Himachal Pradesh : টানা ভারী বর্ষণ, বিপর্যস্ত হিমাচলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৪, ১০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি !
Landslide in Himachal Pradesh : বর্ষা শুরুর পর থেকে গত ৫৫ দিনে ১১৩ বার ধস নেমেছে এই রাজ্যে
নয়াদিল্লি : ধস-সহ বর্ষার একাধিক বিপর্যয়ে হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh Rain) প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে হল ৭৪। শিমলায় (Shimla Landslide) শিবমন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকে আরও একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং চম্বায় মারা গেছেন আরও দুই জন। যার জেরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪-এ। প্রসঙ্গত, সামার হিল শিবমন্দিরে একজন-সহ শিমলায় তিনটি বড়সড় ধসেই মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের।
বর্ষা শুরুর পর থেকে গত ৫৫ দিনে ১১৩ বার ধস নেমেছে এই রাজ্যে। যার জেরে PWD-র প্রায় ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকার। শিমলার সামার হিলে রেললাইনের একাংশ ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে। যার জেরে এই মুহূর্তে হাওয়ায় ঝুলছে রেলট্র্যাক। হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু-র বক্তব্য, সাম্প্রতিক ধসে যে ক্ষতি হয়েছে সেই পরিকাঠামোর পুনর্গঠনের কাজ কার্যত পাহাড়-প্রমাণ চ্যালেঞ্জ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাস্তুতন্ত্রিকভাবে দুর্বল হিমালয় এলাকায় অবৈজ্ঞানিকভাবে নির্মাণের জেরে প্রায় ধসের ঘটনা ঘটছে। ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে বনভূমি এবং স্রোতের কাছাকাছি কাঠামো যা জলের প্রবাহকে বাধা দেয়।
এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, কিছু জায়গায় বজ্রপাত-সহ মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে শিমলা, সোলান, মাণ্ডি, চাম্বা ও সংলগ্ন এলাকায়। রবিবার থেকে শুরু হয়ে টানা তিন দিন ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে হিমাচলের বিভিন্ন জায়গায়। মঙ্গলবারের পর থেকে যা একটু একটু করে কমে। বৃহস্পতিবার কিছু কিছু জায়গায় অল্প বৃষ্টি হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২৪ জুন থেকে বর্ষা পড়ার পর থেকে এই রাজ্যে বৃষ্টিজনিত কারণে অন্ততপক্ষে ২১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ধ্বংসাত্মক বৃষ্টি হিমাচলে শুধু পরিকাঠামোই নষ্ট করে দেয়নি, একের পর এক পরিবারকেও শেষ করে দিয়েছে ! শিমলা মন্দির ধসে একই পরিবারের তিন প্রজন্ম, প্রায় ৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ওই পরিবারে তিন শিশু-সহ সাত জন যখন ঘরে ছিলেন, সেই সময় ভেঙে পড়ে শিব মন্দিরটি।
বৃষ্টি-বিধ্বস্ত এই রাজ্যে হাজার হাজার মানুষের রুটিরুজি নষ্টের পথে। গোটা রাজ্য জুড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার। যা এই বিপর্যয়ের প্রকৃত মূল্য তুলে ধরছে। বহু মানুষের ব্যবসাপত্রও শিকেয় উঠেছে।
এই রাজ্যের অর্থনীতির অন্যতম ভিত পর্যটন ও আপেল। সেখানেও আঘাত করেছে বৃষ্টি-বিপর্যয়। একসময় এখানে যে ট্যাক্সি চালক দিনে ২ হাজার টাকা করে রোজগার করতেন, সেখানে এখন তাঁদের দৈনিক আয় নেমে এসেছে ২০০ টাকায়।