Doctor's Suicide: চোখের সামনে একের পর এক মানুষের মৃত্যু, হতাশায় আত্মঘাতী কোভিড ওয়ার্ডের ডাক্তার
জানা গিয়েছে ৩৬ বছর বয়সী বিবেকের স্ত্রী দু মাসের অন্তঃসত্ত্বা

নিউ দিল্লি: করোনা প্রাণ কাড়ল আরও এক চিকিৎসকের। না, সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু নয়। আত্মহত্যা। চোখের সামনে একের পর এক মৃত্যু দেখতে দেখতে, হতাশায় আত্মহত্যা করলেন তরুণ চিকিৎসক। ঘটনাটি দিল্লির। জানা গিয়েছে, দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন বছর ৩৬-এর বিবেক রাই। টানা ১ মাস কাজ করেছেন। প্রত্যক্ষ করেছেন হাজারও রোগীর মৃত্যু। এই দুর্বিসহ অবস্থার চাপ নিতে না পেরে রবিবার শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।
প্রাক্তন আইএমএ সভাপতি ডাঃ রবি ওয়ানখেদকর টুইট করে লিখেছেন, "হাসপাতালের আইসিইউ-তে গত ১ মাস ধরে কর্মরত ছিলেন ওই তরুণ চিকিৎসক। করোনা রোগীদের চিকিৎসার দায়িত্বেই ছিলেন তিনি, মরণাপন্নদের CPR এবং ACLS দিতেন। প্রতিদিনের ৭,৮ জন রোগীর মধ্যে প্রায় বেশিরভাগই বাঁচতেন না। এই পরিস্থিতিতেই হতাশায় চলে যান ওই চিকিৎসক। শেষে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন ডাঃ বিবেক।" আইএমএ প্রাক্তন সভাপতি আরও লিখেছেন, "গোরক্ষপুরের ভীষণ মেধাবী চিকিৎসক ছিলেন এই তরুণ। প্রায় শতাধিক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন এই মহামারীর সময়ে।"
হাসাপাতাল সূত্রে খবর, প্রায় ১ মাস টানা কাজ করেছেন। প্রতিদিন প্রায় ৭, ৮ জন আশঙ্কাজনক কোভিড রোগী থাকত তাঁর তত্বাবধানা। একের পর এক মৃত্যুতেই বিচলিত হয়ে পড়ছিলেন। তাই শেষ রক্ষা হল না। জানা গিয়েছে বিবেকের স্ত্রী দু মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
আত্মহত্যা নয়, তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যুকে 'খুন' আখ্যা দিয়েছেন ডাঃ রবি ওয়ানখেদকর। ঘটনায় সিস্টেমকে দুষে আইএমএ-এর প্রাক্তন সভাপতি লিখেছেন, "এটা মৃত্যু নয়, খুন। আর এই খুনের জন্য দায়ি বর্তমান 'সিস্টেম'। যা সকলের মধ্যে একটা চরম হতাশারা সৃষ্টি করেছে। আমাদের দেশে ন্যূনতম চিকিৎসা পরিকাঠামোর অভাব, খারাপ বিজ্ঞান, খারাপ রাজনীতি এবং খারাপ সরকার এই পরিস্থিতির জন্য দায়ি।"
উল্লেখ্য, মৃত চিকিৎসকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চিকিৎসকের মৃত্যুর পর তাঁর কাছ থেকে একটি সুইসাইট নোট উদ্ধার হয়েছে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দক্ষিণ দিল্লির মালভিয়া নগর পুলিশ।
সব মিলিয়ে বিপদসীমায় পৌঁছে গিয়েছে পরিস্থিতি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এ ত্রস্ত গোটা দেশ। হাসপাতালে বেড নেই, অক্সিজেন নেই। হন্যে হয়ে ছুটছেন রোগীর পরিবার। বাঁচাতে হবে, বাঁচতে হবে। ধ্যান-জ্ঞান এখন ওই একটাই। দিল্লির পরিস্থিতির কথাও কারও অজানা নয়। রাজধানীর বুকে কান পাতলেই এখন শুধু স্বজন হারানোর হাহাকার।
সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়াল জুড়ে অক্সিজেন, ফাঁকা বেডের 'লিড' খুঁজে বেড়াচ্ছেন সকলে। আপ্রাণ চেষ্টা চলছে পরিস্থিতি মোকাবিলার। দিল্লিতে লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেজরিওয়াল সরকার। পরিস্থিতি বাগে আনতে ময়দানে নেমেছেন প্রায় সকলেই। তবু যেন ফাঁক থেকেই গিয়েছে। হিসেব বলছে দিল্লিতে শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৭,০৪৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩৭৫ জনের। শনিবার সকালেই দিল্লির একটি হাসপাতালে ১ চিকিৎসকসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে অক্সিজেনের অভাবে।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
