দলিত সংগঠনগুলির ডাকে মহারাষ্ট্র বনধে ছড়াল হিংসা, গাড়ি-বাস ভাঙচুর, ব্যাহত ট্রেন পরিষেবা
মুম্বই: দলিত সংগঠনের ডাকা বনধ ঘিরে বুধবার ফের উত্তপ্ত মহারাষ্ট্র। কোথাও আটকানো হয় ট্রেন। কোথাও ভাঙচুর করা হয় বাস। কোথাও আগুন লাগানো হয় গাড়ি-বাইকে। ঘটনার আঁচ পৌঁছেয় সংসদ পর্যন্ত। পরে সন্ধ্যায় বনধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। দলিত যুবকের মৃত্যু ঘিরে মঙ্গলবার থেকেই উত্তাল এই রাজ্য। বুধবার রাজ্যজুড়ে বনধের ডাক দেন বি আর অম্বেডকরের নাতি, তথা দলিত সংগঠন ভারিপ বহুজন মহাসঙ্ঘের নেতা প্রকাশ মহাজন। তা ঘিরেই এদিন উত্তেজনা চরমে পৌঁছয়। কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন এলাকা। দলিতরা এদিন চেম্বুর, ঘাটকোপর, কামরাজ নগর, ভিকরোলি, দিন্দোসি, কান্দিভালি, জোগেশ্বরী, কালানগর ও মাহিমে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ঠাণে স্টেশনে লাইনে নেমে ট্রেন আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু তাদের হঠিয়ে দেওয়া হয়। রেল সূত্রে খবর, মধ্য রেলওয়ের পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে। গোরেগাঁও-তেও রেল অবরোধের চেষ্টা হয়। মাঝরাস্তায় বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। ভিকরোলি থেকে ঘাটকোপর যাওয়ার রাস্তায় বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভের জেরে অনেক জায়গায় আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্স। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হওয়ার আশঙ্কায় মুম্বইয়ের চেম্বুর, ঘাটকোপর এবং মুলুড এলাকায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। হিংসার ঘটনার পর ভাঙচুরের পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল বাস অ্যাসোসিয়েশন আজ রাস্তায় বাস চালাতে অস্বীকার করে। যদিও সরকার স্কুল বন্ধের কোনও ঘোষণা করেনি। ডাব্বাওয়ালারাও আজ পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন। ঘটনার আঁচ পৌঁছেছে সংসদ পর্যন্ত। দলিতদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস।কংগ্রেস ভেদাভেদের রাজনীতি করছে বলে পাল্টা সরব হয়েছেন সংসদ বিষয়কমন্ত্রী। বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রের সরকার জানিয়েছে, তারা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। ইতিমধ্যেই ১৫০জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, পেশোয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের ২০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পুণের ভীমা-কোরেগাঁতে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দলিত সংগঠন। কিন্তু, মাঝপথেই সেখানে হামলার অভিযোগ ওঠে হিন্দু সংগঠনের বিরুদ্ধে। সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক দলিত যুবকের। এর পরই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকা। পরে, সন্ধ্যেবেলায় বনধ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রকাশ অম্বেডকর। তিনি দাবি করেন, রাজ্যের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ এদিন বনধে অংশগ্রহণ করেছিল। দলিতদের পাশাপাশি ওবিসি সম্প্রদায়ও এদিনের বনধে অংশ নিয়েছিল বলেও জানান তিনি। এদিকে, ৩১ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের একটি অনুষ্ঠান থেকে উস্কানিমূলক বক্তৃতা দেওয়ার অভিযোগে দলিত নেতা জিগনেশ মেভানি এবং জেনইউ-র ছাত্রনেতা উমর খালিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুণের পুলিশ।