নয় রাজ্যে বার্ড ফ্লু, মানবদেহে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় সতর্কতা জারি কেন্দ্রের
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। কীভাবে মানবদেহে ছড়ায় সংক্রমণ? এই ভাইরাস পাখিদের মধ্যে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। পোল্ট্রি পাখিদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করে।
নয়াদিল্লি: রবিবারই কেন্দ্র জানিয়েছিল দেশের সাত রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে বার্ড ফ্লু। সোমবার এই সংখ্যা এসে দাঁড়াল নয়ে। যার মধ্যে দিল্লি, মুম্বই ছাড়াও রয়েছে হিমালয় প্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, কেরল। ইতিমধ্যে ৪ লক্ষ পাখির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হরিয়ানা সরকার। ভাইরাস মানবদেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। পশুপালন দফতরকে ইতিমধ্যে সমন জারি করেছে কৃষি সংক্রান্ত সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটি।
অ্যাভিয়ান ফ্লু বা বার্ড ফ্লু হয় অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থেকে। সাধারণত পাখিদের শরীরেই এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। হিমাচল প্রদেশে ভাইরাসের H5N1 স্ট্রেনের জন্যই এই ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। H5N8 এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে কেরল, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থানে। H7N1, H8N1 এর জেরেও সংক্রমণ ছড়ানোর জেরেও সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। কীভাবে মানবদেহে ছড়ায় সংক্রমণ? এই ভাইরাস পাখিদের মধ্যে দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে পারে। পোল্ট্রি পাখিদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। H5N1 স্ট্রেন বহু আগে পাখি থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯৯৬-৯৭ সালে হংকং এবং চিনে পাখি থেকে মানবদেহে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যুহারও ছিল অনেক বেশি। প্রতি ১৮ জনে মৃত্যু হয় ৬ জনের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মানুষের বার্ড ফ্লু হওয়ার ঘটনা খুবই কম। কিন্তু সংক্রমণ হলে মৃত্যুহার ৬০ শতাংশ। তবে মানবদেহে আরেক মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা নেই বললেই চলে। একমাত্র H5N1 স্ট্রেনই মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩ সালে ১৭ দেশে ৮৬২ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণের ঘটনা ঘটে। মৃত্যু হয় ৪৫৫ জনের। গত বছর চিনে শেষ মানবদেহে বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ে। তিন বছরের এক শিশুর শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া যায়।
রাজস্থানের সিরোহি এবং সুরাট জেলায় কাক এবং বন্য পাখিদের মধ্যে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা দেখা দিয়েছে। ৮৬ কাকের মৃত্যু হয়েছে হিমাচল প্রদেশের কাঙরায়। নাহান, বিলাসপুর, মান্দিতে বহু পাখির মৃত্যু হয়েছে। কেরল, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশে এই রোগ নিয়ে সতর্কতা জানি করা হয়েছে। কেরল সরকার গাইডলাইন জারি করেছে।