কাশ্মীরে অমরনাথ যাত্রীদের বাস লক্ষ্য করে গুলি জঙ্গিদের, নিহত ৭, আহত ৩২
জম্মু: জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগে অমরনাথ যাত্রীদের ওপর জঙ্গিহানা। নিহত ৭ তীর্থযাত্রী। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন মহিলা। ঘটনায় তিন পুলিশকর্মী সহ আহত আরও ৩২ জন।
কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন দুবার হামলা চালায় জঙ্গিরা। প্রথমে সওয়া ৮টা নাগাদ খানাবালের চকের কাছে এসটিএফ, এসওজি ও সিআরপিএফ-এর যৌথবাহিনী প্রহরারত চেকপয়েন্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেখানে কেউ হতাহত হননি।
হামলা চালিয়েই জঙ্গিরা সেখান থেকে পালিয়ে বাতিঙ্গুতে চলে আসে। এর পাঁচ মিনিটের মধ্যে ৮টা ২০ মিনিট নাগাদ সেখানে তীর্থযাত্রীদের বাস লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে জঙ্গিরা। সেখানেই ৭ পূন্যার্থীর মৃত্যু হয়। আহত হন আরও ৩২ জন।
এখানেই শেষ নয়। বাতেঙ্গুতে হামলা চালানোর পর ফের আরওয়ানির দিকে পালিয়ে যায় জঙ্গিরা। পথে, সিআরপিএফ শিবির লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে তারা। তবে, সেখানে কেউ হতাহত হননি।
কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর, অমরনাথ দর্শন করার পর যাত্রীরা ফিরছিলেন। সোনমার্গ থেকে সেটি আসছিল। সেই সময় বালতাল থেকে মির বাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল যাত্রীবোঝাই বাসটি।
হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছে সিআরপিএফ-এর ৪০ ও ৯০ ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা। জঙ্গিদের খোঁজে গাটা এলাকা জুড়ে চিরুনি-তল্লাশি শুরু হয়েছে। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রসঙ্গত, অমরনাথ যাত্রীদের ওপর হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন গোয়েন্দারা। রিপোর্টে বলা হয়, জঙ্গিরা প্রায় ১৫০ তীর্থযাত্রীকে টার্গেট করতে পারে। পাশাপাশি, আরও ১০০ পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীকেও টার্গেট করেছে জঙ্গিরা।
জঙ্গি কম্যান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুদিবসের জেরে কাশ্মীর উপত্যকায় আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় এদিন ত্রাল সহ তিন শহরে কারফিউ জারি করেছিল প্রশাসন। ফলে অমরনাথ যাত্রা স্থগিত রাখতে হয়েছিল।
২০০০ সালের পর এই প্রথম অমরনাথ পূন্যার্থীদের ওপর হামলা হল। যদিও, এদিনের হামলার পর নিরাপত্তার ওপর প্রশ্নচিহ্ন উঠতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, 'জিজে ০৯ জেড ৯৯৭৬' নম্বরের বাসটি গুজরাতের। যাত্রীরাও সেরাজ্যের ভলসাদ অঞ্চলের। উপরন্তু, তা অমরনাথ বোর্ডের নথিভুক্ত ছিল না। যে কারণে, তার সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষী ছিল না।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, কোনওমতেই হাইওয়ের ওপর সন্ধ্যে সাতটার পর তীর্থযাত্রীদের বাস চলা নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও কী করে রাত সওয়া ৮টা নাগাদ বাসটি রওনা দিয়েছিল, সেই প্রশ্ন উঠেছে।