INS Tushil: যুদ্ধজাহাজ তৈরি রাশিয়ায়, ইঞ্জিন দিল ইউক্রেন, যুদ্ধ চলাকালীনও 'বন্ধু' ভারতের জন্য এগিয়ে এল রাশিয়া ও ইউক্রেন
Indian Navy: ২০১৬ সালে INS Tushil এবং আরও একটি যুদ্ধজাহাজ তৈরিতে রাশিয়াকে বরাত দেয় ভারত।
নয়াদিল্লি: একটানা যুদ্ধ চলছে গত দু'বছর ধরে। সেই আবহেও একই প্রকল্পে এগিয়ে এল রাশিয়া এবং ইউক্রেন। ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য যুদ্ধজাহাজ তৈরি করে দিল তারা। সোমবার সেই যুদ্ধজাহাজ তুলে দেওয়া হল ভারতের হাতে। সোমবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় সেটি গ্রহণ করলেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। পৃথক ভাবে কাজ করলেও, 'বন্ধু' ভারতের জন্য INS Tushil যুদ্ধজাহাজ তৈরি করতে সহযোগিতাপূর্ণ অবস্থানেই দেখা গেল দুই 'চিরশত্রু' দেশ। (INS Tushil)
২০১৬ সালে INS Tushil এবং আরও একটি যুদ্ধজাহাজ তৈরিতে রাশিয়াকে বরাত দেয় ভারত। INS Tushil আসলে Krivak 3 শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ, যা আসলে একটি Stealth Missile Frigate, অর্থাৎ এই যুদ্ধজাহাজ শত্রুপক্ষের রেডারে ধরা পড়ে না, একটানা দীর্ঘ ক্ষণ শ্তরুপক্ষের মোকাবিলা করে যেতে পারে। বর্তমানে ভারতের হাতে এমন ছয়টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে, যার সবক'টিই রাশিয়ায় তৈরি। (Indian Navy)
ওই দু'টি যুদ্ধজাহাজ ছাড়াও, ভারতেও এমন যুদ্ধজাহাজ তৈরি হচ্ছে। গোয়ার শিপইয়ার্ডে সেগুলির নির্মাণ হবে। কিন্তু এখানেই আসল তথ্য লুকিয়ে। রাশিয়া ভারতের জন্য ওই যুদ্ধজাহাজ তৈরি করলেও, যুদ্ধজাহাজটির মূল ইঞ্জিন তৈরি করেছে ইউক্রেন। রাশিয়া এবং ইউক্রেন, দুই দেশের সঙ্গেই সুসম্পর্ক রয়েছে। তাই যুদ্ধ চালাকালীনও ওই প্রকল্প থেকে পিছু হটল না দুই দেশের কেউই।
#INSTushil, The Protective Shield commissioned in the presence of #RakshaMantri, Shri @rajnathsingh at Kaliningrad #Russia today!#INSTushil joins the proud lineage of Talwar and Teg class frigates, a symbol of true friendship and growing technological cooperation between #India… https://t.co/29FZac2yDL pic.twitter.com/4sTN9zBqXg
— SpokespersonNavy (@indiannavy) December 9, 2024
ভারতীয় নৌবাহিনীতে যে যুদ্ধজাহাজগুলি রয়েছে, তার অধিকাংশই ইউক্রেনীয় সংস্থা Zorya-Mashproekt সংস্থার তৈরি গ্যাস টার্বাইন ইঞ্জিন। Zorya-Mashproekt পৃথিবীর প্রথম সারির গ্যাস টার্বাইন ইঞ্জিন প্রস্তুতকারক সংস্থা। সেরা জিনিস কিনতেই ইউক্রেনীয় সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়। যুদ্ধ যখন চরমে, সেই সময়ই বরাত দেওয়া হয়। সেই অবস্থাতেই দুই দেশই ভারতের জন্য একই প্রকল্পে কাজ করে গিয়েছে।
শুধু একটিই সমস্যা ছিল, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে মুখ দেখাদেখি নেই রাশিয়া এবং ইউক্রেনের। অন্য সময় হলে কিভ থেকে সরাসরি মস্কোয় ইঞ্জিন পৌঁছে যেত। কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পরস্পরের উঠোন মাড়াচ্ছে না দুই দেশই। তাই ভারতকে আলাদা করে ইউক্রেনের তৈরি ইঞ্জিন সংগ্রহ করতে হয়। সেটি কিভ থেকে মস্কোয় পৌঁছেও দিতে হয় ভারতকে। তবেই রাশিয়ার তৈরি যুদ্ধজাহাজে ইউক্রেনের তৈরি ইঞ্জিনটি বসানো সম্ভব হয়। এর ফলে সময়ও লাগল বেশ খানিকটা।
INS Tushil ভারতীয় নৌবাহিনীর সাম্প্রতিকতম অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ। শত্রুপক্ষের রেডারে ধরা পড়বে না সেটা। পাশাপাশি, ওই জাহাজ থেতে শত্রুপক্ষের উপর অব্যর্থ হামলাও চালানো যাবে। যুদ্ধজাহাজের নাম INS Tushil রাখা হয়েছে, যার অর্থ রক্ষাকবচ। যুদ্ধজাহাজের মাথায় রয়েছে 'অভেদ্য কবচম'। যুদ্ধজাহাজটির তিন মন্ত্র, 'নির্ভয়', 'অভেদ্য', 'বলশীল'। জলসীমায় দেশের নিরাপত্তা সুনিশ্চতকরণে ভারতীয় নৌবাহিনী যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তার প্রতীক INS Tushil.
Project 11356 প্রকল্পের আওতায় INS Tushil যুদ্ধজাহাজ এবং ইঞ্জিন তৈরির বরাত নেয় রাশিয়া এবং ইউক্রেন। ১৯৯৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এমন ছয়টি জাহাজ ভারতের হাতে তুলে দেয় রাশিয়া। INS Tushil সেই তালিকায় সপ্তম সংযোজন। এটি একটি ১২৫ মিটার দীর্ঘ যুদ্ধজাহাজ, ওজন প্রায় ৩৯০০ টন। সমুদ্রে মহড়াও হয়ে গিয়েছে যুদ্ধজাহাজটির। ঘণ্টায় গতিবেগ প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। যুদ্ধের উপযুক্ত করেই যুদ্ধজাহাজটিকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে রাশিয়া।