দিল্লি হিংসা: ‘প্রাণে বাঁচতে ২ মেয়ের সঙ্গে দোতলা থেকে ঝাঁপ মেরেছি,’ ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন আক্রান্ত মহিলা
হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি জানালেন, বুধবার রাতে তাঁর বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে হামলাকারীরা...
নয়াদিল্লি: নিজেদের বাঁচাতে শরীরে দোপাট্টা জড়িয়ে দোতলা থেকে ঝাঁপ মেরেছি। হিংসার এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন উত্তর-পূর্ব দিল্লির কবরল নগর নিবাসী বছর ৪৫-এর এক মহিলা।
আল হিন্দ হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি জানালেন, বুধবার রাতে তাঁর বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে হামলাকারীরা। তাঁকে ও তাঁর দুই মেয়ের শ্লীলতাহানিও করে। মহিলা জানান, সেই পরিস্থিতি থেকে কোনওপ্রকারে নিজেদের ঘর ছেড়ে পালিয়ে নিজেদের বাঁচান।
কাঁদতে কাঁদতে মহিলা বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম। একদল ক্ষিপ্ত জনতা ভেঙে ঢুকে পড়ে। আমার ও দুমেয়ের পোশাক ছিঁড়ে দেয়। তিনি জানান, তাঁরা কোনওমতে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। পাশের এলাকায় এক পরিচিতের দোকানে গিয়ে আশ্রয় নেন।
মহিলা জানান, ওই পরিচিত তাঁদের পোশাক দেন, খাবার দেন। পরে, তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যান। মহিলার দাবি, হামলাকারীদের তিনি চিহ্নিত করেছেন। সকলে তাঁর এলাকার।
শুধু এই মহিলাই নন, করবল নগরের আরেক বাসিন্দাও একই ভয়াবহতার সাক্ষী। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে দুষ্কৃতীরা তাঁর পিঠে রাসায়নিক ঢেলে দেয়। এর ফলে, তাঁর শরীর পুড়ে যায়।
ওই ব্যক্তি বলেন, কয়েকজন আমাকে আমার বাড়ির কাছে ধরে ফেলে। আমার পিছনে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে। কিছু বোঝার আগেই, আমার শরীরে প্রচণ্ড জ্বলন হতে শুরু করে।
আরেক তরুণ জানান, তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। সেখানে থেকে ফেরার পথে গোকুলপুরীতে তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে থাকা এক প্রতিবন্ধী বন্ধুকে মারধর করে দুষ্কৃতীরা। ওই তরুণ জানান, তাঁর বাঁ হাতের আঙুল ভেঙে গিয়েছে।
আল-হিন্দ হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, অনেকের অবস্থা গুরুতর। যাঁরা সঙ্কটজনক, তাঁদের সরকারি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, সিএএ নিয়ে হিংসায় দিল্লিতে এখনও পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা তিন শতাধিক।