এক্সপ্লোর

অক্সিজেনের জন্য আর্তি: সুন্দরলাল বহুগুণার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ (১৯২৭-২০২১)

সৌভাগ্যবশত বহুগুণা এমন একটা সময়ে খ্যাতনামা পরিবেশ আন্দোলনকর্মী হয়ে উঠেছিলেন, যখন তাঁর মতো মানুষদের এখনকার মতো কথায় কথায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে জেলে ঢোকানো হত না। রাষ্ট্র যেখানে লাভ-ক্ষতির বিবেচনা করে সেখানে তাঁর মতো মাপের পরিবেশ কর্মীর কাজের স্বীকৃতি খুবই কৌশলি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

করোনা কেড়ে নিল আরও এক খ্যাতনামাকে। গত ২১ মে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন সুন্দরলাল বহুগুণা। সারা বিশ্বজুড়ে পরিবেশকর্মীদের অভিধানে চিপকো আন্দোলন শব্দ সংযোজন করেছিলেন এই বিশিষ্ট সমাজকর্মী। গত ৮ মে করোনাভাইরাস পরীক্ষা রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। প্রায় দুই সপ্তাহ পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। কোভিড সম্পর্কিত- জটিলতায় প্রয়াত হলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুকে ভারতের পরিবেশ আন্দোলনের একটা অপরিসীম ক্ষতি হিসেবেই মনে করা হচ্ছে।

গাঁধী যুগের যে মহান প্রত্যক্ষদর্শীরা জীবিত , তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যু নিঃসন্দেহে অপরিমেয় ক্ষতি। আমার সঙ্গে যখন তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল,  মনে হয়, সেই সময়টা ১৯৮৬-র গ্রীষ্মকাল। সঠিক তারিখটা মনে নেই। কিন্তু  তাঁর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের স্মৃতি আমার মনে এখনও উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। ১৯৮৯-এ রামচন্দ্র গুহর দ্য ইউনিক উডস: ইকোলজিক্যাল চেঞ্চ অ্যান্ড পিজেন্ট রেজিস্ট্যান্স প্রকাশিত হওয়ার অনেক আগেই ওই সাক্ষাৎ হয়েছিল। চিপকো আন্দোলনের পর তখন অন্তত এক দশক পেরিয়ে গিয়েছিল। তাঁর সাক্ষাৎ চেয়ে আমি চিঠি দিয়েছিলাম।

এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই আমার পশ্চিম দিল্লির বাড়ির লেটারবক্সে পৌঁছেছিল হাল্কা হলুদ রঙের পোস্টকার্ড। বহুগুণা চিঠিতে লিখেছিলেন, পরের সপ্তাহে তাঁর কিছু কাজের জন্য দিল্লি আসার কথা এবং আইএসবিটি (ইন্টার-স্টেট বাস টার্মিনাস) থেকে মাঝরাতে তিনি তেহরি গাড়ওয়াল অঞ্চলে তাঁর আশ্রমে যাওয়ার বাস ধরবেন। আমি কী তাঁর সঙ্গে গিয়ে তাঁর আশ্রমে কয়েকদিন কাটিয়ে আসতে পারি?সেই দিনগুলিতে ইন্টারনেট ছিল না।  টেলিফোনও ছিল না তাঁর। আইএসবিটি-তে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেই হবে। এমনই আশ্বাস তিনি আমাকে দিয়েছিলেন। মাঝরাতে আমরা সিলইয়ারা আশ্রমের উদ্দেশে আমরা বাসে চড়ছিলাম।

প্রায় সাত-আট ঘণ্টা পর বাস আমাদের প্রধান সড়কে নামিয়ে দিয়ে যায়। তাঁর আশ্রমে যেতে খাড়া পাহাড়ি পথে উঠতে হয়েছিল। আমার থেকে প্রায় দ্বিগুণ বয়সের বহুগুনা একেবারে সাবলীলভাবে  পাহাড়ি পথে হাঁটছিলেন, আমাকে পিছনে ফেলে। তিনি আমাকে বলেছিলেন, এই পাহাড়ি বাতাস তাঁর ফুসফুসকে শক্তিশালী করেছে। আশ্রমে আমাদের স্বাগত জানিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী বিমলা। বহুগুণাকে বিয়ের শর্ত দিয়েছিলেন বিমলা। সেই শর্ত হল, যে কোনও রকম রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা ছেড়ে সমাজকর্মী হিসেবে এই অঞ্চলের মানুষের সেবা করবেন বহুগুণা।

আশ্রমের পরিবেশ ও সুন্দরলাল ও বিমলার জীবন যাপনে যা মূর্ত হয়ে ওঠে তা বর্ণনা করা যায় সম্ভবত 'স্পার্টান' শব্দের মাধ্যমে। হ্যান্ড পাম্পে স্নান-বরফ গলা জল-কিন্তু গ্রীষ্মেও তা হিমশীতল। তিনি আমাকে গরম জলে স্নান সেরে নিতে বলেছিলেন। খুবই সাধারণ খাবার দিয়েছিলেন বিমলা। বাজরা ও রুটির জন্য বার্লি। বিষয়টির ব্যাখ্যাও তাঁরা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তাঁরা আটা ও চালের ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ, যে গ্রামবাসীদের জন্য তাঁরা কাজ করেন, সেই গ্রামবাসীদের গম ও চাল খাওয়ার মতো ক্ষমতা নেই। এক্ষেত্রে বাজরা ও বার্লি খুবই উপযোগী। কারণ, এর চাষে কম জল লাগে। যে সময়ে সম্পদ কমে যাচ্ছে, তখন এগুলিই সামঞ্জস্যপূর্ণ। 

'হোয়াট ডু দ্য ফরেস্ট বিয়ার? সয়েল, ওয়াটার অ্যান্ড পিওর এয়ার'। চণ্ডীপ্রসাদ ভট্টর গড়ে তোলা চিপকো আন্দোলন ,বহুগুণার নামের সঙ্গেই সমার্থক হয়ে ওঠে। এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মহিলারাই তৈরি করেছিলেন ওই স্লোগান। সমাজকর্মী হিসেবে বহুগুণার জীবন চিপকো আন্দোলন দিয়েই শুরু হয়নি। মহাত্মা গাঁধী ছিলেন তাঁর জীবনের অনুপ্রেরণা। কংগ্রেস দলের রাজনীতি  ছেড়ে বয়স যখন ২০-র কোটায়, তখন তিনি অস্পৃশ্যতা-বিরোধী কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত হন।

সেইসঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় মদ্যপান বিরোধী অভিযান গড়ে তুলতে গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন।  চিপকো আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা আর একটা স্লোগান- 'ইকোলজি ইজ পার্মানেন্ট ইকনমি'- বহুগুণার স্বতন্ত্র অবদান।  চিপকো আন্দোলনে মহিলারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। এই আন্দোলন বলতে অনেক সময় যা বলা হয়ে থাকে তা হল ঠিকাদারদের প্রতিরোধের প্রয়াস। সমতল থেকে আসা এই ঠিকাদারদের কাঠ শিল্পের জন্য গাছ কাটার ক্ষেত্রে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরা গাছ জড়িয়ে ধরতেন। এর থেকেই উৎপত্তি 'চিপকো', জড়িয়ে ধরা শব্দের। এই আন্দোলনের সংস্থাপক হিসেবে যখনই তাঁকে কৃতিত্ব দিতে চাওয়া হয়েছে ততবারই শ্রোতাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন বহুগুণা যে, সবিনয়ে একটা কথা জানাতে চাই, উত্তরাখণ্ডের মহিলারা এই আন্দোলন শুরু করেছিলেন। ক্রিকেট ব্যাট তৈরির জন্য সরকারি ঠিকাদারদের গাছ কাটা থেকে বিরত করতে গাছ জড়িয়ে ধরে এই আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন উত্তরাখণ্ডের মহিলারা।  আর এভাবেই চিপকো আন্দোলনের জন্ম, যা, ভারত তথা বিশ্বের সর্বত্র অহিংস পরিবেশ-আন্দোলনের সামনে দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে।

এই আন্দোলেন সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারাই। নির্বিচার অরণ্য-ধ্বংসের ফলে বাস্তুতন্ত্রের চরম ক্ষতি হবে, সেইসঙ্গে আচমকা বন্যার মুখে পড়তে হবে, তা জানতেন পাহাড় অঞ্চলের বাসিন্দা মহিলারা।  সেইসঙ্গে গ্রামীন জীবনযাত্রাতেও ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ছিল। আগুন জ্বালার জন্য কাঠ, খাবার, সেইসঙ্গে পানীয় জল ও চাষের জন্য জলের যোগানেও টান পড়ছিল। গ্রামবাসীরা তা জানতেন। কিন্তু বহুগুণা বুঝেছিলেন, বনভূমির 'রাজনৈতিক অর্থনীতি'র শোষণমূলক চরিত্র। তিনি 'পার্মানেন্ট ইকনমি'র বিরোধিতা করেন। আর এই সচেতনতা যে বাস্তব থেকে গড়ে উঠেছিল, তা হল- সম্পদের সঠিক ব্যবহার- বস্তুগত সম্পদের যথার্থ ব্যবস্থাপনা-এক্ষেত্রে ঠিকাদার, বন আধিকারিক ও শহরে বসবাসকারী এলিটদের সংশ্লিষ্ট করা। শহুরে এলিটদের সঙ্গে গ্রামীন জনজীবনের সম্পর্ক ছিল পরজীবীর মতো। 

সৌভাগ্যবশত বহুগুণা এমন একটা সময়ে খ্যাতনামা পরিবেশ আন্দোলনকর্মী হয়ে উঠেছিলেন, যখন তাঁর মতো মানুষদের এখনকার মতো কথায় কথায় রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে জেলে ঢোকানো হত না। রাষ্ট্র যেখানে লাভ-ক্ষতির বিবেচনা করে সেখানে তাঁর মতো মাপের পরিবেশ কর্মীর কাজের স্বীকৃতি খুবই কৌশলি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৮১-কে পদ্মশ্রী পুরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন বহুগুণা। ২০০৯-তে তিনি পদ্ম ভূষণ পুরস্কার গ্রহণ করেন। বহুগুণার আন্দোলনের কারণে ১৯৮০-তে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী উত্তরাখণ্ডে বাণিজ্যিক বৃক্ষচ্ছেদনের ১৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন।

যদিও এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার ক্ষেত্রে বন আধিকারিকরা কতটা তৎপর হয়েছিলেন, তার খুব বেশি প্রমাণ বহুগুণা দেখতে পাননি। তিনি সমগ্র হিমালয় অঞ্চলে পদযাত্রা শুরু করেন। প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার পদযাত্রায় একদিকে তিনি যেমন বহু তৃণমূল স্তরের পরিবেশ আন্দোলন কর্মীদের উজ্জীবিত করেছিলেন, তেমনি অরণ্য নিধনের প্রশ্নটিও সবার সামনে তুলে ধরতে পেরেছিলেন। ওই সময়ের মধ্যে বহুগুণা এ সংক্রান্ত আরও কয়েকটি বিষয়ে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। তেহরি বাঁধ বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলেন যুক্ত হন তিনি। ২৬২ মিটার উঁচু ও ৫৭৫ মিটার এই বাঁধকে সরকার তাদের উন্নয়নমূলক কর্মসূচীর দায়বদ্ধতার প্রতীক হিসেবে দেশের বৃহত্তম বহুমুখী বাঁধ হিসেবে তুলে ধরেছিল। ১৯৮৯-এ তিনি এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রথমবার একাধিক অনশন আন্দোলন করেন। এই বাঁধের ফলে প্রায় এক লক্ষ গ্রামবাসীকে ভিটে ছাড়তে হবে এবং হিমালয়ের পাদভূমির ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে তা বিপজ্জনক হবে বলে আন্দোলনকারীরা সরব হয়েছিলেন।

বহুগুণা সাম্প্রতিক অতীতের অন্যান্য প্রথমসারির পরিবেশ আন্দোলনকারীদের তুলনায় গাঁধীর জীবন ও শিক্ষায় অনেক বেশি অনুপ্রাণিত ছিলেন। তা শুধু তাঁর স্পার্টান জীবনযাত্রাই নয়, সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে তাঁর সাবলীল যোগাযোগ ও একজন অহিংস আন্দোলনকারীর ভূমিকা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা থেকেই স্পষ্ট।  গাঁধীর শিক্ষা অনুযায়ী, একজন সমাজকর্মীর যে কোনও স্বীকৃতির প্রত্যাশা থাকতে নেই, শুধু পরিশ্রমই করে যেতে হয়, তা মর্মে মর্মে অনুধাবন করে পালন করে গিয়েছেন তিনি। 

জীবনের শেষদিনগুলিতেও সক্রিয় ছিলেন বহুগুণা। সাম্প্রতিকরকালে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে তরুণ আন্দোলনকারীদের পক্ষেও সরব ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি দীর্ঘদিন লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। তাঁর লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা কোনওদিন সামাজিক পরিবর্তনের প্রতি দায়বদ্ধতা এতটুকু কমায়নি বা তাঁর অবদান মুছে ফেলতে পারেনি। তাঁর অনশন আন্দোলনের সঙ্গে গাঁধীর তুলনা হয়েছে। কিন্তু গাঁধীর ভাবনার সঙ্গে বহুগুণার ভাবনা হুবহু একরকম ছিল না। আধুনিক ভারতীয় রাজনীতি এবং সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বহুগুণার অনশন আন্দোলনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন।

বহুগুণা মূল পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষ। সেখানেই তাঁর জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা। দিল্লি সাউথ ব্লকের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করতে এলেও তিনি বারেবারেই ফিরে গিয়েছেন পাহাড়ে, ভারতের গ্রামে। গাঁধীজীর চিন্তাভাবনা মতোই তাঁর গ্রামীণ অঞ্চলের জীবনের অবক্ষয় নিয়ে কোনও ভ্রান্ত ধারনা ছিল না। তাঁর নিজের জীবনকালে পাহাড়ি অঞ্চলে ভ্রান্ত-ধারণার বশবর্তী তথাকথিত উন্নয়নের বিধ্বংসী ফলাফল ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিনাশকারী প্রভাবের প্রত্যক্ষদর্শী হওয়া ছাড়াও তিনি দেখে থাকবেন যে, তাঁর জন্মভূমি উত্তরাখণ্ড বহু তরুণই শহরমুখী হয়েছেন। ফলে উত্তরাখণ্ডের শহরগুলি ঘোস্ট টাউনে পরিণত হয়ে পড়েছে। কিন্তু এস্বত্ত্বেও বহুগুণা তাঁর মতামতেই অনড় ছিলেন যে, গ্রামগুলির সমস্যার প্রতি নজর না দিলে ভারত সামাজিক সমতা ও ন্যায়ের পথে এগোতে পারবে না। 

চার দশক আগে আমাদের দুদিনের কথাবার্তায় তাঁর একটি পর্যবেক্ষণ আমার স্মৃতিতে এখনও তাজা- তিনি বলেছিলেন, ভারতের আত্মা রয়েছে গ্রামে। কোনও কোনও পাঠক তাঁর এই মনোভাবের সঙ্গে গাঁধীজী ও তাঁর অনুরাগীদের রোমান্টিসিজমের সঙ্গে জুডে দেখতে পারেন এবং এ ধরনের চিন্তাভাবনার দিকে নির্দেশ করে বলতে পারেন যে, গাঁধীর সময় অনেকটা দূরে চলে গিয়েছে। 

এই দৃষ্টিভঙ্গী গ্রামীন মানুষ ও যাঁরা গ্রাম ভারতের হয়ে সওয়াল করেন, তাঁদের বিবেচনার ক্ষেত্রে অবিচ্ছিন্ন থেকে যায়। কারণ এর পর্যায় ও কোনটা সবচেয়ে উপযুক্ত, এই বিষয়টি তাঁদের কাছে অত্যন্ত সংবেদশীল। আর এটাই বহুগুণার বড় বাঁধগুলির বিরোধিতার অন্যতম কারণ। 

যাঁরা তাঁর অনুরাগী তাঁরা মনে করেন যে, বহুগুণা মতো মানুষদের বেঁচে থাকার জন্য পৃথিবী, মাটি ও বাতাস থেকে অতিরিক্ত কিছু প্রয়োজন হয়নি। নিউজিল্যান্ডের একটি আদালতের রায়ের পাশাপাশি আমার মনে হয় বহুগুণার উদাহরণেই উত্তরাখণ্ডের হাইকোর্ট ২০১৭-তে একটি রায় দিয়েছিল যা মহিলা-পুরুষ, প্রকৃতি ও আমাদের পৃথিবীর পক্ষে সামগ্রিকভাবে খুবই অগ্রবর্তী ও মুক্তির দিশানির্ণয়কারী। বিচারপতি রাজীব শর্মা ও অলোক সিংহ লিখেছিলেন যে, গঙ্গা ও যমুনা নদী ও তাদের শাখাগুলি আইনি ও জীবন্ত বস্তু, যেগুলির আইনি ব্যক্তির মতো সমস্ত মর্যাদা রয়েছে। এভাবে দেখলে বহুগুণা অক্সিজেন উৎপাদনকারী গাছ ও মুক্ত বাতাসের জন্য লড়াইয়ের অগ্রণী সৈনিক। তিনি অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্যও সংগ্রাম করেছিলেন। এটা নিষ্ঠুর শোনাতে পারে, সম্ভবত তিক্ত সত্য যে আমাদের এই কঠিন সময়ে তাঁর অক্সিজেনের অভাব অনুভব করা দরকার ছিল। এটা সত্য যে বিগত কয়েকমাস তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু জীবনযাপনের পরিস্থিতি-পাহাড়ের অপেক্ষাকৃত নির্মল বাতাস, মর্যাদাপূর্ণ শ্রমের জীবন, কোনও অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত না থাকা, দীর্ঘ ও সুখী বিবাহ, প্রকৃতির সঙ্গে যোগাযোগ, মুক্ত ও উচ্চ চিন্তাভাবনার পরিসর, গ্রামীন জীবনধারার সরলতায় সন্তুষ্টি-৯৪ বছরের দীর্ঘ জীবনের পক্ষে অনুকূল।

আমাদের কাছে এর থেকে দুঃখজনক আর কী হতে পারে, যে মানুষটা অক্সিজেন উৎপাদনকারী গাছকে বাঁচানোর সংগ্রামে লিপ্ত ছিলেন, তাঁকেই অক্সিজেনের জন্য ছটফট করতে হয়েছে, যন্ত্রের সাহায্য নিতে হয়েছে অক্সিজেন পেতে।

(বিশেষ দ্রষ্টব্য - উপরিউক্ত লেখাটির পরিসংখ্যান, দাবি ও  মতামত লেখকের নিজস্ব। এবিপি লাইভের সম্পাদকীয় কোনওরকম প্রভাব এতে নেই। লেখাটির বিষয়ে এবিপি কোনওরকম মত পোষণ করে না।)
 

আরও পড়ুন
Sponsored Links by Taboola

লাইভ টিভি

ABP Live TV
ABP আনন্দ
ABP અસ્મિતા
ABP ਸਾਂਝਾ
ABP न्यूज़
ABP माझा
POWERED BY
sponsor

সেরা শিরোনাম

Bangladesh Violence: 'ষড়যন্ত্র করে মারা হয়েছে', দীপু দাসের মৃত্যুতে আর কী অভিযোগ তাঁর ভাই ঋত্বিকের?
'ষড়যন্ত্র করে মারা হয়েছে', দীপু দাসের মৃত্যুতে আর কী অভিযোগ তাঁর ভাই ঋত্বিকের?
Car Loan Tips : গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন ? এই ব্যাঙ্কগুলিতে গাড়ির ঋণে সর্বনিম্ন সুদ
গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন ? এই ব্যাঙ্কগুলিতে গাড়ির ঋণে সর্বনিম্ন সুদ
Aadhaar Card : আধার কার্ড হারিয়ে গেছে ? চিন্তার কিছু নেই, এই কাজগুলি করলেই ফিরে পাবেন 
আধার কার্ড হারিয়ে গেছে ? চিন্তার কিছু নেই, এই কাজগুলি করলেই ফিরে পাবেন 
News Live Updates : আজ নতুন দল ঘোষণা হুমায়ুনের, কোন দিকে বঙ্গ রাজনীতি ?
আজ নতুন দল ঘোষণা হুমায়ুনের, কোন দিকে বঙ্গ রাজনীতি ?

ভিডিও

Eye Hospital: বড়দিনের আগে বিশেষভাবে সক্ষম দৃষ্টিহীন শিশুদের সঙ্গে নিয়ে চোখের হাসপাতাল চালু করতে চলেছে বিপি পোদ্দার
Durga Puja: কলকাতার পুজোর সঙ্গে, বিশ্বের একাধিক দুর্গাপুজোর আয়োজকদের সেতু তৈরিতে বিশেষ উদ্যোগ
ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন (২২.১২.২৫) পর্ব ২: সামশেরগঞ্জে হরগোবিন্দ-চন্দন দাস খুনে দোষী ১৩, আজ সাজা ঘোষণা
ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন (২২.১২.২৫) পর্ব ১: মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা হুমায়ুনের, বাংলাদেশে হিন্দু যুবকের মর্মান্তিক পরিণতি, উত্তাল কলকাতা
Sajal Ghosh: তৃণমূল কাউন্সিলরকে 'বাংলাদেশি আখ্যা', সজলের সভায় ধুন্ধুমার | ABP Ananda Live

ফটো গ্যালারি

ABP Premium

ব্যক্তিগত কর্নার

সেরা প্রতিবেদন
সেরা রিল
Bangladesh Violence: 'ষড়যন্ত্র করে মারা হয়েছে', দীপু দাসের মৃত্যুতে আর কী অভিযোগ তাঁর ভাই ঋত্বিকের?
'ষড়যন্ত্র করে মারা হয়েছে', দীপু দাসের মৃত্যুতে আর কী অভিযোগ তাঁর ভাই ঋত্বিকের?
Car Loan Tips : গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন ? এই ব্যাঙ্কগুলিতে গাড়ির ঋণে সর্বনিম্ন সুদ
গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন ? এই ব্যাঙ্কগুলিতে গাড়ির ঋণে সর্বনিম্ন সুদ
Aadhaar Card : আধার কার্ড হারিয়ে গেছে ? চিন্তার কিছু নেই, এই কাজগুলি করলেই ফিরে পাবেন 
আধার কার্ড হারিয়ে গেছে ? চিন্তার কিছু নেই, এই কাজগুলি করলেই ফিরে পাবেন 
News Live Updates : আজ নতুন দল ঘোষণা হুমায়ুনের, কোন দিকে বঙ্গ রাজনীতি ?
আজ নতুন দল ঘোষণা হুমায়ুনের, কোন দিকে বঙ্গ রাজনীতি ?
Stocks to watch :  আজ নজরে রাখুন এই ১০ স্টক, এইচসিএল টেক, ইন্ডিয়ান হোটেলস ছাড়াও এগুলি রয়েছে তালিকায় 
আজ নজরে রাখুন এই ১০ স্টক, এইচসিএল টেক, ইন্ডিয়ান হোটেলস ছাড়াও এগুলি রয়েছে তালিকায় 
Weather Update: আজ কলকাতা মরশুমের শীতলতম দিন, পারদ নামল ১৫-র নীচে, জেলাগুলোতেও বাড়ছে ঠাণ্ডার আমেজ
আজ কলকাতা মরশুমের শীতলতম দিন, পারদ নামল ১৫-র নীচে, জেলাগুলোতেও বাড়ছে ঠাণ্ডার আমেজ
Multibagger Stocks :  ১ লাখ রাখলে পেতেন ১.২৩ কোটি, বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ১২,২০০% রিটার্ন, স্টকের নাম জানেন ?  
১ লাখ রাখলে পেতেন ১.২৩ কোটি, বিনিয়োগকারীরা পেয়েছেন ১২,২০০% রিটার্ন, স্টকের নাম জানেন ?  
Christmas Offer Fraud : ক্রিসমাস অফারের নামে ফাঁদ পেতেছে প্রতারকরা ; এই ৩টি উপায়ে হচ্ছে সাইবার জালিয়াতি
ক্রিসমাস অফারের নামে ফাঁদ পেতেছে প্রতারকরা ; এই ৩টি উপায়ে হচ্ছে সাইবার জালিয়াতি
Embed widget