দেশে এখন ‘সুপার এমার্জেন্সি’, নোটকাণ্ডে ফের মোদীকে নিশানা মমতার, কটাক্ষ নীতীশকেও
পটনা: নোটকাণ্ডে ফের মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পটনার জনসভায় আরজেডিকে পাশে নিয়ে কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘সুপার এমার্জেন্সি’-র সঙ্গে তুলনা টানেন। বলেন, গত ৬৯ বছর ধরে মানুষ যে স্বাধীনতা উপভোগ করছিল, এই সরকার তা ছিনিয়ে নিয়েছে। ই সরকার মানুষের থেকে রুটি, কাপড় ও বাড়ি ছিনিয়ে নিয়েছে। তিনি জানান, জরুরি অবস্থার সময়ে দেশে একটি গণ-আন্দোলন হয়েছিল। মমতার মতে, এখনকার পরিস্থিতি তার চেয়েও খারাপ। তিনি বলেন, এখন তো সুপার এমার্জেন্সি চলছে। মোট বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তিনি এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন। তৃণমূলনেত্রীর জানান, মানুষ অসুবিধে ও বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। ওরা (মোদী সরকার) দেশকে বেচে দিয়েছে। এখন রাজনৈতিক দলগুলির সোচ্চার হওয়া উচিত। মমতা বলেন, যতদিন না কেন্দ্র নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করছে, ততদিন আমি আন্দোলন চালিয়ে যাব। কেন্দ্রকে নিশানা করার সময়ে লখনউয়ে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের শাসক দল সমাজবাদী পার্টিকে পাশে পেয়েছেন। পটনায় সমর্থন পেলেন বিহারের শাসক জোটের শরিক আরজেডির। কিন্তু, পাশে পেলেন না বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের জেডিউকে। এই পরিস্থিতিতে, নীতীশের নাম না করে তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পটনার জনসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, লালুজি নে সাথ দিয়া। ইউপি-মে অখিলেশ-মুলায়মজি সাথ দিয়া। আন্ডারস্ট্যান্ডিং করলে এক সেকেন্ডে আমিও করতে পারতাম। কিন্তু, এক পাশে মোদী, আরেক পাশে যখন জনতা, তখন আমি জনতার পাশেই থাকব। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, পটনায় এসে নীতীশের সমর্থন যে মমতা পাবেন না তা প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ, নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে প্রথম থেকেই সমর্থন করছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। তাই, এমনিতে মমতার সঙ্গে সম্পর্ক ভাল হলেও, এই নোট-বাতিল ইস্যুতে মমতার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখলেন তিনি। জেডিইউয়ের কেউ না থাকলেও, বুধবার গর্দানবাগে মমতার সভা মঞ্চে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডির পক্ষ থেকে ছিলেন মন্ত্রী রঘুবংশপ্রতাপ সিংহ। এছাড়াও আরজেডির আরও তিন নেতা এ দিন মমতার সভায় যোগ দেন। ছিলেন সাংসদ পাপ্পু যাদবের জনঅধিকার পার্টির প্রতিনিধিরাও। এই সভা থেকেও নরেন্দ্র মোদীকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলনেত্রী বলেন, মোবাইল কোম্পানির সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করেছে। বিগ বাজারের বিগ বস। পেটিএম-কে এখন বলে পে পিএম। বুধবার মাসের শেষ। অনেকেই বেতন পেয়ে গিয়েছেন। মাসের শুরুতেই নানা খাতে খরচের জন্য টাকার দরকার পড়ে। কিন্তু, এখনও ব্যাঙ্ক-এটিএমের সামনে লম্বা লাইন। এই প্রসঙ্গ তুলেও এ দিন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মমতা। বলেন, বেতন হয়ে গিয়েছে। মানুষ টাকা তুলবে কীভাবে। আরও হয়রানি হবে। মমতার আরও দাবি, বিজেপিরও অনেক নেতাই নরেন্দ্র মোদীর নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন না। তাঁদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বিজেপি অবশ্য মমতার এই সব আক্রমণকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাদের দাবি, নোট বাতিলের জেরে সাময়িক সমস্যা হলেও, আখেরে লাভ হবে সাধারণ মানুষের।