মেয়েদের ধর্ষণ করলেও তার মতো ‘ব্রহ্মজ্ঞানী’ মানুষের পাপ লাগে না, বিশ্বাস করত আসারাম!
যোধপুর: মেয়েদের ধর্ষণ করা তার মতো ‘ব্রহ্মজ্ঞানী’ মানুষের জন্য পাপ নয়! এমনটাই না কি বিশ্বাস করতেন আসারাম বাপু! আদালতে এই জবানবন্দি দিয়েছেন এক সাক্ষী।
গতকালই শেষ হয়েছে আসারাম-মামলা। পাঁচ বছর আগে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অপরাধে স্বঘোষিত ধর্মগুরুকে দোষী সাব্যস্ত করে যোধপুরের একটি আদালত। তাকে আজীবন হাজতবাসের সাজা দেওয়া হয়।
৪৫৩ পাতার রায় থেকে জানা গিয়েছে, রাহুল কে সাচার নামে আসারামের এক ভক্ত সাক্ষ্য দেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, যৌন-সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ নিতেন আসারাম।
আসারামের ঘনিষ্ঠ অনুগামী হওয়ার দরুন সাচারের অবাধ যাতায়াত ছিল আসারামের ‘কুটিয়া’-তে। জানান, ২০০৩ সালে রাজস্থানের পুষ্কর, হরিয়ানার ভিবানী এবং গুজরাতের আমদাবাদে তিনি নিজের চোখে আসারামকে মেয়েদের শ্লীলতাহানি করতে দেখেছেন।
আদালতে দেওয়া সাচারের জবানদন্দি অনুযায়ী, আসারামের সঙ্গে তিন মহিলা অনুগামী সবসময় ঘুরত। তাদের সঙ্গে নিয়ে আশ্রম পরিদর্শনে বের হতো আসারাম। কোনও মেয়েকে পছন্দ হলে, আসারাম সেই পছন্দ হওয়া মেয়েদের ওপর টর্চের আলো ফেলত। সেই অনুযায়ী, এই তিন মহিলা সহযোগী মেয়েদের নিয়ে চলে যেত আসারামের কুটিয়াতে।
সাচার জানিয়েছেন, তাঁর সন্দেহ হওয়ায় একদিন কুটিয়ার পাঁচিল টপকে তিনি দেখেন, আসারাম একটি মেয়ের শ্লীলতাহানি করছে। রাঁধুনীর মাধ্যমে আসারামকে তিনি চিঠি লেখেন। কোনও উত্তর না আসায় ফের চিঠি লেখেন। তাতেও কোনও উত্তর না আসায়, তিনি সরাসরি আসারামকে প্রশ্ন করেন, কেন এভাবে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে?
সাচারের জবানবন্দি অনুযায়ী, তখন আসারাম তাঁকে বলে, এসব করলে ‘ব্রহ্মজ্ঞানী’-দের পাপ লাগে না। একজন ‘ব্রহ্মজ্ঞানী’ হয়ে কীভাবে তার মনে এই লালসা-বাসনা থাকতে পারে প্রশ্ন করায়, আসারাম নিরাপত্তারক্ষীদেপ নির্দেশ দেয়, তাঁকে বাইরে ধাক্কা মেরে বের করে দিতে।
সাচারের দাবি, বিকৃত কাম মেটানোর জন্য বিভিন্ন যৌন উদ্দীপক ওষুধ খেত আসারাম। একইসঙ্গে আফিমও সেবন করত। আফিমের কোড ছিল ‘পঞ্চবটি’। সাচার আরও জানান, আসারামের সঙ্গে যে তিন মহিলা সহযোগী ধর্ষিতা মেয়েদের গর্ভপাতও করাত।