সোপোরে জঙ্গির গুলিতে নিহত দাদুর দেহ আঁকড়ে বসে একরত্তি শিশু, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধার করল পুুলিশ
সিআরপিএফ কনভয়ে জঙ্গি হামলার মধ্যে টানটান উত্তেজনার মধ্যে দুঃসাহসী পুলিশ
সোপোর: জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে লুটিয়ে পড়েছে দাদু। পাশে বসে একরত্তি শিশুটি। রক্তে ভেজা নিথর দেহখানি আঁকড়ে ধরে রেখেছে সে। চোখে-মুখে ভয়, আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। এমনই মর্মস্পর্শী ছবি দেখল জম্মু ও কাশ্মীরবাসী।
বুধবার সকালে জম্মু ও কাশ্মীরের সোপোরে সিআরপিএফ কনভয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই হামলায় নিহত হন এক জওয়ান ও এক সাধারণ নাগরিক। দেখা যায়, ওই নাগরিক যেখানে লুটিয়ে পড়েছেন, ঠিক তার পাশেই বসে রয়েছে এক শিশু। কোনওভাবে জঙ্গিদের গুলি এই নিষ্পাপ শিশুকে ছুঁতে পারেনি।
মৃত ব্যক্তির নিথর দেহটা সে আঁকড়ে রয়েছে। পরে জানা যায়, ওই তিন বছরের শিশুটি নিহত ব্যক্তির নাতি। জঙ্গিদের গুলি চলছে তখনও। কোনওক্রমে নিজের জীবনের পরোয়া না করে ওই শিশুর প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে যান জম্মু কাশ্মীর পুলিশের এক জওয়ান।
জঙ্গিদের নজর এড়িয়ে তাকে নিয়ে আসেন তিনি। শিশুটিকে দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, সে কতটা ভীত আতঙ্কিত। তাকে কোনওমতে সান্ত্বনা দিয়ে ঠান্ডা করে ওই পুলিশকর্মী। কিছুটা সে ধাতস্ত হলে তিন বছরের শিশুকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় মায়ের কাছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দাদুর সঙ্গে মারুতি গাড়ি করে শ্রীনগর থেকে হান্ডওয়ারায় যাচ্ছিল শিশুটি। সোপোরে, তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে জঙ্গিরা। পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিরা একটি মসজিদে লুকিয়ে ছিল। সিআরপিএফ বাহিনীর জওয়ানরা বাস থেকে নামতেই তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলিবর্ষণ শুরু করে জঙ্গিরা।
পাল্টা গুলি চালায় বাহিনীও। সেই সময় মানুষ চারদিকে ছুটছে। সেই ফাঁকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় জঙ্গিরা। পুলিশ জানিয়েছে, যখন জঙ্গিরা গুলি চালাচ্ছিল, তখন গাড়ি থামিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন ওই প্রৌঢ়। কিন্তু, জঙ্গিদের গুলি তাঁর শরীর ঝাঁঝরা করে দেয়।
তবুও, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নাতির কোনও ক্ষতি হতে দেননি ওই ব্যক্তি।