গবেষকের রহস্যমৃত্যু: আত্মহত্যা-তত্ত্ব মানতে নারাজ পরিবার, তন্ত্রসাধনার বিষয়ে আগ্রহী ছিল, দাবি ফেসবুক-বন্ধুর
কলকাতা: নিউ আলিপুরে তরুণ গবেষকের আত্মহত্যায় মৃত্যুর তত্ত্ব মানতে নারাজ পরিবার। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। মৃত গবেষকের এক ফেসবুক বন্ধু জানিয়েছেন, অর্পণের তন্ত্রসাধনার বিষয়ে খুব আগ্রহ ছিল। সোমবার সন্ধেয় জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার নিউ আলিপুরের এই অফিসেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় গবেষক অর্পণ পাড়ুইয়ের দেহ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, আট তলায় যে ঘরে বসে হাওড়ার বাউড়িয়ার বাসিন্দা অর্পণ গবেষণা করতেন, সেখানকার স্লাইডিং জানালা থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু, জানালা থেকে পড়লেন কী ভাবে? ঘটনাটি আত্মহত্যা, না কি দুর্ঘটনা না কি হত্যা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি, নেপথ্যে আবার তন্ত্রসাধনার যোগের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, সূত্রের খবর, সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, গবেষক হিসেবে খুবই প্রতিভাবান ছিলেন অর্পণ। সবার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতেন। তবে, তাঁর কথাবার্তায় প্রায়ই উঠে আসত আধ্যাত্মিক নানা বিষয়। তরুণ এই গবেষকের এক ফেসবুক বন্ধুরও দাবি, তন্ত্রের বিষয়ে ভীষণ আগ্রহ ছিল অর্পণের। প্রায়ই যেতেন তান্ত্রিকদের কাছে। এমনই এক ফেসবুক-বন্ধু জানান, প্যারা নর্মাল, ভৌতিক বিষয়ে খুব আগ্রহ ছিল। রীতিমতো চর্চা করত। নিয়মিত তান্ত্রিকদের কাছে যেত। বলত, এই সব যোগাযোগ অদ্ভুত ভাবে হচ্ছে। যেন কেউ করিয়ে দিচ্ছে। তার গানের শিক্ষকও তন্ত্র নিয়ে চর্চা করেন। তাঁর সঙ্গেও আলোচনা করত। আমাকে বিষয়গুলি জানাত। বলত, আমি লেখার জন্য গল্পের প্লট পাব। মৃত গবেষকের বাবা সোমবার রাতে নিউ আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরিবারের সন্দেহ, গবেষক অর্পণকে খুন করা হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে, খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। মৃত গবেষকের মামা জ্যোতিপ্রকাশ দাসের দাবি, মার্ডার কেস হিসেবেই লিখিত অভিযোগ করেছি। সহজ সরল ছেলে ছিল। আমরা বিচার চাইছি।আরেক মামা চিন্ময় দাস বলেন, যে খানে কাজ করে কেন সেখান থেকে কেউ খবর পাঠাল না? বলেছিল, নতুন কাজের জায়গা। কাজের চাপ আছে। গান-বাজনা করতে ভালবাসত। আমরা মানতে পারছি না, এটা আত্মহত্যা। ১ সেপ্টেম্বর থেকে জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার নিউ আলিপুরের এই অফিসে যোগ দিয়েছিলেন তরুণ গবেষক। নতুন কাজে যোগ দিয়ে হঠাৎ মেধাবি এক গবেষক আত্মহত্যা করবেন, এটা মানতে রাজি নন তাঁর ফেসবুক বন্ধুও। মৃত গবেষকের ফেসবুক-বন্ধুর দাবি, দীর্ঘদিন চাকরি ছিল না। তখনও এ সব বিষয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু কখনও হতাশ বলে মনে হয়নি। খুবই মেধাবী, উচ্ছ্বল ছেলে। আত্মহত্যা করতে পারে বলে মেনে নিতে পারছি না। দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। এ দিন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা প্রায় আড়াই ঘণ্টা ঘটনাস্থলে গিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেন। সংগ্রহ করেন নমুনা।