K Chandrasekhar Rao: নজরে লোকসভা '২৪, মমতার পদাঙ্কই অনুসরণ কেসিআর-এর, মোদিকে টেক্কা দিতে বড় পদক্ষেপ
Lok Sabha Election 2024: দিন ক্ষণ দেখে, বুধবার দুপুর ১টা বেজে ১৯ মিনিটের শুভ ক্ষণে দলের নয়া সংস্করণ ঘটালেন কেসিআর।
হায়দরাবাদ: বিজেপি বিরোধী জোটের অংশ হওয়া নয় শুধু, সামনাসামনি নরেন্দ্র মোদির মোকাবিলা করতে চান বলে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) আগে এ বার সেই পথেই এগোলেন তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (K Chandrasekhar Rao)। জাতীয় রাজনীতিতে জাঁকিয়ে বসতে এ বার দলের নামই বদলে ফেললেন তিনি। এত দিন যে তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (TRS) প্রধান ছিলেন তিনি, এখন থেকে তার নাম হল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (BRS) (Bharat Rashtra Samithi)।
২০২৪-এ সরাসরি মোদিকে টেক্কা দিতে চান কেসিআর
দিন ক্ষণ দেখে, বুধবার দুপুর ১টা বেজে ১৯ মিনিটের শুভ ক্ষণে দলের নয়া সংস্করণ ঘটালেন কেসিআর। এ দিন দুপুরে প্রথমে দলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তার পর দলের নতুন নাম সামনে আনেন। তাঁর ঘোষণা শেষ হতেই আবির মেখে, বাজি ফাটিয়ে উচ্ছ্বাস দেখান দলের কর্মী-সদস্যরা। দলের নয়া নামকরণের বিষয়টি ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন কেসিআর। কারণ জাতীয় দল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিধি নিয়ম রয়েছে কমিশনের।
জাতীয় ক্ষেত্রে স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে কমপক্ষে চারটি রাজ্যে অস্তিত্ব থাকা বাধ্যতামূলক যে কোনও রাজনৈতিক দলেরই। অথবা চার রাজ্যের যে কোও একটিতে এবং চারটি লোকসভা আসনে ভোটের শেয়ার অন্তত ৪ শতাংশ হতে হবে। লোকসভা নির্বাচনে অন্তত তিনটি রাজ্যে যদি কোনও দলের ভোট শেয়ার ২ শতাংশ থাকে, সে ক্ষেত্রেও জাতীয় স্বীকৃতি পেতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। সেই নিরিখে এই মুহূর্তে শুধুমাত্র তেলঙ্গানাতেই অস্তিত্ব রয়েছে কেসিআর-এর দলের। সেখানে এই মুহূর্তে তাদেরই সরকার।
আরও পড়ুন: Uttarakhand Bus Accident: নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ল বিয়েবাড়ির বাস, নিহত কমপক্ষে ৩২, আহত ২০
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে সরাসরি তিনি বিজেপি এবং সর্বোপরি নরেন্দ্র মোদিকে টেক্কা দিতে চান বলে আগেই একাধিক বার জানিয়েছেন কেসিআর। নিজের বিজেপি বিরোধী অবস্থানও বার বার তুলে ধরেছেন তিনি। মোদি রয়েছেন, এমন সব অনুষ্ঠান এড়িয়ে গিয়েছেন। এমনকি মোদি তেলঙ্গানা সফরে গেলে, অভ্যর্থনা জানাতেও দেখা যায়নি তাঁকে। আবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যাওয়ার সদিচ্ছাও যে নেই, সে কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন বারং বার। এমনকি জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী তৃতীয় জোটের ধারণাও তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত।
সেই তৃতীয় জোটের ধারণার বাস্তবায়নে গত কয়েক মাসে দফায় দফায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি। এ দিনও কেসিআর-এর দলের নয়া নামকরণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী, ডিএমকে সহযোগী টি তিরুমাবালন।
একাধিক রাজ্য়ে দলের শিকড় বিস্তারের কাজ শুরু
তবে অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাই নন শুধু, দেশের কৃষক সংগঠনগুলিকেও পাশে পেতে চেষ্টা-চরিত্র চালাচ্ছেন কেসিআর। সেই নিয়ে কৃষক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে জোটে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অভাব-অভিযোগ, চাহিদার কথা তুলে ধরতেই এমন পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর এ লক্ষ্য সামনে রেখেই বিরাট জনসভার আয়োজন হয়েছে। সেখানে বক্তৃতা করবেন কেসিআর। কারণ ওই দিনেই পূর্বতন কংগ্রেস সরকার পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্যের ঘোষণা করে। শীঘ্রই নয়া নামে দলকে নির্বাচনী ময়দানেও নামাতে চলেছেন কেসিআর। নভেম্বরে তেলঙ্গানায় উপনির্বাচন রয়েছে। এ ছাড়াও গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, দিল্লির নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে ভারত রাষ্ট্র সমিতি। তবে নাম বদলালেও, দলের প্রতীকচিহ্ন একই রাখছেন কেসিআর, যা হল, গাড়ি এবং তাকে ঘিরে থাকা গোলাপি রংয়ের বলয়। আগামী দিনে তেলঙ্গানার বাইরে দলের শিকড় বিস্তারই লক্ষ্য কেসিআর-এর।
উল্লেখ্য, ২০২৪-কে সামনে রেখে একই পন্থা অবলম্বন করেছে মমতার তৃণমূল এবং কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিও। বাংলার বাইরে গোয়া, ত্রিপুরা, অসম, মেঘালয়ে পৌঁছেছে তৃণমূল। দিল্লি, পঞ্জাব, গোয়ার পর গুজরাতেও পা বাড়াচ্ছে আপ।