(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Child Trafficking Case: শিশু পাচার কাণ্ডে বাঁকুড়ায় গ্রেফতার স্কুলের অধ্যক্ষ ও শিক্ষিকা
শিশু পাচার কাণ্ডে বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকায় থাকা জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে। একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ওই স্কুলেরই আরেক শিক্ষিকা।
পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: শিশু পাচার কান্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকার জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে। একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ওই স্কুলেরই আরেক শিক্ষিকা। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে শিশুদের কিনে রাজস্থান সহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। গতকাল দুটি শিশুকে পাচার করার সময় কেন্দ্রীয় সরকারি ওই বিদ্যালয়ের সামনে এলাকার মানুষের কাছে হাতে নাতে ধরা পড়ে যান ওই অধ্যক্ষ। এরপর কোনওরকমে অধ্যক্ষ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রে জড়িত সন্দেহে তিন মহিলা সহ আট জনকে গ্রেফতার করে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে পাঁচটি শিশুও। আজ ধৃতদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে তোলা হবে।
গতকাল বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকায় দুই শিশুকে জোর করে একটি মারুতি ভ্যানে তোলার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া। বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয়দের। এরপরই এলাকার মানুষ ওই গাড়িটিকে ঘিরে রাখলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া। মারুতি ভ্যান থেকে উদ্ধার করা হয় চার শিশু সহ দুই মহিলাকে। পরে অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে দুর্গাপুরের মেনগেট ও কাদারোড এলাকা থেকে শিশুদের কিনে এনে রাজস্থান সহ বিভিন্ন জায়গায় পাচার করার পরিকল্পনা ছিল অধ্যক্ষর। এজন্য শিশুদের মা কে দেওয়া হয়েছিল লক্ষাধিক টাকাও।
সপ্তাহ খানেক আগে এই ভাবেই ন'মাসের একটি শিশুকে কাদারোড এলাকা থেকে এনে অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া জহর নবোদয় স্কুলেরই সুষমা শর্মা নামের এক নিঃসন্তান শিক্ষিকাকে বিক্রি করেছিলেন বলে জানতে পারে পুলিশ। অন্য দুটি শিশু সন্তানকেও একই ভাবে বিক্রি করার জন্য সম্প্রতি স্কুল চত্বরে থাকা অধ্যক্ষর কোয়ার্টারে এনে রাখা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচ জন শিশুকে উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রির উদ্যেশ্যেই এই চক্রের জাল বিছিয়েছিল জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কমল কুমার রাজোরিয়া।
শিশুগুলিকে যৌন হেনস্থা করা হত কিনা তা জানতে উদ্ধার হওয়া পাঁচ শিশুর মেডিক্যাল পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ও একজন শিক্ষিকা সহ মোট আট জনকে গ্রেফতার করেছে। আজ তাঁদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে পাঠানো হচ্ছে। এই চক্রে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের নামজাদা ওই স্কুলের অধ্যক্ষর নাম যুক্ত হওয়ায় তাঁর কঠোর শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার মানুষ।