এ তো দ্বিজাতি-তত্ত্বের ছায়া! বাতিল হোক, বেঙ্গালুরু পুরসভার মুসলিমদের নামে রাস্তার নামকরণের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ তেজস্বীর
২৯ বছরের এমপির অভিমত, অ-মুসলিম দেশপ্রেমিক, নামী মানুষের অভাব নেই, যাঁদের নামে রাস্তার নামকরণ করা যায়। কমিশনারকে তিনি বলেছেন, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। অবিলম্বে তালিকাটি সংশোধন করে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার পরই যাঁদের নামে রাস্তার নতুন নামকরণ হবে, তাঁদের তালিকা তৈরি করতে হবে।
বেঙ্গালুরু: ব্রূহত বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে বা বিবিএমপি মুসলিমদের নামে তথ্য ও প্রযুক্তি নগরীর সংখ্যালঘু এলাকার কয়েকটি রাস্তার নতুন নামকরণ করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলে পুরকমিশনার এন মঞ্জুনাথকে চিঠি দিলেন বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য্য। এর পিছনে ‘দ্বিজাতি তত্ত্বের সাম্প্রদায়িক মানসিকতা’ রয়েছে বলে অভিমত জানিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের কাছে জনজীবনে পরিচিত অ-মুসলিম ব্যক্তিত্বদের নামে রাস্তার নামকরণের দাবি করেছেন তিনি। একটি কন্নড় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বেঙ্গালুরু দক্ষিণের বিজেপি এমপির অভিযোগ, বিবিএমপি-র তালিকায় শুধুই মুসলিমদের নাম আছে। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় রাস্তার নাম শুধুই মুসলিমদের নামে রাখার ভাবনার মধ্যে দ্বিজাতি তত্ত্বের সেই একই মানসিকতা ও মুসলিম লিগের হিন্দু, মুসলিমদের জন্য আলাদা ভোটের দাবির প্রতিধ্বনি রয়েছে। এটা বিপজ্জনক, এর তীব্র নিন্দা করা উচিত।
২৯ বছরের এমপির অভিমত, অ-মুসলিম দেশপ্রেমিক, নামী মানুষের অভাব নেই, যাঁদের নামে রাস্তার নামকরণ করা যায়। কমিশনারকে তিনি বলেছেন, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন। অবিলম্বে তালিকাটি সংশোধন করে জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার পরই যাঁদের নামে রাস্তার নতুন নামকরণ হবে, তাঁদের তালিকা তৈরি করতে হবে।
অবশ্য পালিকের কর্তাব্যক্তিদের মতামত পাওয়া যায়নি। পরে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তেজস্বীর দাবি, প্রবল বিক্ষোভের মুখে নামবদলের এই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠেছে বিবিএমপি। হিন্দু সমাজ সজাগ হলেই এই ধরণের বিষয় ঠেকানো যাবে বলেও দাবি তাঁর।
নামকরণ ঘিরে এধরনের বিতর্ক নতুন নয়। ২০১৪-য় ইন্দিরানগরে একটি ১০০ ফুট চওড়া রাস্তার নাম প্রখ্যাত লোক-গবেষক ডঃ এস কে করিম খানের নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিবিএমপি । ২০০৬ সালেই পুর কর্তৃপক্ষ ওই রাস্তার নামকরণ করিম খানের নামে করার প্রস্তাব পাশ করিয়েছিল। তিনি ছিলেন অজস্র লোককাহিনি, গাঁথার রচনাকার।
কিন্তু তখন বিজেপি দাবি করে, খান নয়, রাস্তার নামকরণ করা হোক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির নামে। শেষ পর্যন্ত একটি কন্নড় গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপে করিম খানের নামেই নামকরণ হয় ওই রাস্তার। সেই পুরানো বিতর্কই মনে করিয়ে দিল তেজস্বীর দাবি।