Buddhadeb Dasgupta Death: "ভীষণ শকড", বললেন তরুণ মজুমদার, "সকলের চেয়ে আলাদা", প্রতিক্রিয়া অপর্ণা সেনের
প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
![Buddhadeb Dasgupta Death: Buddhadeb Dasgupta Death Celebrity film personalities reactions Buddhadeb Dasgupta Death:](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2021/06/10/c785e2434160970c7969ef3e34cbe54f_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে মৃত্যু। বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। কিডনির সমস্যা থাকায় গত কয়েকদিন ধরে ডায়ালিসিস চলছিল। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় মৃত্যু বলে পরিবার সূত্রে খবর।
তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করলেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতের একাধিক বিশিষ্টজনেরা। বর্ষীয়ান পরিচালক তরুণ মজুমদার বলেন, "খুবই বড় ক্ষতি। হঠাৎ শুনে ভীষণ শকড হয়ে গেছি।"
পরিচালক অপর্ণা সেন তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, উনি আমার খুব প্রিয় পরিচালক ছিলেন। আমি যত পরিচালক দেখেছি, তার মধ্যে সবচেয়ে অন্যরকম। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর ছবি আমার কাছে কবিতার মতো লাগত। ভীষণ মিস করব তাঁকে। খুব ভুগছিলেন। খুব খারাপ লাগছে, এভাবে তিনি চলে গেলেন। এই লকডাউনের জন্য ঠিক সম্মানটুনকুও জানানো যাবে না। যেমনটা সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ধটক, মৃণাল সেনের ক্ষেত্রে হয়েছিল।
নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন বলেন, ওনার ছবিতে কখনও অভিনয় করিনি। কিন্তু, ওনার ছবি দেখেছি। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ধটক, মৃণাল সেন, তপন সিংহ, তরুণ মজুমদার -- প্রভৃতি এঁদের ছবি দেখেছি। পরে, উৎপলেন্দু চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর কাজ দেখেছি। গৃহযুদ্ধ ছবির কথা খুব মনে আছে। চরাচর ছবির কথা মনে পড়ে। বহু শিল্পীকে তিনি তুলে এনেছিলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। যে ধরনের ছবিতে উনি বিশ্বাস করতেন, সে ধরবনের ছবি চিরকাল বানিয়ে গিয়েছেন। অনেক সময় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে, যে এঁরা দর্শকদের কথা ভেবে ছবি করেন না। কিন্তু, তিনি নিজের যা বিশ্বাস করতেন, তেমন ছবিই বানাতেন। যে কারণে, পরবর্তীকালে, খুব বেশি ছবি তৈরি করেননি তিনি।
চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার পছন্দের পরিচালক। তিনি ছবির একটা আলাদা ভাষা তৈরি করেছিলেন। তাঁর ছবি থেকে অনেক কিছু শিখেছি।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর মৃত্যুতে বাংলা সিনেমার এক সোনালি অধ্যায়ের অবসান হল। ‘দূরত্ব’, ‘নিম অন্নপূর্ণা’, ‘গৃহযুদ্ধ’, ‘ফেরা’, ‘বাঘ বাহাদুর’, ‘তাহাদের কথা’, ‘চরাচর’, ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’, ‘কালপুরুষ’, ‘উত্তরা’-র মতো বহু ছবি পরিচালনা করেছেন তিনি। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর শেষ বাংলা ছবি ‘উড়োজাহাজ’ মুক্তি পায় ২০১৮-য়। তাঁর পরিচালনায় নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি অভিনীত ‘আনোয়ার কা আজব কিকসা’ ছবিটি ২০২০-তে মুক্তি পায় ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ইরোজ নাওতে।
১৯৪৪ সালে ১১ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়ার আনারা গ্রামে জন্ম বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর। বাবা ছিলেন রেলের চিকিত্সক। তাই ছোটবেলা কেটেছে বিভিন্ন জায়গায়। অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত তাঁর কর্মজীবন শুরুও করেছিলেন অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে। কিন্তু সিনেমার প্রতি গভীর ভালবাসা ছিল তাঁর। বিশ্বচলচ্চিত্রের ইতিহাস তাঁকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে সিনেমার সঙ্গেই নিজের জীবনকে জুড়ে নিয়েছিলেন। ১৯৬৮-তে ‘দ্য কন্টিনেন্ট অফ লাভ’ নামে ১০ মিনিটের তথ্যচিত্র বানান বুদ্ধদেব। তারপর ১৯৭৮-এ মুক্তি পায় তাঁর পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘দূরত্ব’। জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে সেই ছবিই জিতে নেয় সেরা বাংলা ছবির সম্মান।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত পরিচালিত পাঁচটি ছবি সেরা ছবি হিসেবে জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছে। উত্তরা এবং স্বপ্নের দিন ছবি দু’টির জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। বহু আন্তজার্তিক চলচ্চিত্র উৎসবেও সম্মানিত হয়েছেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)