Delhi Oxygen Crisis: 'অক্সিজেন সরবরাহে বাধা দিলে ফাঁসি দেব' রাজধানীতে অক্সিজেন সঙ্কট নিয়ে মন্তব্য দিল্লি হাইকোর্টের
দেশে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউকে 'সুনামি' আখ্যা দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
নয়াদিল্লি : 'অক্সিজেন সরবরাহে বাধা দিলে আমরা তাঁকে ফাঁসি দেব।' শনিবার সাফ জানিয়ে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। দেশে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউকে 'সুনামি' আখ্যা দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। শনিবার একটি মামলার পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট জানায়, হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটানো হলে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কোনও আমলাকেই রেয়াত করা হবে না। প্রয়োজনে তাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, 'এই অপরাধে কাউকেই ছেড়ে কথা বলা হবে না।'
পাশাপাশি যে সমস্ত সরকারি আধিকারিক এই কাজ করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হবে কেন্দ্রের কাছেও। অপরাধীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে কেন্দ্রও।
হাইকোর্টকে দেওয়া দিল্লি সরকারের বিবৃতি অনুযায়ী, এই মুহূর্তে ৪৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেন না পেলে রাজধানীর চিকিৎসা ব্যবস্থা ধসে পড়বে। দিল্লির একাধিক হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। ছোট-বড় মিলিয়ে সমস্ত হাসপাতালেই পাল্লা দিয়ে চরমে পৌঁছেছে অক্সিজেন সঙ্কট। 'ঠিক কবে প্রতিশ্রুতি মতো ৪৮০ মেট্রিক টন ওজনের অক্সিজেন পৌঁছবে দিল্লি সরকারের কাছে?' কেজরিওয়াল সরকারের এই বিবৃতির নিরিখে শনিবার কেন্দ্রের কাছে তা জানতে চেয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
এর আগে এই মামলায় আপ সরকারের দিকেই বল ঠেলেছিল কেন্দ্র। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের যুক্তি, 'বাকি সমস্ত রাজ্যগুলি অক্সিজেন থেকে শুরু করে করোনার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে নিজেরাই। প্রয়োজন মতো তাঁদের সহযোগিতা করছে কেন্দ্রে। তবে দিল্লির ক্ষেত্রে সব দায় বর্তেছে কেন্দ্রের ঘাড়েই। কাজেই দিল্লি সরকারকে নিজেদের কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, গতকাল সন্ধেতে দিল্লিতে নতুন করে ২৬ হাজার ১৬৯ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। মৃত্যু হয়েছিল ৩০৬ জনের। যা একদিনে দিল্লিতে সর্বোচ্চ। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, দিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। জরুরি মধ্যস্থতা চেয়ে শনিবার সকালে একটি বিবৃতিতে হাসপাতালের অধিকর্তা জানিয়েছিলেন, "গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর দুই ঘণ্টা জোগান দেওয়ার মতো অক্সিজেন রয়েছে। আরও ৬০ জন রোগীর অবস্থা।" যদিও এরপরই সেই হাসপাতালের উদ্দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল অনেকে। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে অক্সিজেনের সরবরাহ নিয়ে বৈঠকও করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
কখনও দিল্লির জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতাল, কখনও দিল্লির এলএনজেপি, বাটরা হাসপাতাল। একে একে প্রকট হয়েছে অক্সিজেন সঙ্কট। জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে ২০ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দিল্লিতে অক্সিজেনের এই হাহাকারের মধ্যেই অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর দশরথপুরী এলাকায় একটি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৩২টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ১৬টি ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার বাজেয়াপ্ত করেছে দিল্লি পুলিস। গ্রেফতার করা হয়েছে ১ জনকে। ঘটনার তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ।