Kazakhstan Plane Crash: বিমান ভেঙে পড়েনি, হামলা চালিয়ে নামানো হয়েছে? কাজাখস্তানের দুর্ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি
Plane Crash News: বড়দিনের সকালে বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনি অভিমুখী যাত্রীবাহী আজেরবাইজান এয়ারলাইন্সের বিমানটি ভেঙে পড়ে কাজাখস্তানে।
নয়াদিল্লি: যাত্রীসমেত বিমান ভেঙে পড়ে, নাকি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সেটিকে নামানো হয়, গত কয়েক দিন ধরেই বিতর্ক চলছে। সেই আবহেই মুখ খুলল আজেরবাইজান এয়ারলাইন্স। কাজাখস্তানে ভেঙে পড়ায় 'বহিরাগত হস্তক্ষেপ' রয়েছে বলে দাবি করল তারা। আজেরবাইজান এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, বাইরে থেকে বাস্তবিক এবং প্রযুক্তিগত হস্তক্ষেপের দরুণই বিমানটি ভেঙে পড়ে। (Kazakhstan Plane Crash)
বড়দিনের সকালে বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনি অভিমুখী যাত্রীবাহী আজেরবাইজান এয়ারলাইন্সের বিমানটি ভেঙে পড়ে কাজাখস্তানে। বিমানে সওয়ার ৬৭ জন যাত্রীর মধ্যে ৩৮ জন মারা যান ওই দুর্ঘটনায়। প্রতিকূল আবহাওয়া এবং যান্ত্রিক গোলযোগের জেরে দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রথমে তত্ত্ব উঠে আসছিল। হামলার তত্ত্বও উঠে আসছিল পাশাপাশি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মাঝে পড়ে বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগ ওঠে। (Plane Crash News)
ভাগ্যক্রমে বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফের এক যাত্রীও মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মাঝ আকাশে হঠাৎ প্রচণ্ড জোরে শব্দ হয়। মনে হয়েছিল মাঝ আকাশেই টুকরো টুকরো হয়ে যাবে বিমানটি। বিমানটি যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তা নিশ্চিত ভাবে বোঝা যায়। নেশাগ্রস্তের মতো আচরণ করছিল বিমানটি। আগের মতো পরিস্থিতি আর ছিল না।
আর এক বিমানযাত্রী জানিয়েছেন, পর পর দু'বার প্রচণ্ড শব্দ হয়। এক বিমানকর্মী পিছনের দিকে সরে যেতে বলেন তাঁকে। প্রচণ্ড জোরে শব্দ হওয়ার অক্সিজেন মাস্কেও সমস্যা হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন বেঁচে ফেরা যাত্রীরা। সেই আবহেই বহিরাগত হস্তক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছে আজেরবাইজান এয়ারলাইন্স। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
কাস্পিয়ান সাগরের তীরে ভেঙে পড়ে আজেরবাইজান এয়ারলাইন্সের J28243 বিমানটি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে সেখানকার আকাশপথ যাত্রীবাহী বিমান চলাচলের জন্য বন্ধ রয়েছে। মাঝ আকাশে যেখানে গতিপথ পরিবর্তন করে বিমানটি, জরুরি অবতরণের আবেদন জানায়, সেখানেই গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনীয় ড্রোনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল রাশিয়া। ভুল করে তারাই বিমানটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে বলে দাবি উঠছে। বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে আকাশপথে ওই অঞ্চলে যদি ভুল করে ঢুকেও পড়ে কোনও বিমান, সত্বর তাদের বেরিয়ে যাওয়ার কথা। নইলে কোনও না কোনও ক্ষেপণাস্ত্র এসে আঘাত হানতে পারে। দুর্ঘটনার পর আপাতত রাশিয়ামুখী বিমান পরিষেবা বন্ধ রেখেছে আজেরবাইজান এয়ারলাইন্স।
সেই আবহেই ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের আধিকারিক আন্দ্রি কোভালেঙ্কো দাবি করেন, রাশিয়াই বিমানটিকে নামিয়েছে। তাঁর বক্তব্য ছিল, "গ্রোজনির আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়া উচিত ছিল রাশিয়ার, যা তারা করেনি। রাশিয়াই বিমানটির ক্ষতি করে। গ্রোজনিতে নামালে যাও বা প্রাণ বাঁচত যাত্রীদের, তা না করে কাজাখস্তান পাঠানো হয় বিমানটিকে।"
ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহাও মুখ খোলেন। তাঁর দাবি, রুশ সংবাদমাধ্যম ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। রাশিয়াই বিমানটিকে কাস্পিয়ান সাগর পেরোতে বাধ্য করে। নিজেদের অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করে তারা। বিমানের কেবিনের যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে স্মোকিং গান দেখতে পাওয়া গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। বিমান দুর্ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন তিনি, রাশিয়াকে এর দায় স্বীকার করতে হবে বলে দাবি করেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গোড়াতেই বিমান দুর্ঘটনার জন্য শোকপ্রকাশ করেন। সমবেদনা জানান নিহতদের পরিবার-পরিজনদের। রাশিয়া জানায়, রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বিমানটি ভেঙে পড়েছে বলে মিথ্যে চাউর করা হচ্ছে। শুক্রবার আবার রাশিয়ার তরফে বিমান দুর্ঘটনার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করা হয়। রাশিয়ার আকাশ পরিবহণ সংস্থার প্রধান দিমিত্রি ইয়াড্রভের দাবি, ওই অঞ্চল থেকে বসতি এলাকায় ড্রোন হামলা চালাচ্ছিল ইউক্রেন। তিনি জানিয়েছেন, গ্রোজনিতে দু'বার অবতরণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় বিমানটি। এর পরই কাজাখস্তানের আকতাউ অভিমুখে রওনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। ঘটনার সময় ঘন কুয়াশাও ছিল বলে দাবি করেছেন তিনি।