Masoud Pezeshkian: প্রগতিশীল সমাজের সমর্থক, ইরানের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন মাসুদ, দিল্লির সঙ্গে সম্পর্কে পরিবর্তন ঘটবে কি?
Iran Presidential Elections 2024: দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মাসুদ।
নয়াদিল্লি: ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেন মাসুদ পেজেস্কিয়ান। সমাজ সংস্কারের পক্ষে সওয়াল চালিয়ে নির্বাচনে জয়ী হলেন তিনি। হারালেন কট্টরপন্থী সইজ জালিলিকে। ইরানকে প্রগতিশীল দেশ হিসেবে তুলে আনার পক্ষপাতী মাসুদ। সমাজনীতিতে সংস্কার ঘটানোর পক্ষপাতী তিনি। তাঁর আমলে ভারতের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কেরও আরও উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। (Masoud Pezeshkian)
দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মাসুদ। পেশায় কার্ডিয়াক সার্জন তিনি। ইরানের অভ্যন্তরীণ নীতি তো বটেই, আন্তর্জাতিক নীতিতেও সংশোধন ঘটানোর পক্ষে তিনি। তাই পূর্বসূরিদের কট্টরপন্থী অবস্থান থেকে তিনি সরে আসবেন বলে আশা করছেন দেশের মানুষ। তবে ইরানের রাজনীতিতে এখনও কট্টরপন্থীদের সংখ্যাই বেশি। সর্বোচ্চ শাসক আয়াতোল্লা আলি খামেনেই-এর কথাই শেষ। কিন্তু অনেক আশা নিয়েই মাসুদকে ইরানবাসী নির্বাচিত করেছেন বলে মত তাঁর অনুগামীদের। (Iran Presidential Elections 2024)
এমনিতে বরাবরই ইরানের সঙ্গে সুসম্পর্ক ভারতের। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়াও রয়েছে। মাসুদের আমলে সেই সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশাবাদী কূটনৈতিক মহল। বিশেষ কের চবাহর বন্দর নিয়ে দু'পক্ষের বোঝাপড়ায় কোনও পরিবর্তন হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চবাহার বন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই পাকিস্তানকে টপকে, আমেরিকার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই সেখানে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেছে দিল্লি।
আরও পড়ুন: UK election results 2024 : পরাজিত সুনকের দল, ক্ষমতায় লেবার, কেন রক্ষণশীলদের থেকে মুখ ফেরাল ব্রিটেন?
অপরিশোধিত তেল আমদানিতে ভারতের সবচেয়ে বড় সহযোগী ইরান। পশ্চিমি নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েও ভারতকে তেল সরবরাহ করে চলেছে তারা। কম দামে অপরিশোধিত তেল আমদানি নিয়ে ইরানের উপর নির্ভরশীল ভারতও। তবে মাসুদ সরকার আন্তর্জাতিক নীতি নিয়ে কী অবস্থান নেয়, সেদিকেও তাকিয়ে দিল্লি। কারণ ইজরায়েলের বিরোধিতা চলবে বলে আগেই জানিয়েছেন মাসুদ। গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা করলেও, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনায় অবতীর্ণ হয়নি ভারত। তাই পশ্চিম এশিয়া নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানও অনেকাংশে নির্ভর করছে মাসুদ সরকারের উপর।
পাশাপাশি, রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যে International North South Transport Corridor গড়ে তুলতে আগ্রহী দিল্লি, সেটির সংযোগস্থল হওয়ার কথা ইরানের। ফলে মাসুদ সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন ভারতের। তবে ভারতের সঙ্গে উরানের সম্পর্ক যে একই রকম থাকবে, ইতিমধ্যেই তার ইঙ্গিত মিলেছে। মাসুদ যখন একটু একটু করে জয়ী হওয়ার দিকে এগোচ্ছেন, ভারতে ইরানের রাষ্ট্রদূত ইরাজ ইলাহি বলেন, "প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা চলছে। ৭০০-র বেশি বুথে ইরানীয়রা নিজের মতামত জানাচ্ছেন। নতুন প্রেসিডেন্ট পেতে চলেছে ইরান, তাতে ইরানের বিদেশ এবং অভ্যন্তরীণ নীতিতে কোনও পরিবর্তন হবে না। বরং অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী হবে ইরান।"
গত ১৯ মে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান ইরানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি। সেই আবহেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আয়োজন হয় ইরানে। সরকারে পরিবর্তন ঘটাতে দলে দলে ইরানীয়রা ভোট দিতে ভিড় করবেন বলে মনে করা হয়েছিল গোড়ায়। কিন্তু মাত্র ৩৯.৯২ শতাংশ মানুষই বুথে গিয়ে ভোট দেন এবার, যা ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন। শনিবার সকালে ভোটগণনার পর দেখা যায়, মাসুদ ৫৩. ৭ শতাংশ মানুষের সমর্থন পেয়েছেন, জলিলি পেয়েছেন ৪৪.৩ শতাংশের সমর্থন।