'সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকের নাম ঘোষণায় ধর্মীয় পরিচয় কেন?' বিক্ষোভ শিক্ষা সংসদের সামনে
ঘটনায় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
কলকাতা: উচ্চমাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকের নাম প্রকাশের সময়ে কেন ধর্মীয় পরিচয় উল্লেখ করা হল? বৃহস্পতিবার ফলপ্রকাশের দিন সংসদ সভাপতি মুহুয়া দাসের বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। বক্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সামনে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ।
ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় সল্টলেকের ভবন চত্বরে। সংসদ সভাপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। থামাতে গেলে এ দিন পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল প্রকাশিত হয়েছে ২০২১-এর উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে ফলাফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। সেখানে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজা মনীন্দ্রচন্দ্র গার্লস হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রুমানা সুলতানার কথা বলতে গিয়ে 'মুসলিম মেয়ে' শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
গতকাল ফলাফল প্রকাশের সময় মহুয়া দাস বলেছিলেন, 'যিনি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন, একা। এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন। কোনও র্যাঙ্ক বলছি না, সর্বোচ্চ নম্বর। সর্বোচ্চ নম্বর এককভাবে পেয়েছেন একজন মুসলিম কন্যা। মুসলিম। মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে একজন মুসলিম লেডি, গার্ল। তিনি এককভাবে ৪৯৯ সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন।' আর তাতেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এর পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় তরজা।
অনেকেই অভিযোগ তোলেন 'কেন সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত ছাত্রীর ধর্মীয় পরিচয় উল্লেখ করা হল'! শুরু হয় দফায় দফায় তর্ক-বিতর্ক। আজও সেই তরজা অব্যাহত। দুপুর গড়াতেই সভাপতির মন্তব্যের প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের সদস্যরা। সংসদ সভাপতির পদত্যাগ দাবি করেন। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
গোটা বিতর্ক প্রসঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাসের দাবি, 'সংসদের ইতিহাসে প্রথমবার কেউ এরকম ভাল রেজাল্ট করেছে। ওঁর কথা বলার সময় আবেগের বশে বেগম রোকেয়ার কথা মনে করছিলাম, যিনি একইভাবে লেখাপড়ায় ভাল ছিলেন এবং সাধারণ ঘরানা থেকে উঠে এসেছিলেন। সেই ভিত্তিতেই এই মন্তব্য। তথ্য জানানোর সময়ে সাংবাদিকদের সুবিধার জন্যই স্রেফ তথ্য হিসেবে বিষয়টা উল্লেখ করেছি। মেয়েটি শিক্ষার রত্ন, তাঁর গৌরব যাতে সংসদ সবার মধ্যে ভাগ করে নিতে পারে, সেই অভিপ্রায় থেকেই কথাগুলো ওভাবে বলেছিলাম।'