India-China Relations: সংঘাত ভুলে কাছাকাছি ভারত ও চিন, বন্ধুত্বের প্রস্তাব দুই তরফেই, ট্রাম্পের ‘শুল্ক-শাস্তি’ই কি দূরত্ব ঘোচাল?
India-China Border: দিল্লিতে আয়োজিত ২৪তম বিশেষ প্রতিনিধিদলের বৈঠকে যোগ দিতে এসেছেন ওয়াং।

নয়াদিল্লি: সংঘাত ভুলে মৈত্রীর প্রস্তাব। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিতে জোর। দিল্লিতে বসে এমনই বার্তা দিলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে যখন টানাপোড়েন চলছে, সেই সময় চিনের তরফে এই বন্ধুত্বের প্রস্তাব তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ। যদিও চিনের ব্যাপারে বুঝেশুনে পা ফেলা উচিত বলে মত অনেকের। (India-China Relations)
দিল্লিতে আয়োজিত ২৪তম বিশেষ প্রতিনিধিদলের বৈঠকে যোগ দিতে এসেছেন ওয়াং। মঙ্গলবার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তিনি। আর সেখানেই সীমান্ত সংঘাত থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, একাধিক বিষয় ছুঁয়ে যায় দুই দেশ, যা বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। (India-China Border)
লাদাখ এবং অরুণাচলপ্রদেশে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু ডোভালের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে এদিন ওয়াং বলেন, “সীমান্তে স্থিতাবস্থা ফিরে আসতে দেখে আনন্দিত আমরা। গত বছরের বৈঠতেই এ নিয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছতে সফল হই আমরা। মতানৈক্য কাটিয়ে সীমান্তে স্থিতাবস্থা টিকিয়ে রাখা নিয়ে সমঝোতা গড়ে ওঠে আমাদের মধ্যে। লক্ষ্যে পৌঁছতে যে কাঠামো তৈরি করি, তার দরুণ সীমান্তে স্থিতাবস্থা ফিরতে দেখে ভাল লাগছে।” গত কয়েক বছরে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া যেভাবে তলানিতে এসে ঠেকে, তা দুই দেশের নাগরিকদেরই স্বার্থের পরিপন্থী বলে জানান ওয়াং।
#WATCH | Delhi: During meeting with NSA Ajit Doval, Chinese Foreign Minister Wang Yi says, "We are heartened to see the stability that is now restored on the borders."
— ANI (@ANI) August 19, 2025
"We had a very good 23rd round of special representatives talks at the end of last year. At that meeting, we… pic.twitter.com/J9GqaMVhM3
গতবছর অক্টোবর মাসে কাজানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের মধ্যে যে বৈঠক হয়েছিল, এদিন তারই উল্লেখ করেন ওয়াং। পাশাপাশি, ডোভালকেও ধন্যবাদ জানান তিনি। বলেন, “মিস্টার ডোভাল, ভারতের হয়ে যে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, তার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য অভূতপূর্ব সুযোগ উপস্থিত হয়েছে এই মুহূর্তে, যা উন্নতি এবং সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে আমাদের।”
শাংহাই কোঅপরাশেন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে যোগ দিতে চলতি মাসের শেষ দিকেই চিন সফরে যাচ্ছেন মোদি। সেখান থেকে দুই দেশের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক গড়ে উঠবে, যাতে দুই দেশেরই দীর্ঘমেয়াদি ক্ষেত্রে লাভবান হবে, দুই দেশেরই স্বার্থরক্ষা হবে বলে আশাবাদী ওয়াং। পরস্পরের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তুলতে, সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে এবং সীমান্ত নিয়ে সমঝোতা গড়ে তুলতে দুই দেশকেই সমান ভাবে এগিয়ে আসতে হবে বলে মত তাঁর।
ওয়াং জানিয়েছেন, সীমান্ত সংঘাত হোক বা অন্য কোনও ক্ষেত্র, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ঐক্যমত্য গড়ে তোলার পক্ষপাতী তিনি। তাঁর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন ডোভালও। তাঁর বক্তব্য, “সীমান্তে শান্তি বিরাজ করছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত হয়েছে আগের থেকে। কাজানে দুই রাষ্ট্রনেতার সাক্ষাতের পর যে নতুন ধারার প্রবর্তন হয়, তাতে দুই দেশই লাভবান হয়েছে।” ডোভালের মতে, ভারত ও চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৭৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। দুই দেশই এখন অনেক পরিণত, দায়িত্বশীল, যা এতদূর এগোতে সাহায্য় করেছে।
যে সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সখ্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চোখে পড়ছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সীমান্ত সংঘাত হোক বা পাকিস্তানের প্রতি বেজিংয়ে নিঃশর্ত সমর্থন, এতদিন একাধিক বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ চওড়া হচ্ছিল। কিন্তু ভারতের উপর যেভাবে 'শুল্ক শাস্তি' চাপিয়েছে আমেরিকা, তাতে সরাসরি ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে চিন। শুল্ক নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে চিনেরও। আর তাতেই আমেরিকার বিরুদ্ধে উপমহাদেশের দেশগুলির মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রস্তাব জোরাল হয়েছে। তাই ডোভাল এবং ওয়াংয়ের এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এতে আমেরিকার কাছেও বার্তা যাবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ। তবে ঐতিহাসিক ভাবে যেহেতু ভারত ও চিনের মধ্যে বৈরিতা থেকেছে, পহেলগাঁও হামলার পরও যেভাবে পাকিস্তানের পাশে থেকেছে বেজিং, তাতে দিল্লির সাবধানী পদক্ষেপ করা উচিত বলেও মত অনেকের।






















