মুম্বই থেকে আরও ২ সন্দেহভাজন আইএসআই এজেন্ট গ্রেফতার
মুম্বই: বুধবারের পর বৃহস্পতিবার। লখনউয়ের পর এবার মুম্বই থেকে আরও ২ সন্দেহভাজন আইএসআই-এর চর গ্রেফতার। যৌথ অভিযান চালিয়ে এই দুজনকে গ্রেফতার করেছে মহারাষ্ট্র ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা বা এটিএস।
জানা গিয়েছে, ধৃতদের একজনের নাম আলতাফ কুরেশি। তাকে গতকাল গভীর রাতে দক্ষিণ মুম্বইয়ের মসজিদ বন্দর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। দ্বিতীয় সন্দেহভাজনের নাম জাভেদ ইকবাল। এদিন সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, আদতে হাওয়ালা অপারেটর ৩৭ বছরের কুরেশির সঙ্গে পাক গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে গভীর যোগাযোগ রয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, কুরেশি হল ধৃত জাভেদের সহযোগী।
প্রসঙ্গত, গতকাল উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ থেকে আফতাব আলি নামে আরেক সন্দেহভাজন আইএসআই এজেন্টকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এটিএস। অভিযোগ, ভারতে বিভিন্ন নাশকতা ও চরবৃত্তি চালানোর জন্য আফতাবের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হাওয়ালার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা পাঠিয়েছে কুরেশি।
মহারাষ্ট্র এটিএস-এর এক আধিকারিক জানান, ধৃত কুরেশির বাড়ি থেকে একটি মোবাইল ফোন ও প্রায় সাড়ে ৭১ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, কুরেশিকে এই হাওয়ালা ব্যবসায় এনেছে এই জাভেদ ইকবালই।
দুজনকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, পাকিস্তান থেকে জাভেদের কাছে নির্দেশ আসে আফতাবের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে। জাভেদ সেই মতো কুরেশিকে সেই টাকা জমা করার নির্দেশ দেয়।
পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, জাভেদের সঙ্গে শুধু আইএসআই নয়, পাক হাই কমিশনের বহু কর্মী ও আধিকারিকের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ভারতীয় সেনার গতিবিধি সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাক হাই কমিশনের মাধ্যমে আইএসআই-এর কাছে চলে যেত।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি, উত্তরপ্রদেশ এটিএস-এর কাছে গোপন সুত্রে খবর আসে যে, আইএসআই প্রশিক্ষিত জঙ্গিরা রাজ্যে বিস্ফোরণ ছক কষছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, অযোধ্যা, বারাণসী, বৃন্দাবন এবং তাজমহল সহ রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নাশকতামূলক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জঙ্গিরা।
গোটা অপারেশনের কোডনেম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন কৃষ্ণ ইন্ডিয়া’। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু হামলা-সংক্রান্ত নয়, হিন্দু রীতি-রেওয়াজের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ কয়েকমাস ধরে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিচ্ছে জঙ্গিরা। গোয়েন্দাদের মতে, নেপাল রুট দিয়ে হিন্দু সাধু সেজে জঙ্গিরা ভারতে প্রবেশ করার পরিকল্পনা করছে।
খবর মিলতেই, নড়েচড়ে বসে পুলিশ ও গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা রিপোর্টের প্রেক্ষিতে অযোধ্যা, মথুরা, বৃন্দাবন, কাশী, বারাণসীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, রাজ্যের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থল, রেলস্টেশন ও বিমানবন্দরেও নিরাপত্তা বাড়ানো করা হয়েছে। ধর্মীয়স্থানগুলির চারপাশে পাঁচিল তোলার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
গোয়েন্দাদের হাতে কিছু সন্দেহভাজন যুবকদের কথোপকথন এসেছে। যেখানে ওই যুবকরা তেলঙ্গনায় নিষিদ্ধ সিমি সদস্য ও লখনউতে সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গি সৈফুল্লার মৃত্যু নিয়ে আলোচনা করছিল। গতমাসে সৈফুল্লা নিহত হওয়ার পর এদেশ আইএস খোরাসান মডিউলের একটি চক্র ফাঁস হয়েছে। ২০১৬ সালে, মধ্যপ্রদেশে পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় ৫ সিমি জঙ্গির।