Caste Census: জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিতে সুর চড়াল তৃণমূল, পাল্টা তোপ বিজেপির
Tmc on Caste Census: প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দিল্লিতে জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিতে সুর চড়ালেন তৃণমূল নেতারা। একই সুর অন্য বিরোধীদেরও।
বিজেন্দ্র সিংহ, দীপক ঘোষ ও মলয় চক্রবর্তী, দিল্লি ও কলকাতা: দেশে জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিতে সরব তৃণমূল। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দিল্লিতে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এই দাবিতে সুর চড়ালেন তৃণমূল নেতারা। জাতিভিত্তিক জনগণনার নিয়ে মোদি সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল, একই দাবিতে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরাও। পাল্টা তোপ বিজেপির।
জাতি ভিত্তিক জনগণনার দাবি:
আর্থিক বৈষম্য বাড়ছে ভারতে। বিভিন্ন সমীক্ষা রিপোর্টে উঠে এসেছে এই তথ্য। এরই সঙ্গে জোরালো হচ্ছে জাতিভিত্তিক জনগণনার (Caste Census) দাবি। এর আগে জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিতে সুর চড়িয়েছে নীতীশ কুমারের জেডিইউ (JDU), লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি (RJD), জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডি (RLD), সিপিআইএম (CPIM), আম আদমি পার্টি (AAP)। এবার একই দাবিতে সরব তৃণমূলও। রবিবার দিল্লিতে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংয়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সামাজিক ন্যায় সম্মেলনের আয়োজন করে রাষ্ট্রীয় লোক দল। সেই মঞ্চ থেকে জাতিভিত্তিক জনগণনার জোরাল দাবি তোলার পাশাপাশি মোদি সরকারের কড়া সমালোচনা করেন বক্তারা।
বিরোধীদের দাবি:
বিরোধীদের দাবি, ১৯৩১ সালে শেষবার জাতিভিত্তিক জনগণনা হয়েছিল। দ্বিতীয় ইউপিএ (UPA) জমানায় সমীক্ষা হলেও, জাতিভিত্তিক কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়নি। ২০১৮-র সেপ্টেম্বরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সংসদে জাতিভিত্তিক জনগণনার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও, তারপরে কাজ আর এগোয়নি। বিরোধীদের অভিযোগ, এর ফলে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ। বিজেপির জোট শরিক নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড দীর্ঘদিন ধরেই জাতিভিত্তিক জনগণনার পক্ষে সরব। গতবছর অগাস্টে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করে বিহার সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। সঙ্গে ছিলেন RJD নেতা ও বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবও। এই প্রেক্ষাপটেই বিরোধী জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবিতে সরব হতেই, পাল্টা সুর চড়িয়েছে বিজেপি।
সরব তৃণমূল:
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, 'মণ্ডল কমিশন ৫২ শতাংশ ওবিসি পেয়েছিল, কাস্ট সেনসাস হওয়া উচিত এবং তার পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়া উচিত যাতে মানুষ তা জানতে পারেন, নাগরিকদের মধ্যে কোন জাতির কত সংখ্যা, আসলে তারা মনুবাদী ব্যবস্থা কার্যকর করতে চাইছে, তাদের কাছে ইস্যু এখন অযোধ্য, কাশী এবং মথুরা।' তিনি আরও বলেন, 'ব্রিটিশ জমানায় নিয়মিত জাতি ভিত্তিক জনগণনা হত, কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে তা আর হয়নি, রাজনাথ সিংহ সংসদে আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি, সরকার সবার বিকাশের কথা বলে, কিন্তু সবার সর্বনাশ করছে জাতিভিত্তিক জনগণনা না করে।'
পাল্টা সরব বিজেপি:
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'ভারতবর্ষতে একটা জাতির অস্তিত্ব রয়েছে, তা কংগ্রেস মনে করে না। তাই তাদের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেস এমন কথা মনে করছে।'
সিএএ (CAA), এনআরসি (NRC), এনপিআর (NPR) বিতর্কের আবহেই জাতিভিত্তিক জনগণনার দাবি ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে ক্রমশ চাপ বাড়ছে মোদি সরকারের ওপর, মনে করেছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: পঞ্জাবে তারকা কংগ্রেস নেতাকে গুলি করে খুন, এক দিন আগেই কমানো হয় নিরাপত্তা