্তম রেল নেটওয়র্ক রয়েছে, প্রায় ৭০ হাজার কিলোমিটার। এর ফলে শত্রুর নজর থেকে ক্ষেপণাস্ত্র লুকিয়ে রাখা আরও সহজ হবে। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এতে সুবিধা হবে সেনার।
India has carried out the successful launch of Intermediate Range Agni-Prime Missile from a Rail based Mobile launcher system. This next generation missile is designed to cover a range up to 2000 km and is equipped with various advanced features.
— Rajnath Singh (@rajnathsingh) September 25, 2025
The first-of-its-kind launch… pic.twitter.com/00GpGSNOeE
রেলপথ নির্ভর ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান সমস্যা হল, রেলপথ। সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চল, যেখানে রেলপথ নেই, সেখানে এই প্রযুক্তি কাজে লাগানো যাবে না। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রগুলি নির্দিষ্ট দূরত্ব পাড়ি দিয়ে লক্ষ্যে আঘাত হানতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকেই ছুড়তে হয় ক্ষেপণাস্ত্র। ফলে ‘অগ্নি প্রাইমে’র মতো ক্ষেপণাস্ত্র এক্ষেত্রে কাজে লাগবে না। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রেললাইনে বিস্ফোরণ ঘটার ঝুঁকিও থাকে।
তবে রেলগাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে সক্ষম হাতেগোনা কিছু দেশই। ২০২১ সালে উত্তর কোরিয়া দাবি করে, তারাও রেলগাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। ৮০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পূর্ব উপকূলে লক্ষ্যে আঘাত হানে সেটি। জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়াও পিয়ংইয়ংয়ের দাবিতে সিলমোহর দেয়। কিন্তু সত্যি সত্যিই রেলগাড়ি থেকে সেটির উৎক্ষেপণ হয়েছিল কি না, তা নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। ফলে উত্তর কোরিয়ার কৃতিত্ব নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
আটের দশকে তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়নই প্রথম রেলগাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সফল হয়। ভারতের ‘অগ্নি প্রাইমে’র মতো তারা বিশেষ ট্রেন থেকে পরমাণু শক্তিসম্পন্ন RT-23 Molodets ছুড়েছিল। ২০১৭ সালে Barguzin BZhRK-র সফল উৎক্ষেপণ করে তারা, ICBM প্ল্যাটফর্ম থেকে, যা একসঙ্গে ছয়টি ক্ষেপণাস্ত্র বয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম। ২০২০ সাল থেকে সেই প্রযুক্তি কার্যকর বলে খবর মেলে।
রাশিয়ার ঠিক পর পরই রেলগাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে আমেরিকা। Peacekeeper Rail Garrison স্থাপন করে ৫০টি MGM-118A ICBM তোলা হয় রেলগাড়িতে। কিন্তু ১৯৯১ সালে ঠান্ডা যুদ্ধের অবসান ঘটলে ওই প্রকল্প বাতিল করা হয়। বিশেষ ট্রেনটির জায়গা হয় মিউজিয়ামে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে পরমাণু যুদ্ধ দেখা দিলে, শত্রুপক্ষের আক্রমণের মোকাবিলা করার লক্ষ্যেই মূলত এই ধরনের প্রকল্পের সূচনা।






















