Covid19 Update: তাঁবু খাটিয়ে নিভৃতবাস যাপন করোনা আক্রান্তের
ভরা জৈষ্ঠ্যের আগুন ঝরানো গরমে ত্রিপলের মধ্যে নিভৃতাবাসে দিন কাটাচ্ছেন খড়গপুর আইআইটি-র অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী।
পশ্চিম মেদিনীপুর: বাড়ির পাশে তাঁবু খাটিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন করোনা রোগী। ভরা জৈষ্ঠ্যের আগুন ঝরানো গরমে ত্রিপলের মধ্যে নিভৃতাবাসে দিন কাটাচ্ছেন খড়গপুর আইআইটি-র অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ঘোলাই গ্রামে গেলে চোখে পড়বে সেই ছবি।
ছোট বাড়িতে বড় সংসার। দুটো ঘরে ৮ জন সদস্য। তাই পরিবারে সংক্রমণ ঠেকাতে, বাড়ির পিছনে মাঠে তাঁবু খাটিয়ে নিভৃতাবাসে রয়েছেন গৃহকর্তা। ভরা জৈষ্ঠ্য়ের আগুন ঝরানো গরম আর মাঝেমাঝে ঝড়বৃষ্টি দুর্যোগের মধ্যেই ত্রিপলের ছাউনিতে মারণ ভাইরাসের সঙ্গে লড়ছেন সঞ্জিত ভট্টাচার্য। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার ঘলাই গ্রামের এই বাসিন্দা পেশায় খড়গপুর আইআইটি-র অস্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী। ১২ মে সঞ্জিত ভট্টাচার্যর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আর তখন থেকেই এই তাঁবু তাঁর নিভৃতবাসের ঠিকানা। অসুস্থ শরীরে বাঁশ ত্রিপল দিয়ে নিজেই বানিয়েছেন নিজের কোয়ারেন্টিন সেন্টার।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে রোগীরা যখন দারুণ ভাবে দুর্বল হয়ে যায়, সেখানে এত গরমের মধ্যে তিনি এভাবে আছেন কী করে? সঞ্জিত ভট্টাচার্য বলেন, বাড়িতে ছোট জায়গা। আলাদ থাকার মতো জায়গা নেই। তাই মাঠে আছি। সমস্যা বলতে এক থেকে দুই ঘন্টা একটু গরম লাগে। তারপরে গাছের ছায়া আছে, হাওয়াও লাগে। কোনও অসুবিধা হয়নি সে রকম।
বয়স্ক মা, স্ত্রী, দুই মেয়ে, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী ও তাঁদের এক সন্তান। সঞ্জিত ভট্টাচার্যর পরিবারে দুটো ঘরে আটজনের বাস। তাই নিজে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর আর ঝুঁকি নেননি সঞ্জিত। অসুস্থ শরীরে গনগনে গরমের মধ্যে ত্রিপলের তাঁবুতেই নিভৃতাবাসে রয়েছেন তিনি। দিন থেকে রাত, সেখানেই কাটছে ২৪ ঘণ্টা। সঞ্জিতের স্ত্রী রুপালি ভট্টাচার্যের কথায়, বাড়িতে জায়গা নেই। দুটো রুমে আটজন থাকি। বয়স্ক শাশুড়ি মা আছেন। দুটো ছোট ছোট বাচ্চা আছে। এই অবস্থাতে কি বাড়িতে রাখা যায়। দশ দিন থেকে উনি এভাবেই আছেন। আমরা জানানোর পর আশাকর্মীর লোকেরা এসে খোঁজখবর নিয়েছেন।
ঘলাই গ্রামপঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের সাফাই, ১২ মে স্থানীয় সেফ হোমে কোনও বেড খালি ছিল না। তাই সঞ্জিত ভট্টাচার্যকে ভর্তি করা যায়নি। তা ছাড়া শারীরিক জটিলতা না থাকায় তাঁকে অন্যত্র না সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান দুলি হাঁসদা বলেন, সিভিক পুলিশ, আশা কর্মী, থানার বড় বাবু, প্রধানের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম। বললেন বাইরে নিয়ে যাওয়ার আদেশ নেই। বাড়ির পাশে থাক। এভাবেই চলছে। ডেবরার সেফহোমে ১২ তারিখে কোনও বেড খালি ছিল না। ওই জন্য ওঁকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। আমরা চাল-ডাল, লুঙ্গি, বেডকভার, স্যানিটাইজার, গামছা ও ত্রিপল দিয়েছি।