এক্সপ্লোর
Advertisement
সরাসরি নাবালিকার গায়ে হাত না দিলে যৌন নিগ্রহ নয়! বম্বে হাইকোর্টের রায় স্থগিত সুপ্রিম কোর্টের, অভিযুক্তকে নোটিস
নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি রায়ে জানান, পোশাক খুললে বা পোশাকের ভেতর দিয়ে আপত্তিজনকভাবে হাত দিলেই সেটা যৌন নিগ্রহ। ত্বকের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ না হলে তা যৌন নির্যাতন বলা যাবে না।
নয়াদিল্লি: ‘সরাসরি শরীর স্পর্শ না করে’ নাবালিকার বুকে হাত দেওয়া নাবালক যৌন নিগ্রহ রোধ আইনে (পকসো) যৌন নিগ্রহ নয়, বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের এহেন রায়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে নানা মহল। ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে এ নিয়ে। বম্বে হাইকোর্ট তার রায়ে এক অভিযুক্তকে ওই যুক্তিতে রেহাই দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট আজ ওই রায়ে স্থগিতাদেশ দিল। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন সর্বোচ্চ আদালতের বেঞ্চ অভিযুক্তকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ স্থগিত রেখে তাকে ও মহারাষ্ট সরকারকে সংশ্লিষ্ট মামলায় নোটিস দিয়েছে। দু সপ্তাহে তাদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেনুগোপাল এই মামলায় প্রধান বিচারপতির সামনে বলেন, বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের রায়টি ‘গভীর উদ্বেগজনক’, ‘এক বিপজ্জনক নজির’ সৃষ্টি করবে। এই বক্তব্য গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রায়ে উল্লেখ করেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল আমাদের গোচরে এনেছেন যে, বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের ১৯ জানুয়ারির রায়ে পকসো আইনের ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে এই যুক্তিতে অভিযুক্তকে ছাড় দিয়েছে যে, সরাসরি কোনও শারীরিক ্যস্পর্শ না হওয়ায় পকসোর আওতায় তার কোনও যৌন নিগ্রহের অভিপ্রায় প্রমাণিত হয়নি। এই রায় অভূতপূর্ব, খারাপ নজির স্থাপন করতে পারে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আমরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ পিটিশন দাখিল করতে তাঁকে অনুমতি দিচ্ছি। পাশাপাশি অভিযুক্তের অব্যাহতির নির্দেশ স্থগিত রাখা হচ্ছে।
তিন মহিলা ও দি ইউথ বার অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া সংগঠন নাগপুর বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। গোটা সমাজে ও জনমানসে ওই রায়ের বিরাট প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে সওয়াল করা হয় তাদের পিটিশনে।
ত্বকের সঙ্গে সংস্পর্শ না হলে তা যৌন নির্যাতন বলে বিবেচিত হবে না। গোপনাঙ্গ স্পর্শ না করলে পকসো আইনের আওতায় পড়বে না। একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওই রায় দিয়েছিলেন বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্প গান্ডিওয়ালা। এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১২ বছরের একটি মেয়ের বুক স্পর্শ করা এবং চাপ দেওয়া সহ তার জামাকাপড় খোলার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় আদালতের দ্বারস্থ হয় নাবালিকার পরিবার। অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় দায়রা আদালত। সেই রায়েই সংশোধন ঘটিয়ে নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি রায়ে জানান, পোশাক খুললে বা পোশাকের ভেতর দিয়ে আপত্তিজনকভাবে হাত দিলেই সেটা যৌন নিগ্রহ। ত্বকের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শ না হলে তা যৌন নির্যাতন বলা যাবে না। তিনি আরও বলেন, যৌন নির্যাতন হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার জন্য পেনিট্রেশন বা শিশুর শরীরে অঙ্গ প্রবেশ হতেই হবে তা নয়। যে কোনএ ধরনের যৌন স্পর্শই অপরাধ বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু তা পোশাকের উপর দিয়ে হলে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে জানান বিচারপতি।
মামলার শুনানিতে সরকারপক্ষের বক্তব্য ও নাবালিকার সাক্ষ্যে প্রকাশ, অভিযুক্ত নাবালিকাকে কিছু খেতে দেওয়ার নাম করে নিজের বাড়ি নিয়ে গিয়ে তার বুকে চাপ দেয়, জামাকাপড় খোলার চেষ্টাও করে। কিন্তু নাগপুর বেঞ্চ বলে, অভিযুক্ত যেহেতু মেয়েটির জামাকাপড় না খুলেই তাকে জাপটে ধরেছিল, তাই সেটা যৌন নিগ্রহ নয়, বরং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ অনুচ্ছেদে এক মহিলার সম্ভ্রমহানি বলা যেতে পারে।
এই রায়ে শোরগোল পড়ে যায়। শিশুদের সরল মনের সুযোগ নিয়ে প্রায়ই বুকে হাত দেওয়া বা গোপনাঙ্গে স্পর্শ করার মতো ঘটনা ঘটে। শুধু জামা কাপড়ের ভেতর দিয়েই তা হয় এমন নয়। পোশাকের উপর দিয়ে যদি তা হয়, তাহলে কি সুবিচার মিলবে না? প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে। অনেকেই বলেন, বম্বে হাইকোর্টের এই রায়ের পর পোশাক না খোলার অজুহাতে অন্যায় বাড়বে । আর এই কারণে বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা হারাবেন অভিভাবকরাও।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
আইপিএল
নির্বাচন ২০২8
নির্বাচন ২০২8
জেলার খবর
Advertisement
for smartphones
and tablets
and tablets