টম্যাটো ১০০, ৬০ টাকার লঙ্কাও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে! লক্ষ্মীপুজোর আগে আগুন বাজার
টম্যাটো ১০০, ৬০ টাকার লঙ্কাও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে! লক্ষ্মীপুজোর আগে আগুন বাজার
কলকাতা: টম্যাটো ১০০ টাকা। ৬০ টাকার লঙ্কাও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। ২০০ টাকার উপর মুরগির মাংস। অগ্নিমূল্য মাছ-সর্ষের তেল। উৎসবের মরশুমে হাসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের।এর জন্য সরকারকেই দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ।
গড়িয়াহাট বাজারের এক ক্রেতা বলছেন, যাতে হাত দিচ্ছি তাতেই আগুন। কী কিনব বুঝতে পারছি না। পেট্রোল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে আগেই। কলকাতায় পিছু পিছু সেই পথে যাচ্ছে ডিজেলও। এরইমধ্যে মধ্যে চড়া সব্জি, মাছ-মাংসের দাম। এই পরিস্থিতির মধ্যে কোনওরকমে কেটেছে দুর্গাপুজো। সামনে আবার ধনদেবীর আরাধনা।
কিন্তু টাকা পয়সার কি আদৌ কোনও দাম আছে? সবজি থেকে মাছ-মাংস, যেভাবে সবকিছুর দাম বেড়েছে, তাতে হাত দিলেই ছ্যাঁকা খাচ্ছেন মধ্যবিত্তরা। মাস খানেক আগেও, যে গড়িয়াহাট বাজারে
৬০-৮০ টাকা কেজি ছিল লঙ্কার দাম। তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। টম্যাটো ১০০ টাকা। পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। পটলের কেজি ছিল ৪০ টাকা, তা এখন বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। ৪০ টাকার ঢ্যাঁড়স কিনতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দিয়ে।
ঝিঙের দামও একই। ক্যাপসিকাম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে। ৩০ টাকার গাজরের দাম এখন ৫০ টাকা। বিনের দাম দ্বিগুণ ছাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। ৫০-৬০ টাকার বেগুন কিনতে হচ্ছে ৭০-৮০টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন বৃষ্টি হচ্ছে, জলের নীচে খেত। তাই দাম বেশি। শুধু কী সব্জি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাছ-মুরগির মাংসের দামও। মাস খানেক আগেও কাটা রুই-কাতলা যেখানে, প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, সেখানে এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
ছোট চিংড়ি ৩০০ টাকা। মাঝারি সাইজের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। গত মাসে যা পাওয়া যাচ্ছিল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়।
ট্যাঙরা, পার্শে, পাবদা, ভেটকি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিতে। আর মুরগির মাংস, ডবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে এক্কে ২৩০-এ পৌঁছে গেছে। পোলট্রির মুরগির ডিম প্রতি পিস সাড়ে ৬ টাকা।
গড়িয়াহাট বাজারের মাংস বিক্রেতা, পেট্রোলের দাম বাড়ছে। মুরগির খাবারের দাম বাড়ছে। ২৩০-এর নীচে দিতে পারব না। সর্ষের তেলের দাম কমারও কোনও লক্ষ্মণ নেই। এক লিটারের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২২০ টাকায়। অর্থাৎ, পেট ভরাতে নাভিশ্বাস উঠছে মধ্যবিত্তের। ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনের বাসিন্দা গৌরী দত্ত।
মূল্যবৃদ্ধির ঝাঁঝে প্রাণ ওষ্ঠাগত সাধারণ মানুষের। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরেও সব্জির দাম বাড়ে, এবছর বেশি বেড়েছে। অর্থনীতির দিক থেকে টাকার জোগান বাড়াতে ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দিতে বলছে, টাকার যোগান বাড়ছে, তার জন্য মূল্যবৃদ্ধি করছেন।
করোনায় কারও চাকরি গেছে। কারও বেতন কাটছাঁট হয়েছে! সংসার চালানোই দায়। এরইমধ্যে পেট্রোল, ডিজেল থেকে রান্নার গ্যাস,সব কিছুর দাম হু হু করে বাড়ছে। সব্জি থেকে মাছ, মাংস.. ছোঁয়ায় দায়! কিন্তু, এত মূল্যবৃদ্ধি? এর সুরাহা কী? কোনও সরকারের কাছে কোনও উত্তর নেই।