(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Sonali Phogat's Death: শরীরে আঘাতের চিহ্ন, ভারী কিছু দিয়ে আঘাত সোনালীকে! বিজেপি নেত্রীর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য
Sonali Phogat Post-Mortem: গোয়ায় সোনালীর মৃত্যু নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছে তাঁর পরিবার। সোনালীর ভাই রিঙ্কু ঢাকা গোয়া পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
নয়াদিল্লি: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বলে জাবা গিয়েছিল প্রথমে। কিন্তু বিজেপি নেত্রী সোনালী ফোগাতের মৃত্যু (Sonali Phogat Death) নিয়ে জলঘোলা থামেনি তাতে। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে শুরু থেকেই দাবি করছিল পরিবার। এ বার ময়নাতদন্তের (Post Mortem Report) রিপোর্টেও উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। সোনালীর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারী এবং ভোঁতা জিনিস দিয়ে তাঁকে আঘাত করা হয়ে থাকতে পারে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। অভিনেত্রী তথা টিকটক তারকা, সর্বোপরি বিজেপি (BJP) নেত্রীর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার তত্ত্ব ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সোনালী ফোগাতের মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে রহস্য
বৃহস্পতিবার গোয়া (Goa) মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের তরফে পুলিশের হাতে পৌঁছনো ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই সোনালীর শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়ার উল্লেখ রয়েছে। তবে কী কারণে সোনালীর মৃত্যু ঘটেছে, তা তদন্ত সাপেক্ষ। সোনালীর মৃত্যুর সঠিক কারণ, রাসায়নিক বিশ্লেষণ, হিস্টোপ্যাথলজি, সেরোলজিক্যাল রিপোর্ট আসা এখনও বাকি।
সোনালীর মরদেহ হাতে পেতে পরিবারের সদস্যরা গোয়া উড়ে যাচ্ছেন। তাঁর ভাই মনিন্দর ফোগাত বলেন, "নতুন করে ময়নাতদন্ত আর করাব না আমরাষ আমরা শুধু এফআইআর দায়ের করতে চেয়েছিলাম। তা হয়েছে। দিদির দেহ নিয়ে আসাই আমাদের লক্ষ্য।" শুরুতে সোনালীর দেহের ময়নাতদন্তই করাতে চায়নি তার পরিবার। কিন্তু গোয়া মেডিক্যাল কলেজের ময়নাতদন্ত হবে জানতে পেরে রাজি হয়।
গোয়ায় সোনালীর মৃত্যু নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছে তাঁর পরিবার। সোনালীর আর এক ভাই রিঙ্কু ঢাকা গোয়া পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, ব্যক্তিগত সচিব সুধীর সাংওয়ান এবং সুধীরের বন্ধু সুখবিনদর মিলে সোনালীকে ধর্ষণ এবং খুন করেছেন। পুলিশকে তিনি জাননা, ২৩ অগাস্ট মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ফোনে বোন, জামাইবাবু এবং মায়ের সঙ্গে কথা বলেন সোনালী। ফোনে নিজের কর্মীদের নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। রিঙ্কুর দাবি, খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে খাইয়ে সুধীর তাঁকে ধর্ষণ করেছেন এবং ভিডিও রেকর্ড করে ব্ল্যাকমেইল করছেন বলে ফোনে জানান সোনালী।
শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সোনালীর ভিডিও ছেড়ে দেবেন বলেও সুধীর হুমকি দিয়েছিলেন, এমন দাবিও করেছেন রিঙ্কু। তাঁর অভিযোগ, সোনালীর রাজনৈতিক এবং অভিনয় জীবন শেষ করে দেবেন বলে হুমকি দেন সুধীর। সোনালীর ফোন, সম্পত্তির কাগজপত্র, এটিম কার্ড এমনকি বাড়ির চাবিও আটকে রাখেন সুধীর। সোনালীর এক আত্মীয় বলেন, “সন্দেহ নয়, আমরা জানি ওঁকে ধর্ষণ করা হয়।”
মঙ্গলবার গোয়া পুলিশ সোনালীর মৃত্যুতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে। অসুস্থ বোধ করায় গোয়ার সেন্ট অ্যান্টনি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সোনালীকে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। তার পরই গোয়া পুলিশের তরফে মামলা দায়ের করা হয়। আনজুনা থানার ইনস্পেক্টর জেনারেল ওমবীর সিংহ বিষ্ণোই বলেন, "মৃতার ভাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। ৩০২ ধারায় (খুন) এফআইআর দায়ের করেছি আমরা।"
হরিয়ানার হিসারে জন্ম সোনালীর। স্কুলের গণ্ডি পেরোতে না পেরোতে বিয়ে দিয়ে দেয় পরিবার। কিন্তু পরিবারে যে স্বাধীনতা পাননি, বিয়ের পর স্বামীর কাছে সেই স্বাধীনতা পেয়েছিলেন সোনালী। বিয়ের পরই পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যান সোনালী। অভিনয়, মডেলিং, টিকটক, রাজনীতি, সব কিছুই স্বামীর জন্য চালিয়ে যেতে পেরেছিলেন তিনি। 'এক মা জো লাখোঁ কে লিয়ে বনি আম্মা’ সিরিয়ালে অভিনয় করেন সোনালী। রিয়্যালিটি শো ‘বিগ বস’-এও অংশ নেন। হরিয়ানায় বিজেপি-র মহিলা মোর্চার প্রধান নিযুক্ত হন। দিল্লি, চণ্ডীগড়, পঞ্জাব এবং ছত্তিশগড়েও দলের মহিলা শাখার দায়িত্ব সামলান।
গোয়ায় অস্বাভিক মৃত্যু সোনালীর
২০১৬ সালে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় সোনালীর স্বামীর। তাঁদের এক মেয়ে রয়েছে যশোধরা। সম্প্রতি গোয়া গিয়েছিলেন সোনালী। সোমবার রাতে সেখানেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। রাতেই মৃত্যু হয়। স্বাধীনচেতা মনোভাব, খোলামেলা জীবনযাপন নিয়ে প্রতি পদে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সোনালীকে। তবে নিজের শর্তেই বাঁচতে চেয়েছিলেন সোনালী।