Russia-Ukraine War: এক বাণে ছারখার একাধিক জায়গা, ছ'দশক আগে তৈরি, ইউক্রেনে ICBM বর্ষণ করল রাশিয়া
Russia Fires ICBM on Ukraine: ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে Inter-Continental Ballistic Missile (ICBM) ছুড়েছে মস্কো।
নয়াদিল্লি: পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগ নীতিতে পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। এবার ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া। রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন সরকারের এই পদক্ষেপে অশনি সঙ্কেত দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের ১০০০ দিন ব্যাপী যুদ্ধ আরও বিধ্বংসী আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছে তারা। ইউক্রেন এবং তাদের সহযোগী আমেরিকাকে বার্তা দিতেই শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। (Russia-Ukraine War)
ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে Inter-Continental Ballistic Missile (ICBM) ছুড়েছে মস্কো। এটি একটি আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র। প্রায় ছ'দশক আগে ওই হাতিয়ার তৈরি করলেও, আগে কখনও প্রয়োগ করেনি রুশ সেনা। ইউক্রেনের উপর হামলা চালাতে Multiple Independently Targetable Re-Entry Vehicle (MIRV) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রে, যার মাধ্যমে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েই ইউক্রেনের একাধিক জায়গায় হামলা চালানো সম্ভব। (Russia Fires ICBM on Ukraine)
BREAKING: Russia Launches Non-Nuclear Intercontinental Ballistic Missile Against Ukraine
— World War 3 (@Worldwar_3_) November 21, 2024
In a shocking escalation, Russia has reportedly deployed a non-nuclear Intercontinental Ballistic Missile (ICBM) against Ukraine, targeting the city of Dnipro. This marks the first use of… pic.twitter.com/w5xCMCH91l
ইউক্রেনকে লক্ষ্য করে রাশিয়া যে ICBM ছুড়েছে, তার পাল্লা ৫৫০০ কিলোমিটারের বেশি। তাতে চাপিয়ে পরমাণু বোমা, রাসায়নিক বোমা, এমনকি জৈব অস্ত্রের ওয়ারহেডও নিক্ষেপ করা সম্ভব। আভার সাধারণ ওয়ারহেডও ছোড়া যায়। ইউক্রেনে হামলা চালাতে RS-26 Rubezh ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রই ব্যবহার করেছে রাশিয়া। আস্ত্রাকান থেকে ১০০০ কিলোমিটার দূরে ইউক্রেনের নিপ্রোতে আঘাত হানে ওই ক্ষেপণাস্ত্র।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে একাধিক ওয়ারহেড আছড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে ইউক্রেনে। রাশিয়ার তরফে এ নিয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি যদিও, তবে দেশের মাটিতে ICBM আছড়ে পড়েছে বলে মেনে নিয়েছে কিভ। সম্প্রতি আমেরিকার দেওয়া অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়ার উপর প্রয়োগ করে ইউক্রেন। এর পরই শত্রুপক্ষের উপর পরমাণু অস্ত্র প্রয়োগের বিধি শিথিল করেন পুতিন। বলা হয়, পরমাণু শক্তিধর অন্য রাষ্ট্রের সহযোগিতায় কোনও পরমাণু শক্তিহীন রাষ্ট্র যদি রাশিয়ার উপর হামলা চালায়, সেক্ষেত্রে ওই আক্রমণকে যৌথ আক্রমণ হিসেবে দেখা হবে। আর তার পরই এই আক্রমণ।
From this video of last night’s Russian it seems HIGHLY LIKELY that Russia did in fact use an RS-26 ICBM without a nuclear payload to strike Dnipro.
— Oliver Alexander (@OAlexanderDK) November 21, 2024
The video shows what appear to be MIRV impacts that are too simultaneous to be multiple independent ballistic missiles. pic.twitter.com/DIwGVLQPlo
ইউক্রেনে হামলা চালাতে যে ICBM ক্ষেপণাস্ত্র এবং MIRV প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে রাশিয়া, শ্ত্রুপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। ২০১১ সালে MIRV প্রযুক্তি গড়ে তোলে রাশিয়া, ২০১২ সালে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সফল হয়। উৎক্ষেপণস্থল থেকে ৫,৮০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এই প্রযুক্তি। উৎক্ষেপণের সঙ্গে সঙ্গেই ক্ষেপণাস্ত্রে জ্বালানি ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। জ্বালানির মিশ্রণ এবং অক্সিডাইজার ব্যবহার করে রবারের মতো পদার্থ তৈরি করে, তা মুড়ে রাখা হয় ধাতব আবরণে। একবার জ্বলতে শুরু করলে জ্বালানিতে থাকা অক্সিজেন প্রভূত শক্তি উৎপন্ন করে, তাতেই মাটি ছেড়ে দ্রুত গতিতে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যায় ক্ষেপণাস্ত্রটি। ৪০০০ কিলোমিটার দূরত্ব পেরনোর পর পূর্ণশক্তি ধারণ করে। ICBM, MIRV-র সাহায্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেই একাধিক জায়গায় আঘাত হানা সম্ভব। এমনকি দুই লক্ষ্যবস্তুর মাঝে যতি ১৫০০ কিলোমিটারের ব্যবধান থাকে, তাও নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানে। ইউক্রেনের নিপ্রোয় কমপক্ষে ছ'টি ওয়ারহেড আছড়ে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আমেরিকাই প্রথম MIRV প্রযুক্তি তৈরি করে। ১৯৭০ সালে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে রাশিয়ায় (তদানীন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন)। ১৯৭১ সালে সাবমেরিন থেকেও হামলা চালানো হয় সেখানে। এর পর রাশিয়া MIRV প্রযুক্তি সম্পন্ন ICBM এবং SLBM ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে। দুই দেশকে সংযত রাখতে সেই সময় Intermediate-Range Nuclear Forces (INF) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির আওতায় ৫০০ থেকে ৫৫০০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম পরমাণু এবং ভূমি থেকে আকাশে, জাহাজ থেকে আকাশে ছোড়ার ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সম্মত হয়। সবমিলিয়ে ২৬৯২টি স্বল্প, মাঝারি এবং দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্র ধ্বংস করে তারা। ২০১৯ সালে ওই চুক্তি থেকে নাম তুলে নেয় আমেরিকা। বর্তমানে ওই চুক্তির অস্তিত্ব নেই আর। ২০২৪ সালে MIRV প্রযুক্তি সম্পন্ন Agni-5 ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা করে ভারতও।