Maharashtra News : বিধবাদের ওপর আর নিয়মের বেড়া নয়, বন্ধ বৈষম্যমূলক রীতিনীতি, শপথ নিল হাজার হাজার গ্রাম
Maharashtra Villages Abolish Discriminatory Customs Against Widows: মহারাষ্ট্রে শত শত বছর ধরে চলে আসা সংস্কারের শিকল যাচ্ছে খুলে। এক নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে মহারাষ্ট্রের গ্রামে গ্রামে।

মুম্বই : ১৮২৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে আইন করে নিষিদ্ধ করা হয় সতীদাহ প্রথা। ১৮৫৬ সালের ১৫ই জুলাই পাস হয়েছিল হিন্দু বিধবাদের পুনর্বিবাহ আইন ।এভাবেই যুগে যুগে একটা একটা করে কুসংষ্কারের প্রাচীর ভেঙেছে। যদিও প্রতিটি পদক্ষেপের পিছনেই রয়েছে বহু লড়াইয়ের ইতিহাস। অন্ধবিশ্বাসকে হারিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অদম্য সাহসের কাহিনি। এবার ইতিহাস গড়তে চলেছে মারাঠাভূমি। মহারাষ্ট্রে শত শত বছর ধরে চলে আসা সংস্কারের শিকল যাচ্ছে খুলে। এক নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে মহারাষ্ট্রের গ্রামে গ্রামে।
মহারাষ্ট্রের গ্রামীণ অঞ্চলে ধীরে ধীরে সামাজিক পরিবর্তনের জোয়ার আসতে চলেছে। ৭,০০০-এরও বেশি গ্রাম এক দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চলেছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর মহিলাদের বৈধব্যের নানা কঠিন নিয়ম মানা হত এতদিন। অনেক শুভ কাজে তাঁদের অংশগ্রহণে ছিল বাধা। এমন সাজ পোষাকেও ছিল কড়া নিয়ম। খুলে ফেলতে হত মঙ্গলসূত্র। নির্মম ভাবে মুছতে হল সিঁথির সিঁদুর। এবার বিধবাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া এই সব রীতিনীতি এবং আচার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্রের হাজার হাজার গ্রাম। তারা যৌথ ভাবে শপথ নিয়েছে, আর বিধবাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। তাঁদের সঙ্গে কোনও বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না।
মহারাষ্ট্রের ২৭,০০০ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭,৬৮৩টি গ্রামসভা করেছে ,সেখানে আর বিধবাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে না। এমন কোনও প্রথা চাপিয়ে দেওয়া হবে না, যা তাঁদের মানসিক ভাবে আঘাত করে। সম্মান নষ্ট কর। সমাজ কর্মী প্রমোদ জিনজাদে পিটিআইকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
২০২২ সালে কোলাপুর জেলার হেরওয়াদ থেকে এই পরিবর্তনের সূত্রপাত। তারাই প্রথম স্থির করে, বৈধব্য সংক্রান্ত এত নিয়ম মহিলাদের উপর চাপানো হবে না। বিধবা নারীদের মর্যাদার সাথে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই গ্রাম ২০২২ সালের মে মাসে সিদ্ধান্ত নেয়। বিধবাদের মঙ্গলসূত্র ত্যাগ করতে হবে না। সেই সঙ্গে পায়ের আঙট খুলে ফেলার মতো নিয়মও মানতে হবে না। স্বামী চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতের চুড়ি ভেঙে ফেলার নির্মম নিয়মেরও বিরোধিতা করে এই গ্রাম। সেই শুরু। তারপর গ্রামে গ্রামে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছেন বহু সমাজকর্মী। বেশ কয়েকটি গ্রামে গণপতি পূজা, হলদি-কুমকুম অনুষ্ঠান এবং পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে বিধবাদের অন্তর্ভুক্ত করা শুরু হয়েছে।
দেশে বিধবাদের সমস্যাগুলির কথা বিবেচনা করে গত বছর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি পরামর্শ দেয়। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে বিধবা মহিলাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে এবং তাদের মর্যাদা রক্ষা করার নির্দেশ দেয়। হেরওয়াদের প্রাক্তন সরপঞ্চ সুরগোন্ডা পিটিআইকে জানিয়েছেন, সেখানে গ্রামের কয়েকজন বিধবা পুনর্বিবাহ করেছেন । এভাবেই আধুনিক হোক মানসিকতা, ভেঙে পড়ুক অহেতুক সংষ্কারের বেড়া, সেটাই চাইছে মহারাষ্ট্রের বড় একটা অংশ।






















