এক্সপ্লোর
Advertisement
চরবৃত্তি: নয়াদিল্লির পাক-হাইকমিশন অফিসারকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ, গ্রেফতার ৩
নয়াদিল্লি: চরবৃত্তির দায়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নয়াদিল্লির পাকিস্তানি হাই কমিশনের অফিসারকে পরিবার নিয়ে ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ। উরি হামলা ও সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে সংঘাতের সূচনা হতে পারে এর জেরে। মেহমুদ আখতার নামে নয়াদিল্লির পাকিস্তান হাইকমিশনের ওই অফিসারের কাছ থেকে ভারতের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র মেলার পর তাঁকে অবাঞ্ছিত বলে ঘোষণা করে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে বসে নেই পাকিস্তানও। ভারতে চরবৃত্তির অভিযোগে নয়াদিল্লির পাক হাই কমিশনের ভিসা বিভাগের অফিসারকে অবাঞ্ছিত তকমা দিয়ে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চলে যেতে বলার জবাবে ইসলামাবাদও একই পদক্ষেপ করল। মেহমুদ আখতারের বহিষ্কারের বদলা নিতে ইসলামাবাদের ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মী সুরজিত্ সিংহকে পাকিস্তান ছাড়তে বলল তারাও। সুরজিতের কার্যকলাপ কূটনৈতিক রীতিনীতির পরিপন্থী বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ। মেহমুদের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির পদক্ষেপ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাক বিদেসসচিব আইজাজ আহমেদ চৌধুরি ইসলামাবাদে ভারতীয় হাই কমিশনার গৌতম বাম্বাওয়ালের কাছে সুরজিত্ সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়ে দেন, ওঁকেও পরিবার নিয়ে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে পাকিস্তান ছেড়ে চলে যেতে হবে।
ভারত মেহমুদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপনীয় তথ্য চরবৃত্তির মাধ্যমে সংগ্রহ, ভারতের চরচক্রের নেটওয়ার্ক চালানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেশ করলেও পাকিস্তানের তরফে অবশ্য সুরজিত্ সম্পর্কে বিশদ তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে সব মিলিয়ে দু দেশের মধ্যে চলতি সংঘাতের আবহ নতুন মাত্রা পেল দুপক্ষ নিজেদের মাটিতে একে অপরের হাই কমিশন কর্মীকে কাঠগড়ায় তুলে দেশ ছাড়তে বলায়।
পুলিশ জানিয়েছে, পাক হাইকমিশনের ভিসা বিভাগের অফিসার মেহমুদকে গ্রেফতার করা হলেও কূটনৈতিক রক্ষা কবচ থাকায় ছাড়া পেয়ে যান তিনি। ৩৫ বছরের মেহমুদকে ভারতে তথ্য পাচার চক্রের কিং পিন বলে ধরা হচ্ছে। তাঁকে নিয়মিত তথ্য পাচারের অভিযোগে দুজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে তিনি ভারত-পাক সীমান্তে বিএসএফ জওয়ানদের মোতায়েন সংক্রান্ত তথ্য সহ ভারতের প্রতিরক্ষা বিষয়ক নানা চাঞ্চল্যকর খবর সংগ্রহ করছিলেন। গতকাল সকাল দশটা নাগাদ তাঁকে দিল্লি চিড়িয়াখানা থেকে আটক করা হয়। তাঁর সঙ্গেই ধরা পড়ে সুভাষ জাংগির, মৌলানা রমজান নামে দুই সঙ্গীও।
তদন্তে প্রকাশ, মেহমুদ পাক সেনার বালুচ রেজিমেন্টের চর চক্রের লোক। ২০১৩ থেকে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইতে ডেপুটেশনে ছিলেন তিনি।
দিল্লি পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, এই চক্রে বিএসএফের একটি অংশও জড়িত থাকতে পারে যারা ওদের হাতে তথ্য তুলে দিয়েছে, নইলে মেহমুদ ও তার সঙ্গীদের পক্ষে এমন গোপনীয় নথি জোগাড় করা কিছুতেই সম্ভব হত না। এদিকে চর চক্রের আরেক সদস্য শোয়েইব এদিন সন্ধ্যায় রাজস্থানে ধরা পড়েছে। রাজস্থান পুলিশ তাকে দিল্লি নিয়ে আসছে। যোধপুরের পাসপোর্ট ও ভিসা এজেন্ট শোয়েইব দিল্লি চিড়িয়াখানার বৈঠকে ছিল। তবে পুলিশকে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল সে। দিল্লি পুলিশের দাবি, তথ্য পাচার চক্রে মৌলানা রমজান ও সুভাষ জাংগিরকে সামিল করেছিল শোয়েইব-ই।
গ্রেফতার হওয়া সুভাষ জাংগির, মৌলানা রমজানকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে দিল্লির এক আদালত। চর চক্রের গোটা চেহারা, নেটওয়ার্ক জানতে ওদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করা দরকার বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই মেহমুদ আখতারের ওপর নজর রাখছিল দিল্লি পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে ভারতের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছে। জানা গিয়েছে, মেহমুদ তাঁর বিভিন্ন স্থানীয় নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ভারতের প্রতিরক্ষা ও অন্য বিভিন্ন বিষয় স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ করছিল।
প্রসঙ্গত, একটি চরচক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গতবছর নভেম্বরে পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। তাদের সঙ্গে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল। গ্রেফতার সেই পাঁচ ব্যক্তির থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই নজরদারি চালানো হচ্ছিল মেহমুদ আখতারের ওপর।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
ক্রিকেট
জেলার
Advertisement