Mission Mode Hiring: দেড় বছরে ১০ লক্ষ চাকরি! ফাঁকা পদও বহু, প্রতিশ্রুতি রাখবেন মোদি?
Employment Rate: লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে মন্ত্রকগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে। নাম দেওয়া হয়েছে 'মিশন মোড'
ত্রিথেশ নন্দন, নয়াদিল্লি: দেড় বছরে ১০ লক্ষ। সম্প্রতি এমনই একটি লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে মোদি সরকার। ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক মিলিয়ে. চাকরি দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা। সেটা পূরণ করতেই সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) মন্ত্রকগুলিকে বলেছেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে। নাম দেওয়া হয়েছে 'মিশন মোড' (Mission Mode)।
সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য দেখাচ্ছে বেকারত্ব (Unemployment) সমস্যায় ধুঁকছে ভারত। এখনও অর্থনীতি কোভিড-ধাক্কা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কোভিডের (Covid) ধাক্কায় বহু নাগরিক তাঁদের কাজ হারিয়েছিলেন। সেই ছবি এখনও ভয়াবহ। এই সময়ে সারা ভারতে (India) বেকারত্ব একটি বড় সমস্যা। এদিকে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের জন্য বাকি বছর দুয়েকেরও কম সময়। ফলে বেকারত্ব নিয়ে বিরোধীদের সুরও ক্রমশ চড়ছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই কি মোদি সরকারের এই নয়া পদক্ষেপ?
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বার্তা:
১৪ জুন, একটি টুইট করা হয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে। সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী সব মন্ত্রক ও দফতরের মানবসম্পদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। তারপরেই আগামী দেড় বছরের মধ্যে ১০ লক্ষ চাকরির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
PM @narendramodi reviewed the status of Human Resources in all departments and ministries and instructed that recruitment of 10 lakh people be done by the Government in mission mode in next 1.5 years.
— PMO India (@PMOIndia) June 14, 2022
সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রক (Ministry) এবং দফতরকে তাদের ফাঁকা পদ সুনির্দিষ্ট করে বিচার করতে বলা হয়েছে। সেখানে নিয়োগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যেই Union Ministry of Personal Data জানাচ্ছে, গত পাঁচ বছরে UPSC, SSC এবং রেলওয়ে নিয়োগ বোর্ডের অধীনে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ চাকরি দেওয়া হয়েছে।
দেড় বছরে ১০ লক্ষ:
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশমতো ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ লক্ষ চাকরি দেওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাকি ৫৪৮ দিন, আগামী দেড় বছরে প্রতি দিনে চাকরি পাবেন ১৮২৫ জন। আগামী দেড় বছরে প্রতি মাসে চাকরি পাবেন ৫৪ হাজার ৭৪৫ জন।
বিপুল চাকরিপ্রার্থী:
ভারতের মানবসম্পদ (Human resource) বিশ্বের অন্য দেশগুলির কাছে ঈর্ষনীয়। কিন্তু কাজের অভাব হলে সেই মানবসম্পদের কোনও ব্যবহারই হয় না। ভারতের মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৮১ কোটি জনগণের বয়স ৩৫ বছরের নীচে। ১৮ থেকে ২৯ বছরের বয়সসীমা বিচার করলে তা মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ। কিন্তু বেকারত্বের ধাক্কায় সবচেয়ে বেশি ভুগছে এই অংশে নাগরিকরাই। Centre of Monitoring Indian Economy (CMIE) -এর তথ্য বলছে, ২০২২ মে- মাসে দাঁড়িয়ে ভারতের ১৩টি রাজ্যের বেকারত্ব জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি। ভারতের বেকারত্বের গড় ৭.৩ শতাংশ। ওই তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি বেকারত্ব হরিয়ানা ও রাজস্থানে।
ভোটবাক্সের চিন্তা?
ভারতের এই তরুণ অংশ বেকারত্বের জ্বালায় ভুগলে ভোটবাক্সে তার ফল পড়তে বাধ্য। বছর দুয়েকের মধ্যেই লোকসভা (Loksabha) নির্বাচন। তার আগে এই বিপুল পরিমাণ জনগণের সমর্থন নিজের ঝুলিতে টানতেই কি এমন পদক্ষেপ? প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে।
কোথায় কত চাকরি?
দশ লক্ষ চাকরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত পরিমাণ ফাঁকা পদ কি সত্যিই রয়েছে? অর্থমন্ত্রক (Ministry of Finance) থেকে প্রাপ্ত তথ্যে চোখ রাখলে দেখা যাবে ভারতের একাধিক মন্ত্রকে, একাধিক পদে প্রচুর সংখ্যক ফাঁকা পদ রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রুপ এ-তেই ১৬ শতাংশ পদ ফাঁকা। গ্রপ সি-তে সেটা ২১ শতাংশ, সংখ্যায় বিচার করলে প্রায় আট লক্ষ পদ ফাঁকা। মন্ত্রক হিসেবে বিচার করলে রেল ও প্রতিরক্ষা (অসামরিক) ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ফাঁকা পদ রয়েছে। ফাঁকা পদ রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকেও।
আর্থিক উন্নয়নে কতটা জরুরি চাকরি?
কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (CII)-তার রিপোর্টে জানিয়েছে, ২০৪৭ সালের মধ্যে বিপুল লাফ দিতে পারে ভারতের জিডিপি। ২০২২ সালে ভারতের জিডিপি ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০৪৭ সালে পৌঁছতে পারে ৪০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে (এখনকার মূল্য বিচার করলে ৩ হাজার লক্ষ কোটি টাকায়)। কিন্তু তার জন্য একটি শর্ত রয়েছে, যদি ভারতের কর্মক্ষম জনসংখ্যার সবার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায় তাহলেই এই লাফ সম্ভব।
আরও পড়ুন: নাক দিয়ে রক্তপাত, শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ, চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে সনিয়া গাঁধী