ISRO Salary: ১৭ মাস বেতন নেই ইঞ্জিনিয়ারদের, অভিযোগে তপ্ত রাজনীতি, নামমাত্র টাকা, ISRO-র বরাদ্দেও কাটছাঁট!
Chandrayaan-3: ISRO এবং DRDO-র বিজ্ঞানী থেকে ইঞ্জিনিয়াররা যে বেতন পান, বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় তা সত্যই নগণ্য।
নয়াদিল্লি: চন্দ্রপৃষ্ঠে পদার্পণ ঘিরে আবেগে ভাসছে গোটা দেশ। মহাকাশ অভিযানে ভারতের জন্য নতুন যুগের সূচনা হল বলেও দাবি উঠছে। কিন্তু যাঁরা এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটালেন, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা, ISRO-র সেই বিজ্ঞানীদের বেতন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায়, ISRO-র বিজ্ঞানী থেকে ইঞ্জিনিয়াররা ন্যূনতম বেতনে কাজ করেন। (ISRO Salary)
ISRO এবং DRDO-র বিজ্ঞানী থেকে ইঞ্জিনিয়াররা যে বেতন পান, বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় তা সত্যই নগণ্য। ISRO-র সাধারণ বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের মাসিক বেতন ৮৪ হাজার ৩৬০ টাকা। এর মধ্যে কর এবং অন্যান্য খাতে ১২ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়। ISRO-র বিজ্ঞানীদের বেতন নির্ধারিত হয় কে, কোন পর্যায়ের কর্মী, তার উপর। সেই অনুযায়ী, ISRO-র সর্বোচ্চ বেতন ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা। (Chandrayaan-3)
সরকারি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, L-10 পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন ৫৬ থেকে ১.৭৭ লক্ষ টাকা। ৬৭ হাজার থেতে ২.০৮ লক্ষ টাকা বেতন পান L-11 পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত বিজ্ঞানী এবং ইঞ্জিনিয়াররা, যা সংস্থার সর্বোচ্চ বেতন বলে গ্রাহ্য হয়। দেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রায়াত্ত সংস্থা এবং বেসরকারি সংস্থার উচ্চ পদে কর্মরত আধিকারিকদের বেতন এর চেয়ে ঢের বেশি।
ISRO-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান মাধবন নায়ার বিষয়টিতে আলোকপাত করেছেন। তাঁর দাবি, বিশ্বের অন্য দেশের বিজ্ঞানীরা যে বেতন পান, ISRO-র বিজ্ঞানীদের বেতন সেই তুলনায় নগণ্য। কিন্তু ISRO-র বিজ্ঞানীরা কখনওই শুধুমাত্র টাকার জন্য কাজ করেন না। বিজ্ঞান এবং উদ্ভাবনী শক্তির প্রতি ভালবাসা থেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান তাঁরা।
আরও পড়ুন: Narendra Modi : 'জয় জওয়ান, জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান' দেশের মাটি ছুঁয়ে মোদির স্লোগান
চন্দ্রযান-৩ অভিযানে মোট খরচ পড়েছে ৬১৫ কোটি টাকা। অন্য়ান্য দেশের তুলনায় যা অনেকটাই কম। উদাহরণস্বরূপ রাশিয়ার Luna-25 মহাকাশযানের কথা বলা যায়। চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের আগে চাঁদের বুকে অবতরণের কথা ছিল তার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভেঙে পড়ে। Luna-25 তৈরিতে খরচ পড়েছিল ২০০০ কোটি টাকা। তাই নামমাত্র মূল্যে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের সাফল্য যেমন নজর কাড়ছে, তেমনই ISRO-র বিজ্ঞানীদের বেতন নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছে কংগ্রেস। দলের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল বলেন, "চন্দ্রযান-৩ অভিযানকে ঘিরে থাকা আবেগ, উৎসাহ দীর্ঘ সময় আমাদের মনে গাঁথা হয়ে থাকবে। ISRO চেয়ারম্য়ান সোমনাথের নেতৃত্বেই ইতিহাস রচিত হয়েছে। তাঁকে এবং তাঁর টিমকে অভিনন্দন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে নিজের দ্বিচারিতা নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের কৃতিত্ব নিতে এক মুহূর্ত দেরি করেননি আপনি, কিন্তু আপনার সরকার ISRO এবং বিজ্ঞানীদের সাহায্য করতে ব্যর্থ কেন?"
বেণুগোপাল আরও বলেন, "রাঁচির হেভি ইঞ্জিননিয়ারিং কর্পোরেশনের যে ইঞ্জিনিয়াররা চন্দ্রযান-৩ অভিযানের সঙ্গে যুক্ত ছিলে, কেন গত ১৭ মাস ধরে বেতন পাননি তাঁরা? এমন গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের জন্য বাজেটে বরাদ্দ কেন ৩২ শতাংশ কমিয়ে আনলেন আপনি? এঁরা আমাদের দেশের নায়ক, বিশ্বমানের মহাকাশ গবেষণা চালান, তার পরও তাঁদের প্রতিভা, কঠোর পরিশ্রমের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা নেই আপনার। বরং বিজ্ঞানীদের কৃতিত্বে ভাগ বসিয়ে, তাঁদের আরও অপমান করলেন আপনি।"
চলতি বছরের বাজেটে মহাকাশ গবেষণা খাতের বরাদ্দ কমিয়ে আনা হয়েছে। মহাকাশ প্রযুক্তির বাজেটে সবচেয়ে বেশি কাটছাঁট হয়েছে, ১০৯৩.৮৪ কোটি টাকার। ফলে হাত খুলে খরচের সুযোগ কমেছে ISRO-র।