Kashmir News: 'ধর্মের আগে মানবিকতা', গুলিতে ঝাঁঝরা পর্যটককে পিঠে করে নিয়ে ছুটলেন কাশ্মীরের সাজাদ
Pahalgam News: পর্যটকদের বাঁচাতে এগিয়ে এলেন স্থানীয়রা। সেখানে ধর্মীয় ভেদাভেদ ছিল না। কাশ্মীরের অতিথিদের প্রাণ বাঁচাতে নিজের প্রাণের তোয়াক্কা করেননি কাশ্মীরি তরুণ সইদ আদিল হুসেন শাহ।

নয়া দিল্লি: ভূস্বর্গের এ কী দৃশ্য! সবুজ ঘাসের কার্পেটে রক্তস্রোত। ঘনঘন গুলির শব্দে ভারতের 'মিনি সুইৎজারল্যান্ড' যেন মৃত্যু বিভীষিকাময়। অমরনাথ যাত্রার আগে চলল গুলি। নির্বিচারে পর্যটকদের ধর্ম জেনে বেছে বেছে হত্যা করল জঙ্গিরা। মৃত্যু হয়েছে এক বাঙালি সহ অন্তত ২৫ জন পর্যটকের। জঙ্গিদের বাধা দিতে গিয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছেন এক স্থানীয় টাট্টুওয়ালারও। চতুর্দিকে তখন আতঙ্ক গ্রাস করেছে।
পর্যটকদের বাঁচাতে এগিয়ে এলেন স্থানীয়রা। সেখানে ধর্মীয় ভেদাভেদ ছিল না। কাশ্মীরের অতিথিদের প্রাণ বাঁচাতে নিজের প্রাণের তোয়াক্কা করেননি কাশ্মীরি তরুণ সইদ আদিল হুসেন শাহ। সামনেই যে জঙ্গিকে পেয়েছিলেন, ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তার উপর। সর্বশক্তি দিয়ে তার হাত থেকে মারণাস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন! পারেননি। জঙ্গিরা তাঁর ধর্ম জানতে চায়নি। বদলে সরাসরি তাঁর শরীর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য বলছে, মঙ্গলবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি পর্যটক নন, নাম পড়েই বোঝা যায় - তিনি হিন্দুও নন, তিনি স্থানীয় বাসিন্দা, একজন আম-কাশ্মীরি।
এগিয়ে এসেছিলেন সাজ্জাদ আহমেদ ভাট, কাশ্মীরের শাল বিক্রেতা। ইন্ডিয়া টুডে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন হয়ে ধরা গলায়। আবেগে ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বলেন, 'আমার কাছে ধর্মের আগে মানবিকতা, মানবতা।' সংবাদসংস্থা এএনআইকে সাজাদ বলেন, 'পহেলগাঁও পনি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ ওয়ান একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে এই ঘটনা জানালে আমি তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। বিকেল ৩টার দিকে সেখানে পৌঁছই। আহতদের জল খাওয়াই এবং যারা হাঁটতে পারছিলেন না তাদের কাঁধে তুলে নিয়ে আসি। তাদের অনেককে হাসপাতালে নিয়ে আসি। পর্যটকদের কাঁদতে দেখে আমার চোখে জল এসে গিয়েছে। এঁরাই আমাদের অন্নসংস্থানে সাহায্য করে। এই পর্যটকদের ছাড়া আমাদের জীবন অসম্পূর্ণ।"
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের অর্থনীতির মূল ভিত্তিই হল পর্যটন। পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছরে হু হু করে বাড়ছিল কাশ্মীরে পর্যটকের সংখ্যা। জম্মু কাশ্মীর সরকার সরকার সূত্রে খবর, ২০২১ সালে পর্যটকের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৩ লক্ষ। ২০২২ সালে তা বেড়ে হয় ১ কোটি ৮৯ লক্ষ । ২০২৩ সালে তা আরও বেড়ে হয় ২ কোটি ১১ লক্ষ। ২০২৪ সালে ছিল ২ কোটি ৩৫ লক্ষ। এই জঙ্গি হামলা যে তাঁদের রুজি-রুটি কার্যত বন্ধ করে দিল তা হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছেন কাশ্মীরে পর্যটনের সঙ্গে জড়িত লোকজন।






















