Park Street Crowd : বড়দিনে 'জনপ্লাবন' পার্কস্ট্রিটে, শোরগোল নেটদুনিয়ায়
Social Media on Park Street Crowd Gathering : হই-হুল্লোড়ের মাঝেই দেখা যায় কোভিড বিধি লঙ্ঘনের সেই চেনা ছবি। কেউ অবলীলায় ঘুরেছেন মাস্ক ছাড়া। কোথাও ঘুচে যায় সোশাল ডিসট্যান্সিং...
কলকাতা : "যতদূর চোখ যায় শুধু করোনা আর করোনা"। ভাবছেন এ আবার কী মস্করা ! একদমই মজা করা হচ্ছে না। এ এক নেটাগরিকের প্রতিক্রিয়া। বড়দিনে পার্কস্ট্রিটে 'জনসমুদ্র' দেখে এমনই মন্তব্য করেছেন তিনি। শুধু তিনি নন, পার্কস্ট্রিটের ভিড় নিয়ে কার্যত শোরগোল পড়ে গেছে নেট দুনিয়ায়। এই প্রতিবেদনে একবার চোখ রাখলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
প্রতিবেদন শুরু যাঁর লাইন ধরে, প্রথমে তুলে ধরা যাক সেই অভিশ্বেতা ঘোষ-কে দিয়েই। ফেসবুকে তিনি বিদ্রুপের ছলে লিখছেন, "যতদূর চোখ যায় শুধু করোনা আর করোনা, ভগবান কি এদের ক্ষমা করবেন না ? দে ব্যারিকেড ভেঙে..."
কোনও কোনও নেটাগরিক তুলে ধরেছেন স্কুল খোলার প্রসঙ্গ। সোশ্যাল মিডিয়ায় বসু শ্রীরূপার প্রতিক্রিয়া, "তৃতীয় ঢেউকে সুস্বাগতম। প্রতিটি উৎসব আসলেই মনে হয় স্কুল খোলার সম্ভাবনা চলে গেল, এই সবই করুক, লেখাপড়া জলাঞ্জলিতে যাক।"
একই প্রসঙ্গে লিখেছেন Sourav Ghosh Srv। তাঁর প্রতিক্রিয়া, "স্কুল, কলেজ খুললেই তখন করোনা ভাইরাস আক্রমণ করে। জেরুজালেমে খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তক যীশুর জন্মদিন পালন করলে করোনা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হয় না।"
এই পরিস্থিতিতে অনলাইন পড়াশোনাকে কটাক্ষের আকারে তুলে ধরেছেন Sany। তাঁর কটাক্ষ, "বন্ধু এইভাবে পাশে থেকো। গ্র্যাজুয়েশনটা অললাইনেই কমপ্লিট করে দিও।"
করোনা আবহে এই ভিড় দেখে অধিকাংশেরই 'চক্ষু চড়কগাছ'। তাই কেউ কেউ মজাও করেছেন। অমিত সামন্ত লিখছেন, "পার্ক স্ট্রিটে বহিরাগত ওমিক্রন পদপিষ্ট হয়ে মৃত.... ধর্ম যার যার, করোনা সবার"।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে বিষয়টা তুলে ধরার প্রসঙ্গ টেনে কেউ কেউ কটাক্ষও করেছেন। রাজীব মেহরা-র কটাক্ষ, "হু-কে মেসেজ করে জানান কীভাবে ওমিক্রনের মোকাবিলা করতে হয়"।
নেটাগরিক শুভাশিস রায়ের বিদ্রুপ,
"বাঙালি : মেরি খ্রিস্টমাস
যমরাজ : আমরা এখন এন্ডগেমে আছি"।
উঠে এসেছে রাজনৈতিক সমাবেশের প্রসঙ্গও। রাজ্য-কে একহাত নিয়ে শুভজিৎ দে লিখছেন, "বিরোধীরা মিছিল করলেই যত সমস্যা সরকারের। আর খ্রিস্টমাসের জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।"
সৌমিক মাইতির কটাক্ষ, "শারীরিক দূরত্ব মানতে মানতে ক্লান্ত, সামাজিক জমায়েতে চাঙ্গা"।
শতাব্দী দাস-এর প্রতিক্রিয়া, "আমার মাথায় ঢোকে না আসলে পার্কস্ট্রিটে কী দেখতে যায় ? আলো দেখতে হলে তো এর থেকে দীপাবলি ও দুর্গাপুজো-তে বেশি সুন্দর আলোর ডিজাইন দেখা যায়। আমি গিয়ে যা দেখলাম, আসলে সেল্ফি তোলার জন্যই যায়। যতই খাই ঝিঙের ঝোল, কেত মেরে পার্কস্ট্রিটে সেল্ফি তোল।"
আরও পড়ুন ; বড়দিনের উৎসবে গা ছাড়া মনোভাব রাজ্যজুড়ে, সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা
গতকাল হই-হুল্লোড়ের মাঝেই দেখা যায় কোভিড বিধি লঙ্ঘনের সেই চেনা ছবি। কেউ অবলীলায় ঘুরেছেন মাস্ক (Mask) ছাড়া। কোথাও ঘুচে যায় সোশাল ডিসট্যান্সিং (Social Distancing)। সবমিলিয়ে সাল শেষের আনন্দের মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন। উৎসবের মরসুমের মাঝেই ছড়াচ্ছে ওমিক্রন (Omicron) সংক্রমণ। এতেই বাড়ছে উদ্বেগ। কারণ করোনা (Corona) আতঙ্ক থাকলেও ঢিলেমি দেখাচ্ছেন অনেকেই।
এই অবস্থায় চিকিৎসকদের (Doctors) সতর্কবাণী, এখনই সাবধান না হলে আরও বাড়তে পারে বিপদ। রোগ দমনে কড়া দাওয়াই দিতে হবে প্রশাসনকে। ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সৌতিক পাণ্ডা বলেছেন, 'এভাবে বেড়ানো উচিত নয়, এতে বিপদ আরও বাড়বে।' সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অর্পিত সাহা বলেছেন, 'যেভাবে ঘোরাফেরা হচ্ছে তাতে বাড়বে, সতর্ক হওয়া দরকার।'