Donald Trump: তিনদশক আগে লেখিকাকে যৌন নিগ্রহ, ৪১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে
US News: ট্রাম্প ক্যারলকে যৌন নিগ্রহ করেছেন বলে মঙ্গলবার রায় শোনায় নিউ ইয়র্কের আদালত।
নিউ ইয়র্ক: আদালতে ধাক্কা আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump)। লেখিকা ই জিন ক্যারলকে (E. Jean Carroll) তিনি যৌন নিগ্রহ করেছেন বলে জানিয়ে দিল আদালত। ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লক্ষ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হল, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৪১ কোটি টাকা। শুধু যৌন নিগ্রহই নয়, নির্যাতনের শিকার লেখিকাকে মিথ্যাবাদী তকমা দিয়ে ট্রাম্প তাঁর অবমাননা করেছেন বলেও সিদ্ধান্ত জানাল আদালত। যদিও ধর্ষণের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পকে।
ক্ষতিপূরণ বাবদ ট্রাম্পকে ৪১ কোটি টাকা দিতে হবে
ট্রাম্প ক্যারলকে যৌন নিগ্রহ করেছেন বলে মঙ্গলবার রায় শোনায় নিউ ইয়র্কের আদালত। ক্ষতিপূরণ বাবদ ট্রাম্পকে ৪১ কোটি টাকা দিতে বলা হয়। ২০২৪ সালে ফের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে নাম লেখাতে আগ্রহী ট্রাম্প। তার জন্য তোড়জোড়ও শুরু করে দিয়েছেন। আদালতের এই রায়ের পর রিপাবলিকান শিবির তাঁকে নিয়ে দ্বিতীয় চিন্তাভাবনা করে কিনা, এখন তাই দেখার।
যদিও আদালতের রায়ের পরও নিজের দাবিতেই অনড় ট্রাম্প। নিউ ইয়র্ক আদালতে কখনওই ট্রাম্প সুবিচার পেতে পারেন না বলে দাবি করেন তাঁর আইনজীবী। আদালতের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প নিজেও। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'ওই মহিলা কে, কোনও ধারণাই নেই আমার। এই রায় লজ্জাজনক। শিকার অভিযান চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে, যা আগে কখনও দেখেনি কেউ'।
এক বছর বা দু’বছর নয়, ৩০ বছর আগে ট্রাম্প তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেছিলেন ক্যারল। লেখার জগতে নিজস্ব পরিচিতি রয়েছে তাঁর। Emmy পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন। নিউ ইয়র্কের একটি আদালতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর দাবি, সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। কিন্তু গোটা ঘটনা অস্বীকার করেন ট্রাম্প। তাঁকে মিথ্য়াবাদী বলে উল্লেখ করেন। তাতে নষ্ট হয় তাঁর ভাবমূর্তিও।
১৯৯৬ সালে নিউ ইয়র্কের একটি হোটেলে ট্রাম্প তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ক্যারলের। হোটেলের চেঞ্জিং রুমে তিনি ট্রাম্পের লালসার শিকার হন বলে দাবি করেছেন। নিজের লেখা বইয়েও সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন ক্যারল। তাতে ট্রাম্প গোটা ঘটনা অস্বীকার করেন এবং তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করেন বলে দাবি করেছেন। ট্রাম্পের আচরণে তাঁর কেরিয়ার নষ্ট হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আদালতে তিন দশক আগের সেই ঘটনা বিশদে বর্ণনা করেন ক্যারল। জানান, একটি স্টোর থেকে বেরনোর সময় হঠাৎই ট্রাম্পের মুখোমুখি হন। কোনও মহিলার জন্য ব্য়াগ এবং টুপি কিনতে এসেছিলেন ট্রাম্প। কী কেনা উচিত, তারও সুপারিশ করেন তিনি। তার পর দু’জনের কথা চলতে থাকে। ক্যারলের দাবি, এর পর তাঁকে একটি লঁজরে পরে দেখার জন্য জোরাজুরি করেন ট্রাম্প। রাজি না হলে, ট্রাম্প নিজেও লঁজরে পরে দেখতে তৈরি হয়ে যান। এর পর একসঙ্গেই চেঞ্জিং রুমের দিকে এগোন তাঁরা। গোটা সময় হালকা হাসি-মস্করা করছিলেন ট্রাম্প। হালকা ফ্লার্টও করছিলেন।
৩০ বছর আগে ধর্ষণের শিকার হন বলে দাবি করেন লেখিকা
কিন্তু চেঞ্জিং রুমে ঢুকতেই ট্রাম্পের আচরণ পাল্টে যায়, তিনি আগ্রাসী হয়ে ওঠেন বলে দাবি ক্যারলের। তিনি জানিয়েছেন, দেওয়ালে তাঁকে চেপে ধরেন ট্রাম্প। সজোরে মাথা ঠুকে যায় তাঁর। বাধা দিতে গেলে জোরে ধাক্কা দেন এবং ধর্ষণ করেন। কোনও রকমে হাঁটু তুলে ট্রাম্পকে আঘাত করেন এবং চে়ঞ্জিং রুম থেকে পালিয়ে যান বলে দাবি ক্যারলের। ৭৯ বছর বয়সি ক্যারল জানিয়েছেন, সেই অভিজ্ঞতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, জীবনে কখনও কাউকে ভালবাসতে পারেননি তিনি। আজও ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা হওয়ার ওই মুহূর্ত, চেঞ্জিং রুমে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনুতাপ করেন। নিজের জীবন ফিরে পেতে চান বলে আদালতে জানিয়েছেন ক্যারল। ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তিনি।