Afghanistan : 'ঘরের ছেলেকে ফিরিয়ে দিন', আর্তির মাঝেই আটকে পড়া ভারতীয়দের আনতে আজ কাবুলে যেতে পারে বায়ুসেনা-বিমান
আফগানিস্তানের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন বহু ভারতীয়। কিন্তু, আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন ফিরতেই একবুক আতঙ্ক আঁকড়ে দেশে ফিরেছেন তাঁদের অনেকেই
নয়াদিল্লি : আফগানিস্তানে আটক ভারতীয়দের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে। আজ কাবুল বিমানবন্দরে পাঠানো হতে পারে বায়ুসেনার বিমান, খবর সূত্রের। বিমানবন্দরে দায়িত্বে থাকা মার্কিন সেনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে নয়াদিল্লি। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কাবুলে ওঠানামা করতে পারে সাধারণ উড়ান, খবর সূত্রের। যে কোনও মুহূর্তে ছুটে আসতে পারে তালিবানি বুলেট! তাই জীবিকা নির্বাহের জন্য আফগানিস্তানে যাওয়া ভারতীয়রা যেভাবেই হোক দেশে ফিরতে চাইছেন। তীব্র উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাঁদের পরিজনদের।
আফগানিস্তানে আটকে থাকা ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে প্রবল চেষ্টা করছে সরকার। মঙ্গলবার নিরাপত্তা বিষয়ক ক্যাবিনেট বৈঠকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। শ দেড়েক ভারতীয় এখনও কাবুলে আটকে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের দ্রুত দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে। প্রস্তুত রয়েছে বিমান। চটজলদি যাওয়ার প্রয়োজন হলে আফগানিস্তান লাগোয়া প্রতিবেশী দেশ থেকেও বিমান চাওয়ার কথা ভাবছে ভারত সরকার। হামিদ কারজাই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা গেলেই, কাবুলের দিকে উড়বে বিমান। অন্যদিকে, কাবুল-ফেরত ভারতীয়রা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে আসার ১৫ মিনিটের রাস্তায় ১৫ জায়গায় নাকা তল্লাশি হয়েছে। চেকিংয়ের নামে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা টাকা।
এই প্রেক্ষাপটে, কর্মসূত্রে আফগানিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকা বাংলার বাসিন্দাদের দ্রুত উদ্ধার করে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার।
বর্তমানেও কাজের সূত্রে, আফগানিস্তানের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন বহু ভারতীয়। কিন্তু, আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন ফিরতেই একবুক আতঙ্ক আঁকড়ে দেশে ফিরেছেন তাঁদের অনেকে। যেমন, নদিয়ার রানাঘাটের বেগোপাড়ার বাসিন্দা সুপ্রিয় মিত্র ও শানু গঞ্জালভেস। দুজনেই কাবুল এয়ারপোর্টে, অস্থায়ী মার্কিন দূতাবাসে রাঁধুনির কাজ করতেন। ২০১৯-এর জানুয়ারি থেকে সুপ্রিয় ওই দেশে। আর শানু গিযেছিলেন ২০২০-তে। শান্ত কাবুলকে চোখের সামনে ধীরে ধীরে অশান্ত হতে দেখেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, 'গত দু’মাসে চোখের ওপর পরিবেশ বদলাতে দেখি ।নিজে চোখে দেখেছি গ্রেনেড, বোমা পড়তে। যত দেখছি, তত ভয লাগছে।'
গত এক মাসের মধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন ২জনে। ২৮ জুলাই ফিরেছেন সুপ্রিয় ও চৌঠা অগাস্ট এসেছেন শানু। মনের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি। উদ্বেগ কেটেছে পরিবারেরও। কিন্তু সেই সঙ্গে উত্কণ্ঠা, যাঁরা ফিরতে পারেননি তাঁদের কী হবে?
আফগানিস্তানে আটকে রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের চার যুবক। উত্কণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে পরিবার। কাবুলের হোটেলে কাজ করতেন চার যুবক। দেশটা তালিবানের দখলে চলে যাওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে ঘুম উড়েছে গোপালনগরে থাকা আত্মীয়-পরিজনেদের। গতকাল কাবুলে আটকে থাকা চার যুবকের বাড়ি যান পাল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও গোপালনগর থানার পুলিশ। আফগানিস্তান থেকে ফেরাতে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে চার পরিবার।
এইরকম শতাধিক পরিবার আছেন প্রবল উত্কণ্ঠায়। চাইছেন ফিরে আসুক ঘরের ছেলে ঘরে। এখন সেই আশাতেই ভারত সরকারের দিকে তাকিয়ে তাঁরা।