Saudi Arabia Swimwear Fashion Show: এই প্রথম স্নানপোশাকে ব়্যাম্পে হাঁটলেন মডেলরা, আরও এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত সৌদি আরবে
Saudi Arabia Reforms: শুক্রবার সৌদিতে Red Sea Fashion Week-এর দ্বিতীয় দিন ছিল, আর সেখানেই কার্যত বিপ্লব ঘটে গিয়েছে।
রিয়াধ: এক এক করে রক্ষণশীলতার বেড়াজাল ভেঙে বেরোচ্ছে সৌদি আরব। মহিলাদের পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে বিধিনিষেধও উঠছে ধাপে ধাপে। সেই আবহেই এবার আক্ষরিক অর্থেই 'ঐতিহাসিক' মুহূর্তের সাক্ষী রইল গোটা বিশ্ব। এই প্রথম দেশে স্নানপোশাক পরিহিত নারীদের নিয়ে ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন হল। একদশকের কম সময় আগে পর্যন্তও সৌদি মহিলাদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকে রাখার নিয়ম ছিল। সেই গোঁড়ামি কাটিয়ে, ব্যক্তি স্বাধীনতার সমর্থনে এতদূর এগনোয় প্রশংসা কুড়োছে সৌদি আরব। (Saudi Arabia Swimwear Fashion Show)
শুক্রবার সৌদিতে Red Sea Fashion Week-এর দ্বিতীয় দিন ছিল, আর সেখানেই কার্যত বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। সেন্ট রেজিস রেড সি রিসর্টের সুইমিং পুলের ধারে আয়োজিত ওই ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন হয়। সেখানে মরক্কোর ডিজাইনার ইয়াসমিনা কাঞ্জলের তৈরি স্নানপোশাকে একে একে হেঁটে যান তন্বী মডেলরা। এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। (Saudi Arabia Reforms)
শুক্রবার যে মডেলরা স্নানপোশাক পরে ফ্যাশন শোয়ে হাঁটেন, তাঁদের পরনে ছিল মূলত ওয়ান পিস। লাল, ধূসর, নীল, সবুজ, কমলা, গোলাপি রঙের স্নানপোশাক পরে হাঁটতে দেখা যায় তাঁদের। মডেলদের কারও কাঁধ ছিল উন্মুক্ত, কেউ কেউ নিম্নাঙ্গে সারং বেঁধেছিলেন, কেউ আবার বাঁধেননি। কারও কারও শরীরের মধ্যভাগও ছিল অর্ধেক উন্মুক্ত। স্নানপোশাক পরলেও, মাথা ঢেকেও রেখেছিলেন কেউ কেউ।
Saudi Arabia held its first fashion show featuring swimsuit models on Friday, an envelope-pushing step in a country where less than a decade ago women were required to wear body-covering abaya robeshttps://t.co/TV1ExA6dRG
— AFP News Agency (@AFP) May 17, 2024
সৌদির মাটিতে প্রথম বার স্নানপোশাক পরিহিত মডেলদের হাঁটানো নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ইয়াসমিনাও। সংবাদ সংস্থা AFP-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "অবশ্য়ই এই দেশ অত্যন্ত রক্ষণশীল। স্নানপোশাকের ফ্যাশন শো যে ঐতিহাসিক হতে চলেছে, তা এখানে পা রেখেই বুঝতে পারি। রক্ষণশীল সংস্কৃতির কথা মাথায় রেখে আমরাও রুচিশীল স্নানপোশাকের সমাহার তুলে ধরেছি, যাতে আরব দুনিয়ার জন্য উপযুক্ত। এই ফ্যাশন শোয়ে অংশ নিতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি।"
যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের হাত ধরে, ২০৩০ সালের মধ্যে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সংস্কারের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে সৌদি আরবে। যে রিসর্টে এই ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন হয়, তা-ও ভবিষ্যৎমুখী পরিকল্পনারই অংশ। গোটা পৃথিবী থেকে পর্যটকরা সেখানে ভিড় করেন। ২০১৭ সালে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষিত হওয়ার পরই সলমন একাধিক সামাজিক সংস্কার ঘটিয়েছেন দেশে।
সৌদি আরবে একসময় ধর্মীয় পুলিশের দাপট ছিল। শপিং মহল থেকে মানুষজনকে কার্যত ঘাড় ধরে বের করে মসজিদে পাঠাত ওই পুলিশবাহিনী। সলমন সক্রিয় ভূমিকায় উঠে আসার পর সৌদিতে সেই ধর্মীয় পুলিশ এই মুহূর্তে কার্যতই নিষ্ক্রিয়। দেশে নতুন করে সিনেমা হলগুলিকে সাজানো থেকে সব লিঙ্গের মানুষের জন্য মিউজিক ফেস্টিভ্যালের আয়োজন, সবেতেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন সলমন। এমনকি ধর্মগুরুদের চোখরাঙানি সত্ত্বেও একের পর এক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন সলমন। ২০১৭ সালে রাজা সলমন মহিলাদের গাড়ি চালানোর অধিকারও প্রদান করেন। সমালোচকদের মতে, গোঁড়া, ধর্মীয় কট্টরপন্থী হিসেবে এতদিন যে পরিচিতি ছিল, সেই ভাবমূর্তি ঝেড়ে ফেলতেই একের পর এক সংস্কার ঘটানো হচ্ছে সৌদিতে।