(Source: Poll of Polls)
Engineer Death ছেলেকে ফোনে বাবা বলেছিলেন, 'গাড়ি করে ফিরিস', ফেরা হল না ঋষভের
বিকেলে অফিস থেকে বেরিয়েও ফরাক্কার বাড়িতে ফোন করেছিলেন ঋষভ। বলেছিল, খুব বৃষ্টি হচ্ছে। তখনও কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি, সেটাই শেষ কথা। পথে এভাবে ওঁত পেতে রয়েছে মৃত্যু।
কলকাতা ও মুর্শিদাবাদ: প্রায়ই সকালে পরিবারের সঙ্গে কথা হতো। মঙ্গলবারও ফোনে মায়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কী খেয়েছে, কী করেছে সবকিছু নিয়ে মায়ের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন ঋষভ।
এমনকী, বিকেলে অফিস থেকে বেরিয়েও ফরাক্কার বাড়িতে ফোন করেছিলেন ঋষভ। বলেছিলেন, খুব বৃষ্টি হচ্ছে। তখনও কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি, সেটাই শেষ কথা। পথে এভাবে ওঁত পেতে রয়েছে মৃত্যু।
সন্ধেবেলা টিভির পর্দা ও পরে ফোনে মৃত ঋষভের বাবা-মা জানতে পারলেন, তাঁদের ছেলে আর নেই। মাত্র এক-দু ঘণ্টার মধ্য়েই ফরাক্কার এনটিপিসি এলাকার বাসিন্দা মণ্ডল পরিবারে নেমে আসে অন্ধকার, স্তব্ধতা।
গতকাল সন্ধ্যায় রাজভবনের সামনে জলমগ্ন রাস্তায় মৃত্যু হয় তরুণ ইঞ্জিনিয়ার ঋষভের। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তরুণের।
মৃতের বাবা মনোজকুমার মণ্ডল বললেন, 'টিভিতে দেখছিলাম। তারপর আমাকে (ফোনে) জিজ্ঞাসা করল, ঋষভ আছে বাড়িতে? আমি বললাম, না। ও কী করে, কোথায় থাকে... সব জানালাম। তখন আমাকে বলল, শক লেগেছে। তারপর খবর পেলাম, সব শেষ।'
তিনি যোগ করেন, 'আজ সকালে কথা হয়েছিল মায়ের সঙ্গে। কী খেল, সব জানিয়েছে মাকে। এমনকী বিকেলেও কথা হয়েছিল। ঋষভ বলল, খুব বৃষ্টি হচ্ছে। আমরা বললাম, গাড়ি করে ফিরিস।'
পেশায় ইঞ্জিনিয়র এই যুবক কলকাতার হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়ামে কর্মরত ছিলেন। মঙ্গলবার সকালে এবং বিকেলে অফিস থেকে বেরনোর পরও বাড়িতে ফোন করেছিলেন ঋষভ। তারপরই ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা।
চিরদিনের মতো বাবা-মাকে ছেড়ে চলে গেল একমাত্র ছেলে। টেলিভিশনে সেই খবর দেখা মাত্রই, কান্নায় ভেঙে পড়ে ফরাক্কার এনটিপিসি আবাসনের মণ্ডল পরিবার।
মঙ্গলবার বিকেলের টানা বৃষ্টিতে, রাজভবনের নর্থ গেটের সামনে হাঁটু সমান জল জমে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃষ্টি থামার পর সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ জমা জলের মধ্যেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ঋষভ। তখনই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, চোখের সামনে দেখলাম ওই ছেলেটা পড়ে গেল। আমি বাকিদের বললাম। কিন্তু, সাহস করে যেতে পারিনি। প্রাণের ভয় সকলের আছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎই একটি লাইটপোস্টের পাশে পড়ে গিয়ে ছটফট করতে থাকেন তিনি। তারপরই সব শেষ। তাঁদের দাবি, লাইটপোস্টের খোলা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
খবর পাওয়া মাত্রই সিইএসসি-র কর্মীরা এসে লাইটপোস্টের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেন। যদিও, বিদ্যুৎস্পৃষ্টের অভিযোগ মানতে নারাজ সিইএসসি। সেখানে কোনও খোলা তার ছিল না বলে দাবি করেন তাঁরা।
মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে এফআইআর-এর নির্দেশ দেন ফিরহাদ হাকিম।