মহাকাশে মানুষ পাঠানোর প্রস্তুতি ইসরোর, আগামী সপ্তাহে জিএসএলভি-মার্ক থ্রি রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ
নয়াদিল্লি: আগামী সপ্তাহে এখনও পর্যন্ত নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ রকেটের পরীক্ষা করতে চলেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরো। এই পরীক্ষা সফল হলে, অদূর ভবিষ্যতে এদেশের মাটি থেকেই নভশ্চরদের মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম হবে ভারত।
প্রায় ২০০টি পূর্ণবয়স্ক হাতির সমান ওজনের এই বিশালকায় রকেটের ফলে ভারত বিশ্বের হাতে গোনা রাষ্ট্রের তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হবে। জানা গিয়েছে, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহেই এই পরীক্ষা করা হবে।
আর এই উৎক্ষেপণ নিয়ে এখন অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় চলছে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি। জানা গিয়েছে, সেখানে বিজ্ঞানীরা প্রায় শেষ পর্যায়ের কাজ করছেন। প্রত্যেকটি বিষয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্যের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
রকেটটির পুরো নাম জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল মার্ক থ্রি (জিএসএলভি মার্ক-থ্রি)। এখনও পর্যন্ত এটিই ভারতের তৈরি সবচেয়ে ভারী রকেট। বিজ্ঞানীদের আশা, এই রকেটের সাহায্যে ভারত বহুকোটি টাকার উপগ্রহ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হবে।
ইসরোর চেয়ারম্যান এএস কিরণ কুমার বলেন, আশা করছি সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই বিশাল রকেট তার প্রথম উৎক্ষেপণেই বাজিমাত করবে। তিনি জানান, বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের আগে, অন্তত ৬-৭ বার এই রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ হবে।
এই রকেটের ক্ষমতা রয়েছে লো-আর্থ অরবিটে প্রায় ৮ টন পর্যন্ত উপগ্রহ প্রতিস্থাপন করার। তবে কিরণের আশা, ভবিষ্যতে একদিন ভারতের মাটি থেকে ভারতের রকেটে চেপে ভারতীয়রা মহাকাশে রওনা দেবেন।
তিনি জানান, কেন্দ্র যদি ইসরোকে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা) বরাদ্দে অনুমোদন দেয়, তাহলে অবিলম্বে ম্যানড-মিশন বা মহাকাশে মানুষ পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি শুরু করতে পারেন তারা।
এখানেই থামেননি কিরণ। এ-ও জানান, হতে পারে ভারতের প্রথম অভিযানে মহাকাশচারী হতে পারেন কোনও মহিলা! ইসরো সূত্রে জানানো হয়েছে, রকেটটির ওজন প্রায় ৬৪০ টন। অর্থাৎ, পুরো ভর্তি জাম্বো জেট বিমানের ৫ গুণ সমান।
এই রকেট জিওসিনক্রোনাস অরবিটে প্রায় ৪ টনের উপগ্রহ প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম। ৪৩ মিটার দৈর্ঘ্যের এই রকেট তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা।