এক্সপ্লোর
Advertisement
শেষজীবনে নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী করে ১৪ শতকের দিল্লির আধিভৌতিক মহলে মৃত্যু অউধের রাজপুত্রর
নয়াদিল্লি: পূর্বপুরুষরা ছিলেন অউধের নবাব। সেই বংশের শেষ বংশধর রাজপুত্র আলি রাজা (সাইরাস) প্রয়াত। তবে শেষ জীবনে নবাবি পরিবেশে নয়, কার্যত নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী করে ১৪ শতকের দিল্লির এক মহলে মৃত্যু হল নবাবের বংশধরের। প্রসঙ্গত, প্রিন্স আলি রাজাই ছিলেন নবাব বংশের শেষ বংশধর। মালচা মহলে থাকতেন রাজপুত্র। সর্দার পটেল মার্গে ঘন গাছগাছালির মধ্যে রয়েছে এই মালচা মহল।
সূত্রের দাবি, ১৯৮৫ সালের ২৮ মে, নিজের মা বেগম উইলায়াতকে নিয়ে ওই মহলে চলে আসেন রাজপুত্র। তাঁদের সঙ্গে সেদিন ছিলেন বোন রাজকুমারী সাকিনা, ১১টি ল্যাব্রাডর এবং বেশ কয়েকজন চাকর বাকর ছিল সেদিন তাঁদের সঙ্গে। তবে মাঝে কয়েকদিন তাঁরা নয়াদিল্লি স্টেশনের বিশ্রামাগারেও কাটিয়েছেন। সেই সময় এই নিয়ে লোকসভায় প্রচুর উত্তেজনা হয়। তারপর অবশ্য ভারত সরকারের থেকে তাঁরা যা চেয়েছিলেন সেটাই পেয়েছিলেন, একটি প্রাসাদ।
৫৮ বছর বয়সি রাজকুমার রাজার মৃত্যু হয় গত ২ সেপ্টেম্বর। মৃত্যুর আগে সামান্য কিছু শারীরিক অসুস্থতা ছিল প্রিন্স রাজার, জানিয়েছেন দিল্লি আর্থ স্টেশনের এক কর্মী বিজয় যাদব। ইসরো বা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গ্যানাইজেশনের দিল্লি আর্থ স্টেশনের ঠিক পাশেই রয়েছে আধি-ভৌতিক ১৪ শতকের প্রাসাদটি। এই প্রাসাদটি তৈরি করেছিলেন ফিরোজ শাহ তুঘলাক। বিজয় যাদবই পুলিশে ফোন করে রাজপুত্রর মৃত্যুর খবর দেন। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক ধরেই রাজপুত্রের কোনও সারা-শব্দ ছিল না। মহলে ঢুকে খোঁজ নিতেই অপরিচ্ছন্ন বিছানার ওপর রাজপুত্রের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন বিজয় যাদব। যেহেতু রাজপুত্রের দেহ দাবি করতে কেউ আসেননি, তাই পুলিশই গত ৫ সেপ্টেম্বর বাহাদুর শাহ জাফর মার্গে দিল্লি গেট কবরস্থানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
বিভিন্ন সূত্রের দাবি, নবাবের পরিবারের সঙ্গে মাঝেমধ্যে বিদেশ থেকে বিভিন্ন লোক আসতেন দেখা করতে। না হলে তাঁরা নিজেদের মতোই থাকতেন। কয়েক বছর আগে রাজকুমারী শাকিনা এবং কয়েকটি কুকুরের মৃত্যুর পর কার্যত একাকী জীবনই কাটাচ্ছিলেন নবাব। শুধু সন্ধেবেলা নিজের বাইকে করে গিয়ে খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে আনতেন রাজপুত্র। তার সঙ্গে নিজের থেকে গিয়ে কথা বলার সাহস কারও তেমন ছিল না। তবে মৃত্যুর দিন কয়েক আগে তিনি বদলে গিয়েছিলেন মানুষ হিসেবে। আশপাশের লোকেদের সঙ্গে কথা বলতেন. আইসক্রিম-আম খেতে চাইতেন। তবে যে মহলে তাঁরা থাকতেন সেখানে বিদ্যুত বা জল ছিল না। শুধুমাত্র টেলিফোন কানেকশনটা কোনওক্রমে পেয়েছিলেন নবাবের বংশধর। ওই মহলের ভেতরে চার থেকে পাঁচটি চেম্বার ছিল, কিন্তু তার মধ্যে কোনও দরজা বা জানলা ছিল না। রাজপুত্রের ছিল ফিলিপের একটি টেপ রেকর্ডার কাম রেডিও। তবে ইংরেজি কাগজ ও ম্যাগাজিন পড়ার অভ্যাস ছিল প্রয়াত রাজপুত্রের। ওই মহলে আসতও সেই কাগজ ও ম্যাগাজিন। আপাতত নবাব বংশের ব্যবহৃত সমস্ত জিনিসই রয়েছে পুলিশি পাহারায়, যতদিন না সরকার এগুলো নিজের হেফাজতে নিচ্ছে।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
ক্রিকেট
জেলার
জেলার
ব্যবসা-বাণিজ্যের
Advertisement