Rabindra Jayanti 2023: ‘হিরের দামে ঠুনকো কাচ কিনতে আমি নারাজ’, জাতীয়তাবাদ ও রবীন্দ্রনাথের ভারতভাবনা
Rabindranath Tagore: জাতীয়তাবাদ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের অবস্থান সর্বজনবিদিত। কখনওই জাতীয়তাবাদকে মানবিকতার ঊর্ধ্বে রাখেননি তিনি।
![Rabindra Jayanti 2023: ‘হিরের দামে ঠুনকো কাচ কিনতে আমি নারাজ’, জাতীয়তাবাদ ও রবীন্দ্রনাথের ভারতভাবনা on Rabindra Jayanti 2023 remembering What Rabindranath Tagore thought about nationalism Rabindra Jayanti 2023: ‘হিরের দামে ঠুনকো কাচ কিনতে আমি নারাজ’, জাতীয়তাবাদ ও রবীন্দ্রনাথের ভারতভাবনা](https://feeds.abplive.com/onecms/images/uploaded-images/2023/05/09/e596d9d8a203361c8c353314714227b61683619681592338_original.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
কলকাতা: রবীন্দ্র জয়ন্তীর গায়েও রাজনীতির রং লাগতে শুরু করেছে (Rabindra Jayanti 2023)। রাজনীতিতে তাঁকে নিয়েও হচ্ছে দড়ি টানাটানি। জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কবির স্বপ্নের ভারতের কথা উঠে আসছে ছত্রে ছত্রে। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের ভারতভাবনার সঙ্গে আজকের দিনের এই রাজনৈতিক আকচাআকচি কি আদৌ খাপ খায়? রবীন্দ্রনাথের লেখালেখি পড়লেই ছবিটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে (Rabindranath Tagore)।
জাতীয়তাবাদ নিয়ে রবীন্দ্রনাথের অবস্থান সর্বজনবিদিত (Rabindranath on Nationalism)। কিন্তু কখনওই তাকে মানবতার ঊর্ধ্বে রাখেননি তিনি। বরং ১৯০৯ সালে বন্ধু এএম বোসকে লেখা চিঠিতে নিজের ব্যক্তিগত ভাবনা-চিন্তা আরও স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ওই চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ লেখেন, 'হিরের দামে ঠুনকো কাচ কিনতে আমি নারাজ। জীবদ্দশায় মানবতার উপর দেশপ্রেমকে তাই ঠাঁই দিতে চাই না'।
'জন-গণ-মন'-তেও রবীন্দ্রনাথের সেই আদর্শই প্রতিফলিত হয়। পঞ্জাব-দ্রাবিড়-বঙ্গকে সঙ্গে নিয়েই ভারতের জয়গাথার রচনা করেন। আজ জাতীয়তাবাদের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয় তাঁর সেই সৃষ্টিকে, যার ঘোর বিরোধী ছিলেন কবিগুরু। উগ্র জাতীয়তাবাদকে দানবীয়, দুর্বুদ্ধি বলেও একাধিক বার উল্লেখ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: Rabindranath Jayanti 2023: আজ রবি-বার, কথায়-গানে কবিস্মরণ জোড়াসাঁকোয়
রবীন্দ্রনাথের এই ভাবধারাকে সম্প্রতি সংসদে তুলে ধরেন তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু। তাঁর বক্তব্য ছিল, "কখনও কখনও আশঙ্কিত হয়ে পড়ি যে, আজ যাঁরা জাতীয়তাবাদের ধারণাকে অত্যন্ত সঙ্কীর্ণ পরিসরে বেঁধে দিচ্ছেন, 'জাতীয়তাবাদ' বইয়ের কিছু বাক্য পড়ে, আগামী দিনে তাঁরা রবীন্দ্রনাথকেই না দেশদ্রোহী ঘোষণা করে দেন!"
আজীবন উগ্র জাতীয়তাবাদের সমালোচনা করে গিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। তার জন্য মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গেও মতবিরোধ দেখা দেয় তাঁর। জাতীয়তাবাদের স্তুতি জোর করে চাপিয়ে দেওয়ায় ঘোর আপত্তি ছিল রবীন্দ্রনাথের। দেশমাতৃকাকে দেবীরূপে পুজো করায় আপত্তি ছিল। তাঁর মত ছিল, দেশসেবার প্রশ্নে পিছিয়ে আসার প্রশ্নই নেই। কিন্তু পুজো-অর্চনার অধিকার ব্যক্তিগত পরিসরের মধ্যে পড়ে। জাতীয়তাবাদ কখনও বাধ্যবাধকতায় পরিণত হতে পারে না। 'ঘরে-বাইরে' উপন্যাসে নিখিলেশের চরিত্রটি সেই আঙ্গিকেই রচনা করেছিলেন তিনি।
মতবিরোধ, ভিন্ন ভাবনা পরিসরকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। মানুষের ব্যক্তিগত ভাবনা-চিন্তাকে খাঁচায় বন্দি করার বিরোধী ছিলেন তিনি। তাই পরস্পরকে অসীম শ্রদ্ধা করলেও, মহাত্মাকে সাবধান করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর যুক্তি ছিল, জাতীয়তাবাদ এবং বর্ণবাদের মধ্যেকার রেখাটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম। ১৯২১ সালের জুলাই মাসে কলকাতায় গান্ধী এলে সেই নিয়ে তর্কও বাধে দু'জনের। সঠিক অর্থে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে গেলে জাতীয়তাবাদের দাসত্ব থেকে আগে বেরনো প্রয়োজন বলে মত ছিল রবীন্দ্রনাথের।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)