(Source: DV Research)
Silver Pomfret Faces Extinction: বিলুপ্তির পথে সাধের পমফ্রেট মাছ, নির্বিচারে চলছে শিকার, দায়ী জলবায়ু পরিবর্তনও, এখনই পদক্ষেপ না করলে…
Climate Change: পশ্চিমবঙ্গ যেমন ইলিশ, চিংড়ির পীঠস্থান, তেমনই রুপোলি পমফ্রেট মহারাষ্ট্রের ‘State Fish’।

নয়াদিল্লি: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ব্যাপক হতে চলেছে বলে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। অর্থনৈতিক এবং দৈনন্দিন জীবনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেই আশঙ্কা এবার বাস্তব হয়ে ধরা দিচ্ছে। কারণ রসনাপ্রিয় মানুষ, বিশেষ করে মাছেভাতে থাকেন যাঁরা, তাঁদের পাত থেকে গায়েব হতে বসেছে রুপোলি পমফ্রেট মাছ। রুপোলি পমফ্রেট মাছ বিলুপ্তির পথে বলে জানা গেল। এর অন্যতম কারণ হল জলবায়ু পরিবর্তন। (Silver Pomfret Faces Extinction)
পশ্চিমবঙ্গ যেমন ইলিশ, চিংড়ির পীঠস্থান, তেমনই রুপোলি পমফ্রেট মহারাষ্ট্রের ‘State Fish’। অস্তিত্ব রক্ষার্থেই এই শিরোপা। অন্ধ্রপ্রদেশেও রুপোলি পমফ্রেট মাছ অত্যন্ত জনপ্রিয়। মাছেভাতে থাকা বাঙালিও সর্ষে-পমফ্রেটের অনুরাগী। কিন্তু সেই রুপোলি পমফ্রেটের অস্তিত্বই এখন সঙ্কটে। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হল? এর কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে, ১) দেদার চারা পমফ্রেট ধরে বিক্রি, ২) জলবায়ু পরিবর্তন, এবং ৩) পমফ্রেট সংরক্ষণে তৎপরতার অভাব। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পমফ্রেট বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। (Climate Change)
পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ পৃথিবীর সর্বত্রই পমফ্রেট জনপ্রিয়। বঙ্গোপসাগর, আরব সাগর থেকে ধরে এনে বাজারে বিক্রি করা হয়। কিন্তু একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অন্য দিকে মৎস্য ব্যবসায়ীদের দাপাদাপি, পমফ্রেট ধরা নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ না থাকায় মাছের অস্তিত্বে সঙ্কট দেখা দিয়েছে। উল্লেখযোগ্য হারে পমফ্রেটের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। ঢের আগেই এই বিপদের আঁচ পাওয়া গিয়েছিল। সেই মতো মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির তরফে রুপোলি পমফ্রেটকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছিল। সেই দাবি মেনে গত বছর মহারাষ্ট্র সরকার রুপোলি পমফ্রেটকে ‘State Fish’ ঘোষণা করে। মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির তরফেও একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু তাতেও পমফ্রেটের অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে। চারা অবস্থায় ধরে ফেলায়, আগের মতো বড় পমফ্রেটও আর পাওয়া যাচ্ছে না। মহারাষ্ট্রে যে হারে পমফ্রেটের উৎপাদন কমেছে, তার পরিসংখ্যানও সামনে এসেছে-
- ১৯৮০-’৮৫: গড়ে ৩৫০ গ্রাম ওজনের মাছের উৎপাদন ছিল ২০,০০০ টন।
- ১৯৯০: গড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের মাছের উৎপাদন ছিল ১৫,০০০ টন।
- ২০০০-২০১০: গড়ে ২০০ গ্রাম ওজনের মাছের উৎপাদন ছিল ১২,০০০ টন।
- ২০১০-২০২০: গড়ে ১৫০ গ্রাম ওজনের মাছের উৎপাদন ১০,০০০ টন।
ওজন অনুযায়ী পমফ্রেটকে বিভিন্ন গোত্রে ভাগ করা হয়-
- ৫০০ গ্রাম ওজন হলে Super.
- Grade 1: ৪০০-৫০০ গ্রাম
- Grade 2: ৩০০-৪০০ Grade
- Grade 3: ২০০-৩০০
- Grade 4: ১০০-২০০
কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন, নির্বিচারে চারা মাছ ধরা এবং বেআইনি মৎস্যব্যবসা পমফ্রেটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ। মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির অভিযোগ, বর্ষাকালে পমফ্রেট না ধরাই রীতি। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সেই নিয়ম মানছেন না। মাছের আকার পূর্ণতা পাওয়ার আগে, চারা অবস্থাতেই ধরে নিচ্ছেন। ফলে মাছের সংখ্যাবৃদ্ধিতেও এর প্রভাব পড়ছে।
সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনও মাছের বংশবিস্তারে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের দাবি, এতদিন যে খালগুলি পমফ্রেটের খাদ্য জুপ্ল্যাঙ্কটনের জোগান দিত, নিষ্কাশনের অভাবে সেগুলিতে বর্জ্য, নর্দমার জল এসে মিশতে শুরু করেছে। পারমাণবিক এবং তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জেরে উষ্ণ জল মিশছে সমুদ্রে। ফলে জলের অক্সিজেনে বহনের ক্ষমতাও কমছে লাগাতার।























