বিয়ে স্থগিত রেখে কৃষক আন্দোলনে সামিল পঞ্জাবের যুবক!
আবু ধাবিতে একটি প্লাম্বার কোম্পানিতে কাজ করেন তিনি। পরিবারের ইচ্ছা ছিল, এই ছুটিতেই যেন বিয়ে সেরে ফেলে ছেলে। কিন্তু বাড়িতে মাত্র দুদিন থেকেই দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে চলে যান তিনি। তাঁর কথায়, বিয়ে অপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু কৃষি আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন করা এই সময় খুব জরুরি।
চন্ডীগড়: চাকরি সূত্রে ছিলেন আরব আমির শাহিতে। বিয়ে করার জন্যই ফিরেছিলেন দেশে। কিন্তু কৃষক আন্দোলনের জন্য পিছিয়ে দিলেন বিয়ে! তিনি পঞ্জাবের বাসিন্দা সতনাম সিংহ। গত এক মাস ধরে চলা কৃষক আন্দোলনে সামিল হয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, গত ২৯ নভেম্বর বাড়ি ফেরেন সতনাম। দুমাসের জন্য বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। বিয়ে করে আমির শাহিতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাতিল করেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের থেকে সিঙ্ঘু সীমান্তে কৃষক আন্দোলনের বিষয় শুনে সেখানে ছুটে যান তিনি।
আবু ধাবিতে একটি প্লাম্বার কোম্পানিতে কাজ করেন তিনি। পরিবারের ইচ্ছা ছিল, এই ছুটিতেই যেন বিয়ে সেরে ফেলে ছেলে। কিন্তু বাড়িতে মাত্র দুদিন থেকেই দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে চলে যান তিনি। তাঁর কথায়, বিয়ে অপেক্ষা করতে পারে, কিন্তু কৃষি আইনের বিরোধিতায় আন্দোলন করা এই সময় খুব জরুরি। তিনি বলেন, আমার মায়ের বয়স ৭০ বছর। তিনিও আন্দোলনে সামিল হতে চেয়েছিলেন। সুখা সিংহ নামে সতনাম সিংহের এক বন্ধু বিশেষভাবে সক্ষম। পেশায় কৃষক ওই ব্যক্তিও আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। সতনাম জানিয়েছেন, যতদিন না দাবি মানা হচ্ছে ততদিন আন্দোলন করব আমরা। সতনামের সাফ কথা, চাকুরিজীবী হওয়ার আগে আমি একজন কৃষক। তাই কৃষিজমি বাঁচানো আমার প্রথম কাজ।
উল্লেখ্য, চলতি কৃষক আন্দোলনে বিশেষ নজির রেখেছেন বিভিন্ন মানুষ। বাড়ির ছেলের বিয়েতে কোনও উপহার নেবে না বলে জানিয়েছিল পঞ্জাবের শ্রী মুক্তাসার সাহিবের একটি পরিবার। বন্ধু, আত্মীয় সহ নিমন্ত্রিতদের তাঁরা বলেন, কৃষকদের টাকা দিতে বলেছিলেন তাঁরা। সেই টাকা তুলে দেওয়া হয় আন্দোলনরত কৃষকদের হাতে। বিয়ের অনুষ্ঠানমঞ্চে রেখেছিলেন একটি ডোনেশন বক্স। সেখানেই কৃষকদের জন্য টাকা দিতে বলেন পরিবারের সদস্যরা। সিংহ পরিবারের এই উদ্যোগে সাড়া দেন বন্ধু থেকে আত্মীয়রা। পাত্র অভিজিত সিংহ বলেন, এই লড়াইটা শুধু কৃষকদের নয়। এটা আমাদের যৌথ লড়াই। প্রত্যেকের উচিত কৃষকদের পাশে থাকা। আমি দেশের যুবক-যুবতীদের বলতে চাই, সমাজের জন্য কিছু করো, কৃষকদের পাশে দাঁড়াও।