Supreme Court: রাজ্যের নির্বাচিত সরকার কি রাজ্যপালের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকবে? অনন্তকাল বিল আটকে রাখা নিয়ে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
Power of Governor and President: প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন মামলার শুনানি করছিলেন।

নয়াদিল্লি: রাজ্য বিধানসভায় পাস হওয়া বিল রাজ্যপাল অনির্দিষ্টকাল আটকে রাখতে পারেন কি না, সেই নিয়ে আইনি টানাপোড়েন অব্যাহত। সেই নিয়ে এবার গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তুলল, রাজ্যপাল যদি অনির্দিষ্ট কাল বিল আটকে রাখেন, তাহলে রাজ্যের নির্বাচিত সরকার কি রাজ্যপালের মর্জির উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে না? (Supreme Court)
প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন মামলার শুনানি করছিলেন। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে জানান, রাজ্যপাল কোনও বিল আটকে দিলে, সেটি বাতিল হয়ে যায়। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল শুধুমাত্র পোস্টম্যান নন…উনি একজন ব্যক্তি, সরাসরি নির্বাচিত না হয়েও, নির্বাচিত প্রতিনিধিদের চেয়ে কোনও অংশে কম যান না।” (Power of Governor and President)
সলিসিটর জেনারেল আরও জানান, মন্ত্রিসভার পরামর্শ, কথা মেনে চলতে হয় রাজ্যপালকে। কিন্তু বিল আটকে রাখা উচিত বলে কেউই পরামর্শ দেবেন না তাঁকে। কাউকে অসম্মান না করেই বিল আটকে রাখা যেতে পারে। বিলের গোটা বক্তব্য তেমন কিছু হলে, বিলটি ফেরত পাঠানোর প্রশ্নই ওঠে না। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, “২৮টি রাজ্যের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আলাদা। কখনও কখনও সীমান্ত বা আন্তর্জাতিক বিষয় জড়িয়ে থাকলে, বিল আটকে রাখতে হয়। কোনও রাজ্য যদি এমন কোনও বিল আনে, যাতে বিদেশনীতির উপর প্রভাব পড়ে, তাতে কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কোনও নাগরিক সেটিকে চ্যালেঞ্জ করেন কি না, তার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু তত দিনে অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়তে পারে।”
রাজ্যপাল পদটি রাখা নিয়ে সংবিধান প্রণেতাদের মধ্যে যে মতানৈক্য ছিল, তা তুলে ধরেন সলিসিটর জেনারেল। কিন্তু শাসনকার্যে কেন্দ্রের যে ভূমিকা থাকে, সেটা মেনেই রাজ্যপাল পদটি রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাই বিল ছাড়া নিয়ে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতিকে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলে, তা তাঁদের সাংবিধানিক পদের অবমাননা হয় বলে দাবি করেন সলিসিটর জেনারেল। তিনি জানান, রাজ্যপাল সম্মতি প্রদান থেকে বিরত থাকছেন অর্থ বিলটির ‘মৃত্যু ঘটছে’। পুনর্বিবেচনার জন্য বিলটি বিধানসভায় ফেরত পাঠানোর প্রয়োজনই নেই।
এতে CJI গাভাই বলেন, “তাহলে তো অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলটি আটকে থাকবে? পুনর্বিবেচনার জন্য যদি বিলটি ফেরত না পাঠান, সেক্ষেত্রে অনন্তকাল বিলটি আটকে থাকবে?” সংবিধান রাজ্যপালকে সেই ক্ষমতা দিয়েছেন বলে দাবি করেন সলিসিটর জেনারেল। এতে CJI বলেন, “তাহলে কি রাজ্যপালের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা তুলে দিচ্ছি না আমরা? সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নির্বাচিত সরকার রাজ্যপালের ইচ্ছে, অনিচ্ছে অনুযায়ী চলবে?”
এদিন আদালত জানায়, রাজ্যপালকে তাঁর সিদ্ধান্ত জানাতে হবে। রাজ্যপাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বিল আটকে রাখতে পারেন কি না, নাকি সাময়িক সময়ের জন্য আটকে রাখতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত বলেও জানায় আদালত। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে ফের শুনানি রয়েছে। এর আগে, গত ৮ এপ্রিল তামিলনাড়ু সরকারের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্য বিধানসভায় পাস হওয়া বিল ছেড়ে দেওয়ার জন্য তিন মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সেই নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অনেকে যেমন সরব হন, তেমনই পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা দেশের প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ও আদালতকে আক্রমণ করেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু খোদ এ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই নিয়েই শুনানি চলছে।






















