এক্সপ্লোর
Advertisement
উত্তরাখণ্ডে দাবানল: গলে যাওয়ার সম্ভাবনা হিমবাহগুলির, আসতে পারে হড়পা বান
নয়াদিল্লি: এক বিপর্যয় এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি উত্তরাখণ্ড। তার মধ্যেই নতুন বিপর্যয়ের আশঙ্কা। দাবানলের তাপ আর কার্বনের প্রভাবে গলে যেতে পারে হিমবাহগুলি।
উত্তরাখণ্ডের কুমায়ন রেঞ্জে রয়েছে পিণ্ডারী, সুন্দরদুঙ্গা, চিপা, খাটলিং-সহ একাধিক হিমবাহ। হিমালয়ের পাদদেশ থেকে উত্তরাখণ্ড হয়ে ভারতের উত্তর অংশে বয়ে চলা নদীগুলির জলের প্রধান উত্স এই সব হিমবাহ।
নৈনিতালের আর্যভট্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট ফর ওবজার্ভেশনাল সায়েন্সেস, গোবিন্দ বল্লভ পন্থ ইন্সটিটিউট অফ হিমালয়ান এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট-এর বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, গলে যেতে পারে এই সব হিমবাহ।
কারণ, দাবানলের ফলে উত্পন্ন ধোঁয়া ও ছাইয়ের মধ্যে থাকা ব্ল্যাক কার্বন। সাধারণ ভাবে হিমবাহগুলি আয়নার মতো তাপ ও আলোকে প্রতিফলিত করে। কিন্তু তার ওপর ব্ল্যাক কার্বনের আস্তরণ পড়লে সেই আলো আর তাপ প্রতিফলিত হতে পারে না। তাপ ও আলো শোষণ করে গলতে শুরু করে হিমবাহ।
দাবানলের ফলে গত কয়েকদিনে উত্তরাখণ্ডের বনাঞ্চলের তাপমাত্রা বেশ কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, হিমবাহগুলি গলে গেলে দূষিত জলে নদীগুলি ফুলে উঠবে। রাজ্যজুড়ে দেখা দিতে পারে হড়পা বান।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, শুধু হিমবাহকে গলিয়ে দেওয়াই নয়, ব্ল্যাক কার্বন প্রভাবিত করতে পারে বর্ষাকেও। বাতাসে জমতে থাকা ব্ল্যাক কার্বন ওপরে উঠে মেঘের সঙ্গে মিশে গেলে তা আটকে দিতে পারে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতকে।
এদিকে, দাবানলের কোপে এখনও জ্বলছে উত্তরাখণ্ডের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল। বায়ুসেনার পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী বা এসডিআরএফ-এর মতো সংস্থা কাজ করলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন।
উল্টে উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন রেঞ্জ থেকে আগুন ছড়িয়েছে হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরে। জ্বলছে কাশ্মীরের রজৌরির জঙ্গল। আগুন লেগেছে হিমাচল প্রদেশের সিমলার বনাঞ্চলে।
এই পরিস্থিতিতে উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশ সরকারকে শোকজ করল ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের কাছে জানতে চায়, দাবানল নিয়ন্ত্রণে দুই সরকার এখনও পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নিয়েছে? সবাই দেখছি ভীষণ উদাসীন! এটা দেখে আমরা হতবাক!
কেন্দ্রের তরফে ট্রাইব্যুনালের কাছে জানানো হয়, আগুন নিয়ন্ত্রণে দুই সরকার সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে। এমনকী নামানো হয়েছে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার। দিনরাত কাজ করছেন অন্তত ১০ হাজার কর্মী।
কিন্তু এই উত্তরে সন্তুষ্ট হতে না পেরে উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশ সরকারকে শোকজ করে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১০ তারিখের মধ্যে হলফনামা দিয়ে দুই রাজ্য প্রশাসনকে জানাতে হবে, আগুন লাগার কারণ কী?
পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা কী পদক্ষেপ নিয়েছে? দাবানলে জঙ্গলের যে ক্ষতি হল, তা পূরণের জন্যই বা কী পরিকল্পনা নিয়েছে দুই রাজ্য?
উত্তরাখণ্ডের ১১টি জেলায় ছড়িয়েছে আগুন। মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজনের। সিমলার আশেপাশে জঙ্গলের প্রায় ১২টি জায়গাতেও দাবানল ছড়িয়েছে। বাড়ছে আতঙ্ক। অন্যান্য বছর এ সময় পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা থাকে উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশ। কিন্তু, দাবানলের কারণে এবার ভরা মরসুমেও পর্যটক শূন্য দুই রাজ্য।
দুই সরকারের পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রকের দাবি, আগামী দু’দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
খবর
ব্যবসা-বাণিজ্যের
জেলার
Advertisement