(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Supreme court on Vaccine Issue: যুক্তিতে সন্তুষ্ট নয়, কেন্দ্রের ভ্যাকসিন নীতি নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন শীর্ষ আলাদতের
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানতে চান, কেন্দ্র কি চায় যে, রাজ্যগুলি ভ্যাকসিনের জন্য একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামুক?
নয়াদিল্লি: করোনা ভ্যাকসিনের জন্য রাজ্য এবং পুরসভাকে কেন গ্লোবাল টেন্ডার ডাকতে হবে? সোমবার কেন্দ্রের উদ্দেশে ঠারেঠোরে সেই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ জানতে চান, কেন্দ্র কি চায় যে, রাজ্যগুলি ভ্যাকসিনের জন্য একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামুক?
কেন্দ্র দাবি করছে, এ বছরের মধ্যে সমস্ত দেশবাসীকে তারা ভ্যাকসিন দিয়ে দেবে। কেন্দ্রীয় সরকারের কো-উইন অ্যাপ অনুযায়ী, সোমবার পর্যন্ত করোনা ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ পেয়েছেন ৪ কোটি ৩৩ লক্ষের কিছু বেশি মানুষ। অর্থাৎ, ভারতের মোট জনসংখ্যা অর্থাত ১৩৪ কোটির তিন শতাংশের সামান্য বেশি।
এই পরিস্থিতিতে করোনা রোগীদের ওষুধ, অক্সিজেন এবং ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে, কেন্দ্রের ভ্যাকসিনেশন-নীতি নিয়ে একের পর এক কড়া প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার উদ্দেশে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এল এন রাও এবং বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভাটের বেঞ্চ এদিন বলেন, 'করোনা-ভ্যাকসিনের জন্য অনেক রাজ্য এবং পুরসভা নিজেরাই গ্লোবাল টেন্ডার ডাকছে। এটাই কি কেন্দ্রের নীতি? কেন্দ্র কি পুরো ব্যাপারটাই রাজ্য সরকার এবং পুরসভার ওপর ছেড়ে দিচ্ছে? তারা কি চায় যে, রাজ্যগুলি ভ্যাকসিনের জন্য একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামুক? '
এর প্রেক্ষিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, 'এটা বলা তথ্যগতভাবে ভুল হবে যে, রাজ্যগুলি একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। কিছু রাজ্য বেশি টাকা দিয়ে, বেশি ভ্যাকসিন পাচ্ছে, এমনটা একেবারেই নয়। সম্প্রতি দিল্লি এবং পঞ্জাব ভ্যাকসিন চেয়ে ফাইজার এবং মডার্নার দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু, দুই রাজ্যের আর্জিই খারিজ করে দেওয়া হয়। এই প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ আদালতও এদিন মন্তব্য করে, রাজ্যের পক্ষে বিদেশ থেকে ভ্যাকসিন জোগাড় করা বাস্তবসম্মত নয়।'
এখন করোনা ভ্যাকসিন পেতে গেলে কেন্দ্রীয় সরকারের কো-উইন ওয়েবসাইট বা অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক। এই বিষয়টি নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এদিন জানতে চায়, এই ডিজিটাল বিভাজন নিয়ে কেন্দ্র কী ভাবছে? গ্রামে প্রত্যেকের পক্ষে কো-উইন অ্যাপে রেজিস্টার করা কি সম্ভব?
উত্তরে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেন, গ্রামে কম্পিউটার সেন্টার থাকে। গ্রামবাসীদের কারও কাছে মোবাইল ফোন না থাকলে তাঁরা কম্পিউটার সেন্টারে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করাতে পারেন। কিন্তু, বিচারপতিরা এই যুক্তিতে মোটেই সন্তুষ্ট হননি। বরং তাঁরা ফের প্রশ্ন করেন, এটা কি সত্যি বাস্তবসম্মত?'
বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে আরও মন্তব্য করে, 'আপনাদের উচিত বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলা। আপনারা মুখে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা বলেন। কিন্তু, বাস্তবে কী হচ্ছে, সেটাও দেখুন। ঝাড়খণ্ডের একজন গরিব কৃষক যদি রাজস্থানে কাজ করেন, তাহলে তাঁকে ঝাড়খণ্ডে ফিরে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করে ভ্যাকসিন নিতে হবে।'
এর উত্তরে সলিসিটর জেনারেল বলেন, 'না। তিনি যেখানে থাকেন, সেখানেই রেজিস্ট্রেশন হবে। রেজিস্ট্রেশন করানো হচ্ছে এটা দেখার জন্য যে, কে একটা ডোজ পেয়েছে, কে দু’টো ডোজ।' একথা শোনার পর বিচারপতিরা ফের প্রশ্ন করেন, 'আমরা জানতে চাইছি পরিযায়ী শ্রমিকদের ভ্যাকসিনেশনের বিষয়টি আপনারা নিশ্চিত করছেন কীভাবে?'
বিচারপতিরা আরও বলেন, 'আমরা সরকার কিংবা নীতি পরিচালনা করতে চাইছি না। এই শুনানির উদ্দেশ্য একটা মঞ্চ তৈরি করা, যাতে সর্বস্তরের বক্তব্য সামনে আসে, এবং কেন্দ্র বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়।'