BBC IT Raid: রাতভর চলল BBC অফিসে আয়কর হানা, 'ল্যাপটপ স্ক্যান করার পর ছাড়া হল কর্মীদের'
BBC IT Raid Continues : মোদির তথ্যচিত্র ঘিরে বিজেপির আপত্তির মধ্যেই বিবিসি-র অফিসে আয়কর দফতরের এই সমীক্ষা ঘিরে তোলপাড় হচ্ছে রাজনীতি।
নয়াদিল্লি : রাত পার করে বিবিসি ( British Broadcasting Corporation )-র দিল্লি ও মুম্বই অফিসে চলল আয়কর হানা (income tax survey operations )। যদিও একে সমীক্ষার কাজ বলে দাবি করেছে আয়কর দফতর। মোদির ( Narendra Modi ) ঘিরে বিজেপির আপত্তির মধ্যেই বিবিসি-র অফিসে আয়কর দফতরের এই সমীক্ষা ঘিরে তোলপাড় হচ্ছে রাজনীতি।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার আইটি কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ফোন ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করে। তল্লাশি শুরু হওয়ার ছয় ঘণ্টা পরে কর্মচারীদের অফিস থেকে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তবে তাদের ল্যাপটপগুলি স্ক্যান করার পরেই। সূত্রের খবর, কিছু কর্মচারীর সঙ্গে আইটি কর্মকর্তাদের তর্ক-বিতর্রক হয়।
NTV র একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, একজন বিবিসি সাংবাদিক জানান, তাঁদের ল্যাপটপে লগ ইন করতে বলা হয়। তারপর ডেস্কটপে তথ্য অনুসন্ধান করার জায়গায় অর্থাৎ সার্চ অপশনে গিয়ে "কর" বা TAX শব্দটি ব্যবহার করে সার্চ করা হয়।
মঙ্গলবার হঠাৎই BBC-র দিল্লি ও মুম্বইয়ের অফিসে একযোগে হানা দেয় আয়কর দফতর। সংবাদ সংস্থা ANI সূত্রে খবর, BBC-র কর্মীদের মোবাইল ফোন হেফাজতে নিয়ে অফিসে হানা দেয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের অন্তর্গত আয়কর দফতর। সম্প্রতি, দুই পর্বে প্রকাশিত হয়েছে, BBC-র তথ্যচিত্র 'ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন'। দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদির জমানায় গোধরাকাণ্ড এবং তার পরবর্তী ভয়ঙ্কর হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার তথ্যচিত্রে। আর তৈরি করেছে সদ্য় শতবর্ষ পার করা BBC।
আর মোদির ওপর এই তথ্য়চিত্র বিবিসি তৈরি করতেই তেলেবেগুনে চটেছে বিজেপি ও কেন্দ্র। ইউটিউব, ট্যুইটার থেকে এই সংক্রান্ত সবকিছু মুছে ফেলতে বলা হয়েছে। এই তথ্যচিত্র নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তির কথা জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ বলে দাবি করছে বিজেপি। তারা চায় না এই তথ্য়চিত্র দেখানো হোক! পাল্টা বিরোধীরা বলছে, একটা তথ্য়চিত্রে বিজেপির এত আপত্তি কিসের? তথ্য়চিত্র আটকানোটা কি মোদি সরকারের ‘সেন্সরশিপ’ নয়? আর এই আবহেই এবার দুই শহরে BBC-র দুই অফিসে হঠাৎই সমীক্ষা চালাল আয়কর দফতর।
কিন্তু, কী কারণে এই সার্ভে? বিবিসি মোদির ওপর বিতর্কিত তথ্য়চিত্র তৈরি করাতেই কি রাজরোষ? কণ্ঠরোধের চেষ্টা? না কি অন্য় কোনও কারণ? সরকার সূত্রে অবশ্য দাবি, বেশ কয়েক বছর ধরে, লভ্যাংশের আদানপ্রদান এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য দিচ্ছে না বিবিসি। এই জন্য বিবিসি কর্তৃপক্ষকে নোটিসও দেওয়া হয়। কিন্তু, কোনও সাড়া মেলেনি। তার প্রেক্ষিতেই আয়কর আইন অনুযায়ী এই সার্ভে। ' এটা কোনও তল্লাশি অভিযান নয়। এই ধরনের সমীক্ষা নিয়মিত করা হয়। এর সঙ্গে তল্লাশি বা অভিযানকে গুলি ফেলা ঠিক নয়।
অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য আর্থিক লেনদেন বা কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে কি না, তা এই সার্ভেতে দেখা হচ্ছে।'
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেন, ' হাজারো ষড়যন্ত্র করেও সত্যকে চাপা রাখা যায় না। ওরা তো মোদীর পিছনে ২০০২ সাল থেকে লেগে আছে। কিন্তু প্রতি বারই মোদীজি আরও শক্তিশালী, আরও জনপ্রিয় হয়ে বেরিয়ে এসেছেন। ' অন্যদিকে ' বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি ' বলে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ
BBC-র তরফে ট্যুইট করে বলা হয়েছে, ' আয়কর কর্তৃপক্ষ এখন দিল্লি ও মুম্বইয়ে BBC-র অফিসে রয়েছে এবং আমরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছি। আমরা আশা করি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই পরিস্থিতির সমাধান হবে। '
এই ঘটনায় কড়া বিবৃতি দিয়ে NBDA জানিয়েছে, ' বিবিসি'র অফিসে আয়কর ' সমীক্ষার ' ঘটনায় আমরা যন্ত্রণাবিদ্ধ। আমরা মনে করি, কোনও প্রতিষ্ঠানই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তবে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখানো, তাদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা এবং তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের নিন্দা করছি। '
এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার তরফে কড়া প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়েছে, BBC ইন্ডিয়ার অফিসে আয়কর 'সমীক্ষা' নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।