TMC : "বিজেপিকে হারাতে মমতাই সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য মুখ", ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বার্তা তৃণমূলের
Mamata Banerjee : লোকসভার ১৮৬টি আসনে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের সরাসরি লড়াই। সেখানে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মোদি বিরোধী জোট কি কখনও তৈরি হওয়া সম্ভব ?
আশাবুল হোসেন, দীপক ঘোষ ও উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : বিজেপিকে হারাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য এবং অভিজ্ঞ মুখ। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক থেকে এই বার্তাই দিল তৃণমূল। ঘোষণা করা হল, দলের ওয়ার্কিং কমিটির পরবর্তী বৈঠক হবে দিল্লিতে। যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিরোধী ঐক্যে ধাক্কা দেওয়ার দায় তৃণমূলের ওপর চাপাচ্ছে বাম ও কংগ্রেস।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, বিজেপিকে হারানোর জন্য মমতাদি ইজ দ্য টলেস্ট, মোস্ট ক্রেডিবল, মোস্ট এক্সপিরিয়েন্সড। উনি ৩ বারের মুখ্যমন্ত্রী শুধু নন, ৭ বারের সাংসদও।
নরেন্দ্র মোদির বিরোধিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র বিকল্প মুখ। কালীঘাটে তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ফের এই বার্তা দিল তৃণমূল। সনিয়া গান্ধী-রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বকে তৃণমূল যে মানছে না, তা আরও স্পষ্ট করে দিল তারা। নিজেদের বিজেপি বিরোধী প্রধান দল হিসাবে তুলে ধরতে জাতীয়স্তরে জোরাল বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল তৃণমূল নেতৃত্ব।
সাম্প্রতিককালে গোয়া, হরিয়ানা, দিল্লি, অসম, ত্রিপুরা, উত্তরপ্রদেশ, মেঘালয়ে- কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ, বিধায়ক, বিক্ষুব্ধ নেতাদের দলে টেনে, জাতীয় স্তরে নিজেদের ছড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছে তৃণমূল।
ইডির জিজ্ঞাসাবাদ থেকে বেরোনোর পর থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন, তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কংগ্রেসের প্রতি আক্রমণাত্মক মনোভাব এবং সম্প্রতি দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের পর সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখা করতে না যাওয়ার মধ্যে দিয়ে, নিজেদের কড়া অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে তৃণমূল। এবার বিভিন্ন প্রদেশ থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নেতাদের কালীঘাটে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে ডাকলেন তৃণমূল নেত্রী। আর বৈঠক থেকে বেরিয়ে তাঁরা স্পষ্ট করে দিলেন, এবার তৃণমূল চেষ্টা করবে জাতীয় স্তরে প্রধান বিরোধী হিসাবে নিজেদের তুলে ধরার।
প্রাক্তন সাংসদ ও তৃণমূল নেতা পবন বর্মা বলেন, বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় স্তরে দলকে সংগঠিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজকে দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে বোঝা যাচ্ছে বিজেপির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তৃণমূল সেই লড়াই লড়তে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই হবে। এর জন্য পার্টি যা যা করার করবে।
ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, পরের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক দিল্লিতে হবে, তৃণমূল অল ইন্ডিয়া পার্টি ।
পাল্টা তৃণমূল বিরোধীদের প্রশ্ন, যে দলের বাংলার বাইরে থেকে লোকসভার একজন সাংসদও নেই, তারা মুখে বললেও, বাস্তবে প্রধান বিরোধী দল হবে কোন অঙ্কে ?
লোকসভার ১৮৬টি আসনে বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের সরাসরি লড়াই। সেখানে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে মোদি বিরোধী জোট কি কখনও তৈরি হওয়া সম্ভব ? কংগ্রেসের থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরত্ব তৈরি করছে তৃণমূল । তাঁদের লক্ষ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধান মুখ হিসাবে তুলে ধরা। অর্থাৎ বিরোধী ঐক্যে ভেঙে চুরমার। এনিয়ে কটাক্ষের সুর শোনা গেল বিজেপির গলায়। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ওটা কংগ্রেস আর তৃণমূলের পারিবারিক ব্যাপার, কখনও কাছে, কখনও দূরে।
এই পরিস্থিতি মঙ্গলবারই মুম্বই যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সফরে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী ও শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকর এবং NCP প্রধান শরদ পওয়ারের সঙ্গে মমতার বৈঠক হওয়ার কথা।