Mamata Goa Visit: গোয়ায় তৃণমূলের জোট-ধাক্কা? বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকেই সমর্থনের ঘোষণা গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির
তৃণমূল নয়। গোয়া বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকেই সমর্থনের ঘোষণা গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির। ২০১৭-তে বিজেপির ক্ষমতা দখলের জন্য দায়ী কংগ্রেস ও গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি। পাল্টা আক্রমণ তৃণমূলের।
অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও দীপক ঘোষ: আগামী ১৩ ডিসেম্বর একসঙ্গে গোয়ায় (Goa) যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তার আগে গোয়ায় ধাক্কা খেল তৃণমূলের (TMC) জোট-কৌশল। তৃণমূল (TMC) নয়। গোয়া বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকেই সমর্থনের ঘোষণা গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির। ২০১৭-তে বিজেপির (TMC) ক্ষমতা দখলের জন্য দায়ী কংগ্রেস ও গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি। পাল্টা আক্রমণ তৃণমূলের।
১৯ ডিসেম্বর কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipality) ভোটগ্রহণ। আর সেদিনই গোয়ার পর্তুগিজ শৃঙ্খলমুক্তির ৬০ বর্ষপূর্তি উদযাপন। এই আবহে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সমস্বরে বলছে, আসছে বিধানসভা ভোট গোয়ার দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ!
সব ঠিকঠাক থাকলে ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election) হতে পারে গোয়ায়। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একদা ‘পূর্বের রোম’বলে পরিচিতি পাওয়া গোয়ায় ক্ল্যাশ অফ দ্য গ্ল্যাডিয়েটরস! শাসক বিজেপিকে উৎখাত করতে তৎপর কংগ্রেস।
পাল্লা দিচ্ছে আম আদমি পার্টি (AAP)। জমি তৈরি করতে তৎপর তৃণমূল। ইতিমধ্যেই গোয়া সফর সেরেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ১৩ ডিসেম্বর একসঙ্গে গোয়া যেতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
তবে এরই মধ্যে ‘গোয়ার খেলা’ জমিয়ে দিয়েছে গোয়ার প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী বিজয় সরদেশাইয়ের গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি। যার প্রভাব পড়েছে তৃণমূলের নির্বাচনী (TMC) কৌশলেও।
গত ৩০ অক্টোবর রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi) গোয়া সফর শুরুর দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির প্রধান বিজয় সরদেশাই।
তখনও সবাই ভেবেছিলেন, গোয়ায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ও গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি একজোট হয়েই লড়বে। কিন্তু একমাস পরেই ছবিটা বদলে যায়! গত ৩০ নভেম্বর, বিজয় সরদেশাইকে দেখা যায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একফ্রেমে। বিজয় সরদেশাই ছাড়াও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করে কংগ্রেসকে সমর্থন জানান সাঙ্গুয়েমের নির্দল বিধায়ক প্রসাদ গাঁওকর।
এই সমস্ত ছবি পোস্ট করে গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির সভাপতি বিজয় সরদেশাই ট্যুইটারে লেখেন, সহকর্মী প্রসাদ গাঁওকর ও বিনোদ পালেকরকে নিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করলাম। আমরা গোয়াবাসীর স্বার্থে আন্তরিকতার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করছি। যাতে এই দুর্নীতিগ্রস্ত, অকর্মণ্য এবং অগণতান্ত্রিক বিজেপি সরকারকে উপড়ে ফেলা যায়!
যার জেরে বেজায় চটেছে তৃণমূল। রাহুল গান্ধী ও বিজয় সরদেশাইয়ের ছবি পোস্ট করে ট্যুইটারে তারা লেখে, ২০১৭-র নির্বাচনী বিশ্বাসঘাতকতার দুই প্রকৃত অপরাধী ফের একজোট হয়েছে। পর্দার পিছনে হওয়া এই আঁতাঁত ফলপ্রসূ হবে না। গোয়া আর তাদের সুযোগ দেবে না।
১ ডিসেম্বর তৃণমূলের তরফে গোয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংসদ মহুয়া মৈত্র ট্যুইটারে লেখেন, ২০১৭-তে কংগ্রেস ১৭টি আসনে জয়ী হয়। বিজেপির জেতে মাত্র ১৩টি আসনে। এরপরও AICC’র দিগ্বিজয় সিংহ শুধু পর্যবেক্ষণই করে গেলেন! গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির সঙ্গে আঁতাঁত করে সরকার গড়ে ফেলল বিজেপি! এখন ভোটের মুখে হঠাৎ গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি কংগ্রেসকে জড়িয়ে ধরে বলছে, বিজেপি খারাপ!
পাল্টা কংগ্রেসকে সমর্থনের প্রসঙ্গে নিজের যুক্তি দিয়েছেন গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির শীর্ষ নেতা। গতকাল সংবাদ সংস্থা ANI-কে গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির বিধায়ক ও সভাপতি বিজয় সরদেশাই বলেন, কংগ্রেস ন্যাশনাল দল, তৃণমূল সবে পা রেখেছে এখানে, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিই আগামী ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে টিম গোয়া হিসেবে ভোটে লড়ব, টিম গোয়া মানে যারা সিরিয়াসলি বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার কথা ভাবছে, তারা, আমাদের একসঙ্গে আসা দরকার, তাই রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে এবং তাঁর দলের সঙ্গে গোয়ায় ক্ষমতার পরিবর্তনের কথা বলছি।
তৃণমূলকে কটাক্ষ করে গোয়া কংগ্রেসের তরফেও ট্যুইটারে লেখা হয়, তৃণমূলের প্রতি সহানুভূতি জানাই। তারা হতাশ হয়ে পড়েছে কারণ, যে সমস্ত দল এবং নেতাদের কাছে তারা গিয়েছিল, দলে যোগদানের গল্প ফেঁদেছিল, সেই নেতারা এখন তৃণমূলে যোগ দিতে অস্বীকার করছেন। শুধু তাই নয়, যাঁরা এতদিন তৃণমূলকে সমর্থন জানাচ্ছিলেন, তাঁরাও এখন গোয়ার মনোভাব বুঝে ফিরে আসছেন।
গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির সাধারণ সম্পাদক দুর্গাদাস কামাত জানিয়েছেন, এখন কংগ্রেস, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি আলাদা বলে কিছু নেই, পুরোটাই টিম গোয়া, তৃণমূল সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করব না, গুরুত্ব নেই। সব মিলিয়ে গোয়ার রাজনীতিতে কে কখন কার সঙ্গে, তা বুঝে ওঠা দায়।